৫ জানুয়ারি রাজপথে থাকবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সেদিন যে কোনো মূল্যে গুলশানের বাসা থেকে বের হয়ে নয়াপল্টনে আসবেন তিনি। সে জন্য বিএনপিসহ ২০ দলের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। দলীয় বিশ্বস্ত সূত্রে এ কথা জানা গেছে।
অনুমতি না পেলেও ৫ জানুয়ারির ঘোষিত কর্মসূচি পালনে অনড় ২০ দল। জোটের প্রধান বিএনপি বলছে, ৫ জানুয়ারি রাজধানীতে আমাদের সমাবেশ শান্তিপূর্ণ হবে। সমাবেশের অনুমতি দেয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তা ও সহযোগিতা দেয়ার জন্যও পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
গণমাধ্যমে দলটির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আমাদের সমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ। শান্তির জন্য, গণতন্ত্রের জন্য আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। বিএনপির সমাবেশ যে শান্তিপূর্ণ হবে তার দৃষ্টান্ত অতীত থেকেও পাওয়া যাবে।’
অনুমতি না পেলে বিএনপি কী করবে? জানতে চাইলে রিজভী বলেন, ‘আমরা কর্মসূচি করবো। এটি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে পারি।’ তবে এখন পর্যন্ত সমাবেশের জন্য বিএনপিকে অনুমতি দেয়নি পুলিশ।
এ বিষয়ে স্বারষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘আগামী ৫ জানুয়ারি বিএনপির সমাবেশের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলার ব্যাতয় না ঘটিয়ে এবং নাশকতার আশঙ্কা না থাকলে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হতে পারে।’
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘সময় হলে অনুমতির ব্যাপারে জানানো হবে।’
এদিকে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘রাজাকার’ বলায় তার জন্য ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত কোথাও খালেদা জিয়াকে সমাবেশ করতে দেয়া হবে না বলেও ঘোষাণা দিয়ে রেখেছে ছাত্রলীগ। ইতোমধ্যে গাজীপুরে সমাবেশও করতে পারেনি বিএনপি।
এছাড়া ৫ জানুয়ারি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগও। আওয়ামী লীগ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, ‘আগামী ৫ জানুয়ারি সারা দেশে সকাল থেকে প্রতিটি ওয়ার্ড, থানা, জেলা ও উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাজবে, ওই দিন ‘গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’ উপলক্ষে দুপুর আড়াইটায় রাজধানীসহ দেশের সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিজয় র্যালি হবে। বিজয় র্যালি শেষে ঢাকার নির্বাচনী এলাকায় ১৬টি স্পটে ভাগ হয়ে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। এর মধ্যে একটি হবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। সেখানে বক্তব্য দেবেন আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাষণ দেবেন।’
বিএনপি ও আওয়ামী লীগ তাদের কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্তে অটল থাকায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে জনমনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তবে বিএনপি ও ২০ দলীয় সূত্রগুলো বলছে, ৫ জানুয়ারি সমাবেশ করতে দিলে পরিস্থিতি একরকম হবে, না করতে দিলে অন্যরকম হবে। যেহেতু ওইদিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ সমাবেশ করবে তাই বিএনপিকে সেখানে অনুমতি দেয়া হবে না। তাই বিএনপি চেয়ারপারসন নয়াপল্টনে আসবেন, সেখানেই সমাবেশ হবে। ঢাকার আশপাশের জেলা থেকেও নেতাকর্মীরা ঢাকায় আসবেন। আর সেই সমাবেশ থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন সরকার পতনের কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। ২০ দলের নেতাকর্মীদেরকে সেরকম প্রস্তুতি নিতেই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।