চুয়াডাঙ্গা: প্রথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিএসসি) পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের তুমুল আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই এবার ফাঁস হলো চতুর্থ শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষার ইংরেজি ও গণিত বিষয়ের প্রশ্নপত্র।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি সত্যতা পাওয়ায় দামুড়হুদা উপজেলায় সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সোমবার অনুষ্ঠিতব্য বার্ষিকের গণিত বিষেয়ের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যায় জেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম নবী দামুড়হুদা উপজেলার সব স্কুলের গণিত বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত করেন। সেই সঙ্গে রোববার অনুষ্ঠিত ইংরেজি পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণা দেন।
সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গা জেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম নবীর কার্যালয়ের ই-মেইলে জেলা জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) এর উপ-পরিচালক জাফর ইকবাল তার কার্যালয়ের ই-মেইল থেকে ইংরেজি ও গণিতের ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র রোববার সকাল ৮টার সময় পাঠালেও তিনি এ বিষয়ে জেলা প্রশাসককে অবহিত না করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গাফিলতি করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিভাবকরা জানান, শনিবার রাতে কুচক্রি মহল ইংরেজি ও গণিত প্রশ্ন ফাঁস করে। যা দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনার ফটোকপির দোকানগুলোতে পাওয়া যায়। প্রশ্ন ফাঁসের খবরে বিদ্যালয়ের শিশুরা তা ফটোকপি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
রোববার সকালে চুয়াডাঙ্গা জেলা জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা ( এনএসআই) কার্যালয় হতে ২টি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ফটোকপি জেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে ই-মেইলে পাঠানো হয়। এরপর তিনি দামুড়হুদা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টির তদন্তের জন্য পাঠান। তারপর তিনি এ ব্যাপারে আর খোঁজখবর নেননি। এরপর প্রশ্নপত্র হুবহ মিল থাকার পরও ইংরেজি পরীক্ষা নেওয়া হয়।
এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসা গোলাম নবী সোমবারের গণিত পরীক্ষা স্থগিত করেন এবং ইংরেজি পরীক্ষা বাতিল করবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে জেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম নবী বলেন, ‘আমাকে এনএসআই’র উপ-পরিচালক ফাঁস হওয়া ইংরেজি ও গণিতের দু’ সেট প্রশ্নপত্র ই-মেইলে আমার কার্যালয়ে পাঠায়। ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের ফটোকপি সকালে পেলে তা আমি দামুড়হুদা উপজেলা শিক্ষা অফিসার নুরজাহান বেগমকে তদন্ত করতে দিই। পরে বিকেলে প্রশ্নফাঁস হয়েছে বলে জানালে গণিত পরীক্ষা স্থগিত ও ইংরেজি পরীক্ষা বাতিল করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।’
প্রশ্নপত্র ফাঁস ও তার আগের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসাইন বলেন, ‘তিনি এ বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছ থেকেই শুনেছেন। এ ব্যাপারে জেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম নবী তাকে কিছুই জানাননি।’