৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ পালন করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এদিন ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালন করবে।
এমন প্রেক্ষাপটে বিরোধী জোটের আন্দোলন কঠোর হস্তে মোকাবেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এজন্য জানুয়ারির শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অন্যান্য সংগঠনকে মাঠে থাকার নির্দেশ দিয়েছে দলীয় হাইকমাণ্ড। বিরোধী দলগুলোর আন্দোলন মোকাবেলার অংশ হিসেবে এরই মধ্যে সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করছেন দলটির নেতারা।
এ ছাড়া ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ মামলায় তারেক রহমানও আসামি। আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সাজা পেলে বিএনপি নেতারা মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে যেতে পারেন।সূত্রমতে, ৫ জানুয়ারি বিরোধী দলের কর্মসূচি মোকাবেলায় হার্ডলাইনে থাকবে সরকার। আন্দোলন মোকাবিলায় প্রশাসনিক যন্ত্রকেই বেশি ব্যবহার করা হবে। সেই জন্য বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে থাকা পুরোনো মামলাগুলো সচল এবং একই সঙ্গে নতুন করে মামলাও দেওয়া হতে পারে। এরই মধ্যে ধরপাকড়ের প্রাক-প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, বিরোধী দলের আন্দোলনের হুমকি বিবেচনায় নিয়ে সাংগঠনিকভাবে রাজপথে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। আন্দোলনের মাঠ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এরই মধ্যে আগাম দলীয় কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
৫ জানুয়ারির নির্বাচনের প্রথম বর্ষপূর্তিকে ‘গণতন্ত্রের বিজয়’ দিবস হিসেবে পালন করবে দলটি। এদিন ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এরপর ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে বড় রকমের জমায়েত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সরকারের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক নানা কর্মসূচি নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। এসব কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সরকারদলীয় কর্মীদের রাজপথে সক্রিয় রাখা হবে।
এ দিন বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটও একই স্থানে জনসভা করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মহাসমাবেশ সফল করার চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রস্তুত করা হচ্ছে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে। ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে রাজধানীর প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রাক প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সূত্রমতে, ৫ জানুয়ারি প্রত্যেক মন্ত্রী-এমপিকে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের নেতাদেরও কেন্দ্র থেকে সর্তকতামূলক নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। একইভাবে মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনকেও প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। যেসব এলাকায় বেশি সহিংসতা হয়- বিশেষ করে সীমান্ত এলাকাগুলোতে বাড়তি সতর্কতা থাকতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, আমাদের প্রস্তুতি ব্যাপক। এদিনটি উৎসবমুখরভাবে পালন করবো। এজন্য মহানগরের সকল থানা ওয়ার্ড পর্যায়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, ‘আগামী ৫ জানুয়ারি সরকারের প্রথম বর্ষ উপলক্ষে রাজধানীতে মহাসমাবেশ করা হবে। ওই দিন রাজধানীতে জনস্রোত নামিয়ে বিএনপির আন্দোলন হুমকির জবাব দেওয়া হবে।