বাংলাদেশের বর্তমান ভয়াবহ রাজনৈতিক সংঘাত এবং সরকার কতৃক মানবাধিকারের চরম অবমাননার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের উদ্বোধনী অধিবেশনে বিশদ আলোচনা হয় এবং অধিবেশনে উপস্থিত যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি পরিষদের সন্মানিত সদস্যগন এই অগনতান্ত্রীক কর্মকান্ডে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং এর তীব্র নিন্দা জানান।এতদসংক্রান্ত এক বিবৃতিতে মার্কিন কংগ্রেস বাংলাদেশ সরকারকে অব্যহত মানবাধিকার লংঘনের ঘটনায় কঠোর হুশিয়ারী প্রদান করেন।
ওয়াশিংটন ডিসি থেকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিশেষ উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বৈদেশিক দূত দ্বয়, ডঃ মুজিবুর রহমান মজুমদার এবং জাহিদ এফ সরদার সাদী।এ বিষয়ে বেগম জিয়ার বিশেষ উপদেষ্টা জনাব সাদী জানান,যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের উদ্বোধনী অধিবেশনে নজিরবিহীন ভাবে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় এবং দুপুর ২টা ২২ মিনিটে নিউইয়র্ক থেকে পূনঃনির্বাচিত কংগ্রেসম্যান জনাব হাকিম জেফরী বিষয়টি হাউজে উত্থাপন করেন।
এই বিশেষ বিবৃতিটিতে বলা হয়, বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী হিসাব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দির্ঘকাল ধরে বাংলাদেশের গনতান্ত্রীক ব্যবস্থা প্রাতিষ্ঠানিকিকরন,সুশাসন ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি ক্ষেত্রে সবধরনের সহায়তা দিয়ে আসছে।বিশ্বের প্রধানতম গনতান্ত্রীক রাষ্ট্র হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বাংলাদেশের জনগনের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং গনতন্ত্র চিরস্থায়ীকরনের পক্ষেই সহায়তা করেছে।
বিশেষ করে ২০১৩ সালে বাংলাদেশের ভয়াবহ রাজনৈতিক মতবিরোধ সমাধান কল্পে এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু,গ্রহনযোগ্য,নিরপেক্ষ এবং সকলের অংশ গ্রহনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার পক্ষ থেকে যথেষ্ট চেষ্টা করলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অসহযোগিতার কারনে ৫ই জানুয়ারী ২০১৪ এ একটি বিতর্কিত এবং একদলীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর অনুপস্থিতিতে এই নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনের পূর্বেই ১৫৪ টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হয় যা কিনা আধুনিক বিশ্বে বিরল।
বিরোধী দল বিএনপি এবং তার নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের দাবী অনুযায়ী একটি নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনে দাবী সম্পূর্ন উপেক্ষা করে যাচ্ছে আওয়ামী সরকার এবং সমস্যা সমাধানে কোন আলোচনায় বসতেও অস্বিকৃতি জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ সরকার।বর্তমানে এ দাবীতে আন্দোলন রত বিরোধীদল গুলোর নেতা কর্মীদের দমন করতে নির্মম ভাবে নিরাপত্তা বাহিনীকে ব্যবহার করছে বাংলাদেশ সরকার যা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং অবিলম্বে তারা বাংলাদেশ সরকারের এহেন কার্যকলাপ বন্ধ করার জন্য কঠোর হুশিয়ারী প্রদান করেন ।
বিশেষ করে অতি সম্প্রতি সাবেক প্রধান মন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে গত কয়েকদিন যাবৎ তার কার্যালয়ে নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা এবং বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য এবং মতামত বাংলাদেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গনমাধ্যমে প্রকাশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করার মতো অগনতন্ত্রীক ও আইনবিরুদ্ধ কার্যকলাপেও গভীর উদ্বেগ এবং হতাশা প্রকাশ করা হয়।
আলোচনার মাধ্যমে সব পক্ষের অংশ গ্রহনে একটি গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের বিষয়ে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে আরও বলা হয়,বিরোধী দল সহ সকল পক্ষকে অবশ্যই ধৈর্য্যের সাথে এবং শান্তিপূর্ন ভাবে দাবী আদায়ের আন্দোলন কর্মসূচী পালনে গুরুত্বারোপ করেন ।এক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশ গনতন্ত্রায়নে সবধরনের সহায়তা প্রদানে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ।