DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

পরাজিত কামরানকে ফিরিয়ে আনতেই কি জনপ্রিয় মেয়র আরিফকে সিলেট ছাড়া করা হয়েছে?

arif-kamranসিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার সম্পূরক চার্জশিটে নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন। আর এ সুযোগে মাঠ দখলে নেমেছেন সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান।

গত কয়েকদিন ধরে কামরানকে আবারো ব্যস্ত হয়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে। সর্বশেষ গতকাল বুধবার সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের উদ্বোধনে অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন কামরান। যদিও শহীদ মিনার পুনঃনির্মাণের দায়িত্বে ছিল সিলেট সিটি করপোরেশন। কিন্তু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন বর্তমান মেয়র আরিফুল হক।

অন্যদিকে, সিটি করপোরেশনকে কৃতজ্ঞতা ক্রেস্ট প্রদান করা হলেও করপোরেশন কিংবা মেয়রের নাম উল্লেখ না করে সঞ্চালক প্রধান নির্বাহী এনামুল হাবীবের নাম ঘোষণা করেন।

মাঠছাড়া আরিফের অনুপস্থিতিতে কামরানকে বেশ উৎফুল্ল মনোভাবে দেখা গেছে। মনের সুখে ৩ মন্ত্রীর উপস্থিতিতে জনস্রোতের মাঝেও গান গেয়ে নিজের সরব উপস্থিতি জানান দেন সাবেক এই মেয়র। সঞ্চালনার এক পর্যায়ে তিনি গেয়ে ওঠেন, ‘সালাম সালাম হাজার সালাম, সকল শহীদ স্মরণে/ আমার হৃদয় রেখে যেতে চায় তাঁদের স্মৃতির চরণে’। এসময় উপস্থিত অনেক অতিথি ও দর্শকস্রোতা কামরানের সঙ্গে কণ্ঠ ধরেন।

সিলেটের বারবার নির্বাচিত সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান তার দায়িত্ব পালনকালে রাত-দিন সবসময় কাটতো কর্মব্যস্ততায়। ধনী গরিব সর্বস্তরের মানুষের কাছে তিনি অতি জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। কিন্তু ২০১৩ সালের জুনে অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আরিফুল হক চৌধুরী মেয়র নির্বাচিত হলে কামরানের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ কর্মব্যস্ততা সীমিত হয়ে পড়ে। দলীয় অনুষ্ঠান ছাড়া মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন কামরানকে তেমন দেখা যেতো না। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গেলেও মিলতো না অতিথির চেয়ার। আর আরিফের ম্যাজিকে যখন নগরে উন্নয়নের শুভযাত্রা হয় তখন নগরবাসী ভুলতে শুরু করে কামরানের ভালবাসা।

অন্যদিকে, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সহযোগিতায় উন্নয়নের মাধ্যমে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে যাওয়া আরিফের যাত্রা থামে দায়িত্ব পালনের মাত্র ১ বছর পূর্ণ হওয়ার কিছুদিন পরেই। গত মাসে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার সম্পূরক চার্জশিটে আরিফুল হক চৌধুরীর নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পরই গাঢাকা দেন আরিফ। এরপর থেকে সরব হয়ে ওঠেন কামরান।

সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পুনঃনির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপনের সময় আরিফুল হক চৌধুরী থাকলেও উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিতি দূরের কথা নামটাও উচ্চারিত হয়নি। এর আগে ৭ সেপ্টেম্বর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত যখন শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ পরিদর্শনে যান, তখনো তিনি মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন। অর্থমন্ত্রী সিলেটের কোনো অনুষ্ঠানে এলেই মেয়র আরিফ শহীদ মিনার নির্মাণ কাজের অগ্রগতি দেখাতে বিভিন্ন সময় স্বউদ্যোগে অর্থমন্ত্রীকে পরিদর্শনে নিয়ে যেতেন।

মেয়র আরিফের নীরবতা আর সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন কামরানের সরবতায় সিলেটজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। অনেকে বলছেন, শহীদ মিনার উদ্বোধনের মঞ্চ অনেকটা সরকার দলীয় অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছিল। যদিও শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে বিস্তৃত এলাকাজুড়ে সর্বস্তরের জনতার ঢল নেমেছিল। এখানে অন্তত নির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে উদারতার পরিচয় দিতে পারতো আওয়ামী লীগ।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!