বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় মূল অভিযুক্তদের বাদ দিয়ে নির্দোষ চার কনস্টেবলকে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হামলার মূল নায়ক কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও উপ-পরিদর্শককে (এসআই) বাদ দিয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি। এতে ওই চার কনস্টেবলকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের ভিত্তিতে রোববার সকালে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পর্যাক্রমে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছে তদন্ত কমিটি।
ফেঁসে যাওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন- কোতয়ালি মডেল থানায় কর্মরত কনেস্টেবল মনোয়ার হোসেন (ব্যাচ নং১১৮৮), পুলিশ লাইনসে কর্মরত কনেস্টেল মো. খলিল (ব্যাচ নং৮৫৫), মো. রফিক ও নুরে আলম (ব্যাচ নং৯৪১)।
হামলার শিকার শিক্ষার্থী ও তদন্ত কমিটির দেয়া প্রতিবেদনে দেখে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।অথচ প্রত্যক্ষদর্শী এবং বিভিন্ন মাধ্যমের ছবিতে উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের বিপুল উৎসাহে নিরীহ ছাত্রীদের উপর চড়াও হতে দেখা গেছে।
তাদের অভিযোগ, শিক্ষার্থী হামলার মূল নায়ক কোতয়ালি মডেল থানার ওসি মো. শাখায়াত হোসেন ও এসআই মো. শেখ মহিউদ্দিনসহ প্রকৃত অভিযুক্তদের বাদ দিয়ে তাদের অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছে তদন্ত কমিটি।
উল্লেখ, গত ৩ ডিসেম্বের বরিশাল নগরীর শেরে-ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের সামনে বান্দ রোডে ১০ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেন ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা।
পরে তারা দাবি জোরদার করার লক্ষ্যে সড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করলে কোতয়ালি মডেল থানার ওসি মো. শাখায়াতের নেতৃত্বে পুলিশ অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ২০ শিক্ষার্থী আহত হন।
এ ঘটনায় সমোলোচনার মুখে পুলিশ কমিশনার সৈবাল কান্তি চৌধুরী ৪ ডিসেম্বর ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেন।
কমিটিতে উপ-পুলিশ কমিশনার (হেড কোয়াটার) মো. সোয়েব আহম্মেদকে প্রধান করে আরও দুই কর্মকর্তাকে রাখা হয়। এ সময় তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন পুলিশ কমিশনার।
প্রতিবেদনে ওই চার পুলিশ কনস্টেবলকে অভিযুক্ত করা হয়। এর ভিত্তিতে রোববার সকালে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ওই আদেশের অনুলিপি রোববার সকালে মেট্রোপলিটন কোতয়ালি মডেল থানা ও পুলিশ লাইনসে পাঠানো হয়। আরেকটি অনুলিপি ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির অধ্যক্ষ ডা. কুমুদ রঞ্জন বালার কাছে পাঠানো হয়।
আদেশের অনুলিপি হাতে পেয়ে অনেকটা হতবাক হন বরখাস্ত পুলিশ সদস্যরা। এ ঘটনায় বাকরুদ্ধ ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির শিক্ষার্থীরাও।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী জানান, ওসি মো. শাখায়াত হোসেনের নেতৃত্বে এসআই মো. শেখ মহিউদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন হামলা চালিয়েছেন- এমন তথ্যই দেয়া হয়েছিল তদন্ত কমিটির কাছে। অথচ তারা অভিযুক্তদের বাদ দিয়ে নিরীহ পুলিশ সদস্যদের অভিযুক্ত করছে।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে ফের আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান ওই শিক্ষার্থী।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে তদন্ত কমিটি প্রধান উপ-পুলিশ কমিশনার সোয়েব আহম্মেদ জানান, অভিযুক্তদের শাস্তি দেয়া হয়েছে।