অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বিরোধী জোটের আন্দোলনে পিছু হটতে শুরু করেছে সরকার। শর্ত সাপেক্ষে বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দিতে পারে সরকার। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। অবরোধ প্রত্যাহার, বোমাবাজি, নাশকতা বন্ধসহ কিছু শর্ত থাকতে পারে।
সমাবেশের সুযোগ নিয়ে কোনো বিশৃঙ্খলা করবে না এ ধরনের নিশ্চয়তা পেলেই অনুমতি দেওয়া হতে পারে বলে আওয়ামী লীগ দলীয় সূত্র জানায়। তবে অনুমতি দিলেও আগামী ২০/২২ জানুয়ারির আগে দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছে সূত্রটি।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, অবরোধ, হরতাল, নাশকতা বন্ধ করলে সভাবেশের অনুমতির বিষয়ে সরকার বিবেচনা করতে পারে। সমাবেশ করায় তো নিষেধাজ্ঞা নেই। আগে এগুলো পরিহার করতে হবে। বিজিবির মহাপরিচালকের বক্তব্যের ওপর বিএনপি বিবৃতি দিয়ে প্রমাণ করেছে তারা নাশকতা করছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারের একজন মন্ত্রী বলেন, সমাবেশের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। সমাবেশ করতে দিলে কী হবে। তারা নির্ধারিত স্থানে সমাবেশ করবে, সমাবেশ করে চলে যাবে। এর বাইরে বিশৃঙ্খলা করতে গেলে তাদেরই মূল্য দিতে হবে।
এদিকে আওয়ামী লীগ ও সরকার সংশ্লিষ্ট অপর একটি সূত্র জানায়, বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হলেও প্রথমেই ঢাকার মধ্যে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া নাও হতে পারে। আগে ঢাকার বাইরে অনুমতি দেওয়া হতে পারে। এরপর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ঢাকায় সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
গত ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচনের বর্ষপূতিতে গণতন্ত্রের বিজয় দিবস পালন করতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় আওয়ামী লীগ। একই দিন ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালনের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই সমাবেশ করার ঘোষণা দেয় বিএনপি। দুই দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে ঢাকায় সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে পুলিশ।
পর দিন ৬ জানুয়ারি থেকেই লাগাতার অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। অবরোধের মধ্যে হরতালের কর্মসূচিও দেওয়া হয়। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলের এই হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যানবাহনে আগুন, বোমাবাজিসহ বিভিন্ন স্থানে নাশকতার ঘটনাও অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যেই বেশ কিছু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
সাম্প্রতিক এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে অগ্রসর হবে। তবে সরকার স্বাভাবিক পরিস্থিত ফিরিয়ে আনতে কঠোর কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে বিএনপিকে এক ধরনের সুযোগ দিতে পারে বলেও সূত্রটি জানায়।