DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

অনড় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াঃ আসছে সমাবেশের নতুন ঘোষণা

dnআবারও রাজধানীতে সমাবেশের দিনক্ষণ ঘোষণা করবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট। এ বিষয়ে প্রস্তুতি চলছে। শিগগিরই এ ব্যাপারে ঘোষণা দেবেন জোট নেত্রী খালেদা জিয়া।
 
দলীয় সূত্র জানায়, রাজধানীতে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে পারলে সারা দেশে অবরোধের কর্মসূচি তুলে নেয়া হবে। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচির কথা ভাবা হচ্ছে। অবরুদ্ধ থেকেও অটুট মনোবল নিয়ে আন্দোলনে অনড় রয়েছেন খালেদা জিয়া। দিনক্ষণ ঠিক হলে সমাবেশ সফল করতে এরই মধ্যে দলীয় নেতাদের সার্বিক প্রস্তুতি নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
 
একতরফা নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে ৫ জানুয়ারিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ আখ্যায়িত করে রাজধানীসহ সারা দেশে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছিল ২০ দলীয় জোট। এর আগেই জোট নেত্রী খালেদা জিয়া তার গুলশানের কার্যালয়ে নেতাদের নিয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। সমাবেশ করতে না দেয়া পর্যন্ত সারা দেশে টানা অবরোধের ডাক দেন তিনি। গুলশানের কর্যালয়ে অবরুদ্ধ অবস্থায় বুধবার চতুর্থ দিন পার করেছেন তিনি।

 

শনিবার থেকে অবরুদ্ধ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয় ঘিরে বুধবারও পরিস্থিতি অপরিবর্তিত ছিল। কার্যালয়ের সামনে ও আশপাশে আগের মতোই কয়েক স্তরে পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনী রাখা হয়েছে। প্রধান ফটক একইভাবে বাইরে থেকে তালাবদ্ধ রয়েছে। দুপুর ১২টার দিকে কার্যালয়ের ভেতরে যান সাংবাদিক মাহফুজুল্লাহ। এর কিছুক্ষণ পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি আফম ইউসুফ হায়দারের নেতৃত্বে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।

 

এদিকে বুধবার চতুর্থ দিনের মতো অবরুদ্ধ পরিস্থিতে সময় পার করেছেন পেপার স্প্রেতে অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। রাতে শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন এ্যাপোলো হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট অ্যান্ড কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর ডা. মুজিবুর রহমান ভুইয়া। যদিও আগে থেকেই ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডাঃ সিরাজউদ্দীন কার্যালয়ের ভেতরে অসুস্থ খালেদা জিয়ার দেখাশোনা করছেন।

 

বুধবার কার্যালয়ে সামনে গিয়ে দেখা গেছে, কার্যালয়ে প্রধান ফটক আগলে রেখেছেন মহিলা পুলিশ সদস্যরা। সেখানে ৫ জানুয়ারি ঝুলিয়ে দেয়া তালা এখনও রয়েছে। একই ভাবে রাস্তার একপাশে জলকামান, অন্যদিকে পুলিশের দুটি পিকআপ ভ্যানের সাহায্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে।

 

‘অসুস্থ হলেও অটুট মনোবল’ :
 
খালেদা জিয়াকে দেখে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ঢাবির সাবেক প্রোভিসি আফম ইউসুফ হায়দার বলেন, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) অসুস্থ। বেশি কথা বলতে পারছেন না। তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। তবে মানসিকভাবে তিনি দৃঢ় মনোবল নিয়ে আছেন। তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিএনপি চেয়ারপারসন অবরুদ্ধ নয়। তাহলে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য আমাদের বাধা দেয়া হলো কেন? তিনি যদি অবরুদ্ধ না হন, তাহলে আমাদের সবাইকে প্রবেশ করতে দেয়া হলো না কেন? এসব দুই ধরনের কথা আমি মেলাতে পারছি না।

 

ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সদস্য অধ্যাপক ড. খলিলুর রহমান, অধ্যাপক ড. আজিজ, অধ্যাপক আশরাফুল ইসলাম চৌধুরী, ড. মোঃ মোরশেদ আলম খান, ড. তাহমিনা আখতার টপি এ সময় ছিলেন।

 

এর কিছুক্ষণ পর কার্যালয় থেকে বের হন সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ। তিনি বলেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিএনপি চেয়ারপারসনের এ অবরুদ্ধ অবস্থায় তারা উদ্বিগ্ন। তিনি (খালেদা জিয়া) বর্তমানে খুবই অসুস্থ এবং চিকিৎসাধীন। তবে বিএনপিপ্রধান অসুস্থ হলেও মানসিকভাবে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছেন।

 

তিন নেত্রী উধাও :
 
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তিন দিন ‘অবরুদ্ধ’ থাকার পর অবশেষে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে গুলশান কার্যালয়ে থেকে বের হয়ে গেছেন সাবেক এমপি আশিফা আশরাফি পাপিয়া। এ সময় তার সঙ্গে আরও দুই মহিলা নেত্রী বের হতে সক্ষম হন। বিএনপির চেয়ারপারসনের সঙ্গে গুলশান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ ছিলেন তারা।

 

জানা গেছে, মঙ্গলবার মধ্য রাতে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে গুলশান কার্যালয়ের বাউন্ডারি দেয়াল ডিঙিয়ে বের হয়ে যান পাপিয়া। বিএনপির আরও দুই সাবেক এমপি রেহেনা আক্তার রানু ও নিলুফার ইয়াসমীন মনিও সেখান থেকে বের হতে সক্ষম হন। এদিকে কার্যালয় ঘিরে পুলিশের কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী সত্ত্বেও তিন নেত্রী কীভাবে বের হলেন, তা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় আগের তুলনায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।

 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!