থার্টি ফাস্ট নাইটে নিরাপত্তা জোরদার ও স্বাভাবিক রাখতে ‘বডি ক্যামেরা’ লাগিয়ে মাঠে নামছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। দেশে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে শাহবাগে ‘বডি ক্যামেরা’ ব্যবহার করবে।
মঙ্গলবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে কমিশনার বেনজীর আহমেদ এ তথ্য জানান। এদিকে থার্টি ফাস্ট নাইটে বিশেষ নিারাপত্তা গ্রহণ করেছে র্যাবও।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘দেশে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে থার্টি ফাস্ট নাইটে রাজধানীর শাহবাগে ‘বডি ক্যামেরা’ ব্যবহার করবে পুলিশ। ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশের সামনের দিকে (বুকের ওপর) বিশেষ কায়দায় এই ক্যামেরা লাগানো থাকবে। সার্বিক নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে রাজধানীর রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার কিংবা উন্মক্ত কোনো স্থানে সমাবেশ ও নববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান করতে দেয়া হবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, ‘সার্বিক নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), গুলশান, বনানী, বারিধারা এলাকায় বসবাসরত নাগরিকরা রাত ৮টার আগেই নিজ নিজ ঘরে ফিরে যাবেন। মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধে এসব এলাকায় এলকোহল সনাক্তকরণ ডিভাইস ব্যবহার করা হবে। ঢাবি এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে পরিচয়পত্র দেখাতে হবে।’ এছাড়া উন্মক্ত স্থানে নাচ-গান এবং কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান না করার জন্য প্রত্যেক নাগরিককে অনুরোধ জানান তিনি।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ থার্টি ফার্স্ট নাইটে গোটা রাজধানীকে ৮টি সেক্টরে ভাগ করেছে। এর মধ্যে সেক্টর-১ (গুলশান-বনানী-বারিধারা), সেক্টর-২ (ধানমণ্ডি, ঢাবি, হোটেল শেরাটন, হোটেল সোনারগাঁও) এবং সেক্টর-৮ (কূটনৈতিক এলাকা) এই ৩ সেক্টরকে অধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। গুলশান-বনানী-বারিধারা এলাকায় পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের ৫টি টিম নিয়োজিত থাকবে। প্রতিটি টিমের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন একজন এডিসি। মহাখালী ফ্লাইওভারের নীচে মহাখালী ক্রসিং, বনানী কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, গুলশান-১, গুলশান-২, বনানী ডিসিসি মার্কেটের সামনে, বারিধারা, কানাডিয়ান ক্লাব, মানারাত ক্লাব গলিতে এসব টিম মোতায়েন থাকবে।
স্ট্রাইকিং ফোর্স (ধাবমান) হিসেবে পুলিশের গুলশান বিভাগের ৫টি ও গুলশান থানার ১টি টিম দায়িত্ব পালন করবে। এ এলাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে গোয়েন্দা বিভাগের ১০টি ভিডিও ক্যামেরা কাজ করবে। কেউ উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তা ভিডিও করা হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, হোটেল শেরাটন, হোটেল সোনারগাঁও ও ধানমন্ডি এলাকায় পুলিশ ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের প্রায় ৪ হাজার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে।
এদিকে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান জানান, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে র্যাব নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কাজ করবে। স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে নাশকতা ও উচ্ছৃঙ্খলা ঠেকাতে বিশেষ কৌশলে কাজ করবে র্যাব।
র্যাবের প্রায় ৫শ সদস্য গুলশান-বনানী ও বারিধারা এলাকায় নিরাপত্তা দিবে। বনানী কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ প্রবেশ পথ, গুলশান শ্যূটিং ক্লাব, মহাখালী ফ্লাইওভারের নীচে ও যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস ক্রসিংয়ে র্যাব ৪টি চেকপোস্ট স্থাপন করবে। এই ৪টি চেকপোস্ট ছাড়া এলাকায় প্রবেশের পথ রাত ৮টার পর বন্ধ করে দেয়া হবে। চেকপোস্ট দিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের যানবাহন প্রবেশ ও বের হতে দেয়া হবে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ রাজধানীর অন্য এলাকা থেকে রাত ৮টার পর বুধবার ভোর পর্যন্ত এ এলাকায় প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।
প্রত্যেক চেকপোস্টে র্যাবের ডগস্কোয়াড থাকবে। কেউ অবৈধ মাদকদ্রব্য বহন বা সেবন করলে তা ডগস্কোয়াড দিয়ে সনাক্ত করা হবে। এছাড়া র্যাব মোটরসাইকেল ও গাড়িতেও টহল দেবে।