এবার বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বেয়াদব ও তার ছেলে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানকে কুলাঙ্গার আর চরম বেয়াদব হিসেবে উল্লেখ করলেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।
তারেক রহমান দেশের ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা করছে-এমন অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘বেয়াদব তারেক জিয়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে অপসংস্কৃতি বয়ে এনেছে। দেশের ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা করছে। তাই দেশে সুস্থ রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে হলে খালেদা জিয়ার ছেলেকে দেশ থেকে বিতাড়িত ও তাদের উৎখাত করতে হবে।’
শনিবার বিকেলে সাভার অধরচন্দ্র স্কুল মাঠে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপি বিদেশের দিকে তাকিয়ে আছে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার এনে দেবে। তবে বাংলাদেশে তার কোনো সুযোগ নেই। ২০১৯ সালের আগে কোনো নির্বাচন হবে না। বিএনপি যদি আন্দোলনের নামে দেশে নৈরাজ্য, অরাজকতা সৃষ্টি করতে চায় তাহলে তাদের এমন জবাব দেয়া হবে যেন জীবনেও আন্দোলন তো দূরের কথা আন্দোলনের কথা চিন্তা করার সাহস না পায়।’
সম্মেলন শেষে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সাভার পৌর কমিউনিটি সেন্টারে কাউন্সিলের মাধ্যমে ঢাকা জেলার কমিটি ঘোষণা করার কথা থাকলেও দলের সকল নেতাকর্মীর সম্মতিতে বেনজির আহম্মেদকে সভাপতি ও মাহবুবুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল মান্নান, মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দিন খান ইমুসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে সাভার অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জাতীয় পতাকা বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দীর্ঘ এক যুগ পর ঢাকা জেলা ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলের উদ্বোধন করেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ এমপি।
এদিকে আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল উপলক্ষে শনিবার সকাল থেকেই ঢাকা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে স্কুল মাঠে নেতাকর্মীরা জড়ো হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৫ ডিসেম্বর পূর্ব লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘ পাকবন্ধু’ হিসেবে উল্লেখ করে বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আলোচনার সময় তিনি তার বক্তব্যে সপক্ষে যুক্তিও উপস্থাপন করেন।
দীর্ঘ পৌনে দুই ঘণ্টার বক্তব্যে লন্ডনে অবস্থান করা তারেক রহমান দাবি করেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিব পরিবারের কোনো অবদান নেই।’ তিনি আরো দাবি করেন, ‘লাখো মানুষ যখন রণাঙ্গনে, শেখ মুজিবের পরিবার তখন খুনি ইয়াহিয়া খানের পয়সায় খানসেনাদের পাহারায় নিরাপদে দিন কাটাচ্ছিলেন ঢাকায়। আওয়ামী লীগের নেতারা ছিলেন কলকাতায়। আর শখের বন্দী শেখ মুজিবের হাতে থাকতো এরিনমোর পাইপ।’ আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধকালীন দল হলেও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ ডিসেম্বর গাজীপুরের শ্রীপুরে পারুলি নদীর ওপর ব্রিজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তারেক রহমানকে উদ্দেশ করে সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘লন্ডনে বসে শব্দবোমা ছুঁড়ে লাভ হবে না। ক্ষমতা থাকলে মাঠে এসে আন্দোলন করুন।
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ‘বাংলার মাটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অপমান সহ্য করা হবে না। এদেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুর অপমানকারীদের দাঁতভাঙা জবাব দেবে।’