সম্প্রতি পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বারবার প্রশ্নফাঁসের এসব অভিযোগ নিয়ে সরকারকে বেশ বেকায়দায় পড়তে হয়েছে।
তিনি বলেন, ফেসবুকে এসব প্রশ্ন দেয়াতে কেউ লাভবান হচ্ছে না। তবে এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘আজকালকার দিনে অপরাধীরা নানা ধরনের পথ বের করে ফেলছে। তাই ইচ্ছে করলেই এটা বন্ধ করা যাচ্ছে না। প্রশ্নপত্র প্রচার করার ক্ষেত্রে জেনেশুনেই তারা ফেসবুক ব্যবহার করছে।’
গত বছর এইচএসসি পরীক্ষার ইংরেজি প্রশ্নফাঁস হওয়ার ব্যাপারটি স্বীকার করে মন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ যেমন উদ্বিগ্ন, সরকারও এতে উদ্বিগ্ন।’
প্রশ্নফাঁস রোধে এখন কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী। প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন নুরুল ইসলাম নাহিদ।
তবে ভবিষ্যতে আর প্রশ্ন ফাঁস হবে না বলে নিশ্চয়তা দিতে চাইলেও অপরাধ পুরোপুরি বন্ধ করা যায় না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
তবে এ ব্যাপারে যা যা করা দরকার তাই করা হবে বলে এ সময় আশ্বস্ত করেছেন শিক্ষামন্ত্রী।
প্রশ্নফাঁস বন্ধে শক্ত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি
বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরই একজন নেতা মুহাম্মদ ফারুক খান বলেছেন, বিষয়টিতে সরকারের আরো বেশি পদক্ষেপ নেয়া উচিত ।
ঢাকায় বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপের একই অনুষ্ঠানে বিএনপির একজন নেতা মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেছেন, জড়িতদের শাস্তি হচ্ছে না বলেই প্রশ্নপত্র ফাঁস থামানো যাচ্ছে না।
বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি ব্যাপক সমালোচনার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সংলাপে প্রথমেই বিষয়টি আলোচনায় আসে। একজন দর্শক প্রশ্ন তোলেন এটি কিভাবে বন্ধ করা যাবে?
আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান স্বীকার করেন, এজন্য সরকারের দিকে থেকে আরো বেশি পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘এটা সত্যি যে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে আমাদের ছাত্রদের মধ্যে একটা মনস্তাত্ত্বিক চাপ পড়ছে এবং এতে দেশ ও জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আজকে আমাদের সরকার, দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে। আমার মনে হয় সরকারি প্রেসের জায়গাটায় আরো বেশি তৎপর হওয়া দরকার যাতে এখান থেকে প্রশ্নফাঁস না হয়।’
অনুষ্ঠানের আরেকজন প্যানেলিস্ট বিএনপি নেতা মীর মো. নাসির উদ্দিন মনে করেন, জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি না হবার কারণেই এ ধরনের ঘটনা থামানো যাচ্ছে না।
প্যানেলিস্টদের আরেকজন গবেষক নাজনীন আহমেদ মনে করেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির বিষয়টি তার চোখে পড়ছে না। অনুষ্ঠানে একজন দর্শকও মন্তব্য করেন সরকার বিষয়টিতে ব্যবস্থা নিতে আগ্রহী নয়।