ক্যাপ্টেন(অবঃ) মারুফ রাজুঃ শেখ হাসিনার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আর যাই হোক নিজেদের Safe Exit বা নিরাপদ প্রস্থান নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ক্ষমতা ত্যাগ করবে না কিংবা নিরপেক্ষ নির্বাচন ও দেবে না বলে আমার ধারনা।
শুনতে হয়ত খারাপ লাগছে কিন্তু হতভাগা এই বাংলাদেশের জন্য এটাই হল বাস্তবতা।
ঠিক যেমনটি হয়েছিল ১/১১ জেঃ মঈন/ফখরুলের অবৈধ(৩ মাসের জায়গায় ২ বছর) তত্বাবধায়ক সরকারের সময়।
তখন বলা হয়েছিল বাংলাদেশ নামক ট্রেনটি লাইনচূত্য হয়ে গেছে,সেটিকে লাইনে ফিরে আনতে সময়ের প্রয়োজন। সেকথা বলে শুরু করা হয়েছিল দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসায়ী ও কোটিপতিদের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট। বিরাজনীতি করনের ধূয়ো তুলে রাজনীতিবিদ দের তুলে নিয়ে গিয়ে চাপ দেয়া হতো কথিত কিংস পার্টিতে যোগদানে ও সেই সাথে চালানো হতো অমানবিক নির্যাতন।
২বছরের মাথায় তাদের সব অপকর্ম প্রকাশ হতে থাকে এবং জনমত তাদের বিরুদ্ধে চলে যেতে থাকে। চতুর মঈন/ফখরুল বুঝে যায় তাদের দিন শেষ হয়ে এসেছে। আর তখন থেকেই তারা খুজতে থাকে “SAFE EXIT” বা “নিরাপদে প্রস্থানের নিশ্চয়তা” এর উপায়।
পর্যায়ক্রমে খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনা উভয়কেই প্রস্তাব দেয়া হয় ক্ষমতা হস্তান্তরের।আপোষহীন নেত্রী খালেদা জিয়া তাদের প্রস্তাবে রাজি না হলেও শেখ হাসিনা তা লুফে নিয়েছিলেন বলে জান যায়।
দেশের ইতিহাসে যতো আতাতের নির্বাচন, সেনা বাহিনীকে অবৈধভাবে ক্ষমতা গ্রহনের আমন্ত্রন,হত্যা-ষড়যন্ত্রের রাজনীতি ও নিজেরাই নিজেদের নেতা-কর্মীর গায়ে বোমা মারার( নারায়নগন্জের শামিম ওসমান) রাজনীতির প্রতিষ্ঠাতা প্রাচীন দল আওয়ামী লীগের বদান্যতায় এই মঈন/ফখরুন নিরাপদে পলায়নের সুযোগ পেয়ে বর্তে যায়।
অত:পর নির্বাচনের নামে সাজানো নাটকের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করে মঈন ও তার সহযোগীরা “SAFE EXIT” বা “নিরাপদ পস্থানের নিশ্চয়তা” এর সুযোগ গ্রহন করে সময়মতো বিনা বিচারে বহির্গমনে সক্ষম হয়।
বাস্তবতা হল প্রায় ৬ বছর পর জাতি আজ আবার সেই পরিস্থিতির মুখোমুখি দাড়িয়ে।
ক্ষমতাসীনরা সীমাহীন দুর্নীতি হত্যা-খুন-গুম নামক অপরাজনীতির অভিযোগে জর্জরিত।
নিজেদের হাত থেকে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়া মাত্রই হাজার হাজার মামলা তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হবে সাথে রয়েে জনরোষ। পরিনামে তাদের বিচার,কঠিন দন্ড সহ সমৃহ বিপদের সম্ভানা।
এই যদি হয় অবস্থা তাহলে ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতা ছেড়ে দেয়াটা হবে আত্মহত্যারই সামিল।
আর তাই বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট যতো হরতাল-আন্দোলন ই করুক না কেনো,আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার তার সমস্ত রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহার করে তা দমনের কাজ করতেই থাকবে।
তা সকল সুস্থ বুদ্ধি-বিবেক সম্পন্ন দেশপ্রেমিক জনগনের আজ ভেবে-চিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ……..বাংলাদেশ আজ কি করবে ?????
হাতে আছে মাত্র ২ টি উপায় । এর মধ্যে কোনটা বেছে নেবে ক্ষমতাসীন বা বিরোধীদল ????
১ম উপায়: ক্ষমতাসীনদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে তাদের কাঙ্খিত “SAFE EXIT” বা “নিরাপদে প্রস্থানের নিশ্চয়তা” প্রদান করা ।
২য় উপায়: সরকারের সাথে কোন আপোষ রফায় না গিয়ে প্রবল গন-আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে দুর্বল করে পদত্যাগে বাধ্য করা।এই পথ অত্যন্ত বিপদসংকুল এবং প্রচুর রক্তপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে এছাড়াও আরেকটি উপায় হচ্ছে ২য় উপায়ে ক্ষমতাসীনরা পরাজিত হয়ে নিজেদেরকে নিশ্চিত বিপদজ্জনক ভাগ্য বরন না করে বরং ৩য় শক্তির হাতে ক্ষমতা দিয়ে শেষ মুহুর্তে পালিয়েই নিজেদের জীবন রক্ষা করাই শ্রেয় মনে করতে পারে।
সেক্ষেত্রে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পরবর্তি নির্বাচনে আবার আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
মোট কথা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ এখন নির্ভর করছে এই SAFE EXIT এর সম্ভাবনার উপর।