ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানকে কারাদণ্ড দেয়ার নিন্দা জানিয়ে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় তিনটি মানবাধিকার সংগঠন এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেছে, এরফলে যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে পর্যবেক্ষকদের মন্তব্য করার জায়গা আরো সংকুচিত হয়ে পড়েছে।
শনিবার এক বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব জুরিস্টস একে মত প্রকাশের ওপর আঘাত হিসেবে মন্তব্য করেছে।
‘বার্গম্যানের সাজা সাংবাদিক এবং মানবাধিকার রক্ষাকারীদের নিকট এই শীতল বার্তা দিচ্ছে যে ন্যায়সংগত সমালোচনাও সহ্য করবে না আইসিটি,’ বলেন বেনেট।অ্যামনেস্টির এশিয়া-প্যাসিফিক রিডেক্টর রিচার্ড বেনেট বলেন, ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্মান করার পরিবর্তে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত তার কিছু সমালোকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার প্রক্রিয়া ব্যবহার করেছে। এক্ষেত্রে যাদেরকে সাজা দেয়া হয় তাদের আপিল করারও কোনো সুযোগ নেই।’
অনুসন্ধানী সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানকে গত ২ ডিসেম্বর প্রতীকি সাজা এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা অনাদায়ে কারাদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত, যিনি এই আদালতের বিচার প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে আসছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আইসিটির বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে যারা সমালোচনা করে তাদের মধ্যে কারো কারো বিরুদ্ধে আদালত অবমানননার অভিযোগ আনা হয়। দৃশ্যত সমালোচনাকারীদের মুখ বন্ধ করার জন্যই হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ইকোনমিস্ট এবং বাংলাদেশের স্থানীয় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার বিচার করা হয়েছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, এবার আইসিটি একটি ভিন্ন নজির স্থাপন করেছে বার্গম্যানকে তার ব্লগের লেখার জন্য সাজা দিয়ে। ওই ব্লগে তিনি মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা প্রশ্ন তুলেছেন। বাংলাদেশ সরকার প্রায়ই নিহতের সংখ্যা ৩০ লাখ বলে থাকে। আদালতও একে প্রমাণিত তথ্য ধরে নিয়েছে। তবে কিছু কিছু পর্যবেক্ষকের মতে নিহতের সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ। কেউ কেউ আবার ৩ লাখ থেকে ৩০ লাক পর্যন্ত হতে পারে বলে হিসাব দেখিয়েছেন।
বিবৃতিতে তিনটি মানবাধিকার সংগঠন বলেছে, ১৯৭১ সালে কত লোক নিহত হয়েছিল তা নিয়ে এসব সংগঠন কোনো পক্ষ নিচ্ছে না। তবে তারা বিশ্বাস করে যে এই সংখ্যা নিয়ে যে কেউ দ্বিমত পোষণ করতে পারে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া ডিরেক্টর ব্রাড অ্যাডামস বলেন, ‘বার্গম্যান যেসব ইস্যু তুলেছেন তা বৈধ মন্তব্য প্রতিবেদনের সীমারেখার মধ্যেই রয়েছে।’
অ্যাডামস বলেন, বার্গম্যান যেসব প্রশ্ন তুলেছেন সেই একই প্রশ্ন তো যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক রাষ্ট্রদূত স্টিফেন র্যাসপও তুলেছেন। তাহলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে না কেন?