বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে ভারত সম্পূর্ণ প্রস্তত। এখন বাংলাদেশকেই এগিয়ে আসতে হবে। আর এতে তারাই লাভবান হবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ এমন কথা বলেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘বংলাদেশের সঙ্গে ভারত সরকার বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি করার জন্য সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। এখন শুধুমাত্র বাংলাদেশ সরকারকে আন্তরিকতার সাথে এগিয়ে আসতে হবে। উভয় দেশের যোগাযোগ বৃদ্ধি পেলে বাংলাদেশই আর্থিকভাবে বেশি লাভবান হবে।’
বুধবার সকালে চট্টগ্রামের একটি হোটেলে চট্টগ্রাম চেম্বার ও ভারতীয় দূতাবাস আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-ভারত যোগাযোগ : সম্ভাবনা ও সমস্যা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি একথা বলেন।
ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ‘আমি দুই বছর আগেও একই হলে একই বিষয় নিয়ে একটি সেমিনারে বক্তব্য রেখেছিলাম। ঠিক আজকেও একই বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখছি। তবে এই দুই বছরের মধ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কসহ অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়েছে।’
মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা স্মরণ করে দিয়ে শরণ বলেন, ‘আমরা একাত্তর সাল থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে পথ চলছি। আমাদের মাঝে সর্ম্পকে এখনো কিছু জটিলতা রয়েছে। তবে সব সমস্যা ধীরে ধীরে সমাধান হবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সাথে ভারতে বাণিজ্য ঘাটতি মেটাতে ব্যবসায়ীদের আরো উদ্যোগ নিতে হবে। বাংলাদেশ চীনসহ বিভিন্ন দেশের সাথে যে রপ্তানি বাণিজ্য করছে তার চেয়েও বেশি করতে পারবে শুধুমাত্র ভারতের সেভেন সিস্টারের সাথে বাণিজ্য করে। এর ফলে অর্থনৈতিকভাবেও লাভবান হবে বাংলাদেশ। এজন্য প্রয়োজন দু’দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার অবকাঠামোগত উন্নয়ন। বাংলাদেশের সাথে সড়ক, রেল যোগাযোগসহ সব ধরনের যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে ভারত সরকার সব সময় প্রস্তুত রয়েছে। এখন শুধু বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সকলেই ভারত-বাংলাদেশ যোগাযোগ বৃদ্ধির কথা বলছেন। সব যোগাযোগ বাড়ানোর আগে আমাদের মনের যোগাযোগ বাড়াতে হবে। সরকারের সাথে সরকারের, জনগণের সাথে জনগণের মনের যোগাযোগ বাড়াতে হবে।’
হাইকমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে আজকের সেমিনারে যেসব প্রস্তুাব উপস্থাপন করা হয়েছে তার বেশিরভাগের সাথে আমি একমত। এরমধ্যে কিছু কাজ ভারত সরকার ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে। কিছু প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আর কিছু কাজ করতে উভয় দেশকে সম্মত হতে হবে। এখন দু’দেশকেই এই যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে একসাথে কাজ করতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের মধ্যে অমীমাংসিত সীমান্ত ইস্যুসহ বিভিন্ন সমস্যা পর্যাক্রমে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। চেকপোস্টে সমস্যাসহ কিছু কিছু সমস্যা স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমেই সমাধান হয়ে থাকে। এছাড়া ব্যবসায়ীদের ভিসাসহ সব ধরণের সুবিধা দিতে হাই কমিশন সব সময় আন্তরিক।’
শরণ বলেন, ‘ভারতের সেভেন সিস্টিারের মধ্যে ২ রাজ্যের পুরো জনসংখ্যার চেয়েও চট্টগ্রামের জনসংখ্যা বেশি। সে অনুযায়ী এখানে সম্ভাবনাও বেশি। এখানে নৌ, রেল ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের মাধ্যমে আরো উন্নতি করতে পারবে। দেশের অর্থনীতির প্রাণ হচ্ছে চট্টগ্রাম। আর বিশ্ব অর্থনীতিতেও বাংলাদেশের হয়ে এই চট্টগ্রাম নেতৃত্ব দেবে বলে আমি মনে করি।’
চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের সাংসদ এম এ লতিফ সহ ব্যবসায়ী সমাজের নেতারা।