ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, তার স্ত্রী ও দুই কন্যাকে গলা কেটে হত্যা মিশনে প্রধান আসামি হাফিজুর রহমান তনু একাই অংশ নিয়েছিলেন। অর্থনৈতিক লেনদেনের কারণেই স্বপরিবারে খুন হন এই নেতা।
ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার মঈনুল হক বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
এর আগে ভোরে হাফিজুর রহমান তনুকে (৩৫) গাজীপুরের টঙ্গি থেকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। তার বাড়ি যশোরের পুরাতন কসবা কাজীপাড়া (আমতলা মোড়) এলাকায়। তার বাবার নাম মৃত শামছুর রহমান।
ভোরে টঙ্গির এরশাদ নগর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তার হাফিজুর নিহত চালক রফিকুল ইসলাম বাচ্চুর সহযোগী ছিলেন।
পুলিশের জিঞ্জাসাবাদে তনু জানায়, দেড় বছর আগে বাচ্চু তার কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা ধার নেয়। দীর্ঘ দিনেও টাকা ও লাভ না দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে বাচ্চুকে স্বপরিবারে খুন করেন তিনি।
তনু আরো জানান, হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে যাতে কেউ সন্দেহ করতে না পারে এজন্যই বেশ কিছু দিন আগে থেকেই তিনি এলাকা ছেড়ে চলে যায়।
পরে সুযোগমত এলাকায় এসে প্রথমে বাচ্চুকে বাড়ির সামনে গাড়িতে কুপিয়ে হত্যা করেন। পরে বাড়িতে প্রবেশ করে স্ত্রীকেও কুপিয়ে এবং দুই কন্যা সন্তানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
পরে বাড়ি থেকে কিছু কাপড়-চোপড়, রঙিন টেলিভিশন, কিছু স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে যায়। এ হত্যা মিশনে তনু একাই অংশ নেয়। এবং হত্যাকাণ্ডে যে দাটি ব্যবহৃত হয়েছে সেটিও বাচ্চুর।
এ ঘটনার পরদিন ডিবি পুলিশ নেত্রকোনার মৌজেবালী গ্রাম থেকে প্রধান আসামি হাফিজুর রহমান তনুর স্ত্রী হোসনা আক্তার (২৮) ও বায়রা ভাই রফিকুল ইসলাম রফিককে (৪২) গ্রেপ্তার করে। এ সময় নিহত পরিবারের কাপড় ভর্তি একটি ব্যাগ, একটি রঙ্গিন টেলিভিশন, একটি এমপ্লি ফায়ার উদ্ধার করে। তনুকে গ্রেপ্তারের পর তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি দা নিহত বাচ্চুর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৬ ডিসেম্বর রাতে উপজেলার লবনকোঠা গ্রামে একই পরিবারের ৪ জনকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এরা হলেন- হবিরবাড়ি ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, তার স্ত্রী পারুল আক্তার, দুই শিশুকন্যা জিনিয়া ও রিমা। এ ঘটনার একদিন পর ১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাতে নিহত রফিকুলের বাবা ওয়ারেছ আলী বাদী হয়ে ভালুকা থানায় হাফিজুর রহমান তনুকে সন্দেহভাজন ও অজ্ঞাত ৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই রাতেই ওই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলাটি অবশেষে ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়।