সিআইএর বিরুদ্ধে অমানবিক নিপীড়নের অভিযোগ প্রমাণ সহকারে উত্থাপিত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন সংস্থাটির প্রধান জন ব্রেনান।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, কিছু কর্মকর্তা হয়তো তাদের দায়িত্বের বাইরে গিয়ে কিছু করেছে তবে বেশিরভাগ অফিসারই নিজেদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছেন। তবে তিনি এটাও স্বীকার করেছেন যে, জিজ্ঞাসাবাদের কিছু পদ্ধতি কর্কশ ও ঘৃণ্য ছিল। তবে এ থেকে মূল্যবান তথ্য সংগ্রহ করে বড় ধরনের আক্রমণ প্রতিহত করে মানুষের জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সংবাদসূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা
আমেরিকান সিনেটের গোয়েন্দাবিষয়ক কমিটির তদন্তে আরোপিত 'দেশের জন্য অকার্যকর ও হানিকর অমানবিক নির্যাতনের' অভিযোগ অস্বীকার করে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সিআইএ প্রধান বলেন, 'বিশেষ কিছু অফিসারের আচরণ নীতিমালা বহির্ভূত হতে পারে। তবে সিংহভাগ ক্ষেত্রে সিআইএ যা করেছে, তা ঠিকই করেছে। তিনি আরো বলেন, সিআইএ তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব ঠিকঠাক মতোই পালন করে থাকে। তবে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে কোনো কাজ হয়তো নিয়মের বাইরে করেও থাকতে পারে।'
গত মঙ্গলবার আমেরিকান সিনেট কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদনে সিআইএকে নিষ্ঠুরতা ও প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। সিনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটির প্রতিবেদন অনুসারে জানা যায়, সিআইএর নীতিমালার বাইরে এসে বিশেষায়িত জিজ্ঞাসাবাদ পদ্ধতি 'ইটিআই' অবলম্বন করে, যা ৯/১১ পরবর্তী সময়ে বুশ প্রশাসন কর্তৃক অনুমোদিত হয়।
সিআইএর ৯/১১ পরবর্তী কর্মপন্থার সবচেয়ে বড় খারাপ ফলাফলের একটি হিসেবে বর্ণিত হয়েছে, আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুকে। জন ব্রেনান এটি স্বীকার করতে রাজি নন। তার ভাষ্য, দেশে-বিদেশে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হলেও বিষয়টি প্রমাণ করার কোনো উপায় নেই। তিনি বলেন, 'এসব আমাদের অবশ্য পালনীয় দায়িত্ব ছিল, আমরা সেসব পালন করে গেছি মাত্র।' তবে ৬ হাজার পৃষ্ঠার প্রমাণপত্রের সামনে বিব্রত ব্রেনান কিছুটা হলেও স্বীকার করেছেন বর্বরতার কথা। তার ভাষ্য অনুযায়ী, 'তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সত্যিই ঘৃণ্য কিছু ঘটেছে।'
আগেই কথা বলেছে ব্রিটেনঃ
সিআইএর নির্যাতন পদ্ধতি নিয়ে সিনেট কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার আগেই এ ব্যাপারে আমেরিকান গোয়েন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছেন ব্রিটিশ গোয়েন্দারা। শুক্রবার ডাউনিং স্ট্রিটের পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়। মূলত সিআইএর বন্দি নির্যাতনের সঙ্গে তৎকালীন সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের ঘনিষ্ঠ মিত্র ব্রিটেনের গোয়েন্দাদের কথাও রিপোর্টে উল্লেখ আছে কিনা নিশ্চিত হতেই এই রিপোর্ট চেয়ে অনুরোধ জানায় ব্রিটিশ গোয়েন্দারা। তবে এই রিপোর্টে কোথাও ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থার জড়িত থাকার কথা উল্লেখ নেই। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখপাত্র জানান, গোয়েন্দা পর্যায়ে রিপোর্ট প্রকাশের আগে দেখার অনুরোধ ব্রিটিশ সংশ্লিষ্টতা ঢাকতে নয় বরং যদি অনুরোধ করা হয়ে থাকত তাহলে ব্রিটিশ সংশ্লিষ্টা ঢাকতে অনুরোধ করা হতো না। তবে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হলে এমনটি করতে পারত বলেও জানান ওই মুখপাত্র।