অবশেষে নাশকতার মামলার আসামি হলেন বিএনপি চেয়ারপরসন বেগম খালেদা জিয়া।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বাসে পেট্রোলবোমা ছুঁড়ে আগুন দেয়ার ঘটনায় তাকে হুকুমদাতা হিসেবে আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলাটি করা হয়েছে।
মামলার বাদী এসআই নুরুজ্জামান দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাসহ মোট ৬৮ জনের নাম উল্লেখ করে শনিবার রাত সোয়া ১২টায় যাত্রাবাড়ী থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
ছেলে হারানোর শোকে যখন মুহ্যমান সত্তুরোর্ধ্ব বয়সের বেগম খালেদা জিয়া, ঠিক তখনি নাশকতার মতো ঘটনার মামলায় আসামি করা হলো তাকে।
৫ জানুয়ারি বিএনপির ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ ও আওয়ামী লীগের ‘গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’ উপলক্ষে কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতিকে ঘিরে নতুন বছরে রাজনৈতিক অঙ্গন আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠে। বিএনপিকে ঢাকায় সমাবেশ করতে না দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য সভা-সমাবশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরাপ করে ঢাকা মহানগর পুলিশ। এর প্রতিবাদে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালে অবরোধের ডাক দেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোট নেত্রী। এ অবরোধের ২০ দিন চলছে আজ রোববার। বিএনপি নেতৃত্বাধীন এ জোটের টানা অবরোধ চলাকালে সারা দেশে ককটেল, আগুন ও পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়ে অন্তত ২৭ জন নিহত হয়েছেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে। একই সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে বিরোধী জোটের ১১ জন নিহত হয়েছেন।
সরকারদলীয় নেতারা অবরোধে প্রাণহানির জন্য খালেদা জিয়াকে দায়ী করে তাকে হত্যা মামলার আসামি করার কথা বলে আসছেন বেশ কিছু দিন ধরেই। শাহজাহানপুরে গভীর নলকূপের পাইপে পড়ে শিশু জিহাদের মৃত্যুর জন্য সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বহীনতাকে দায়ী করে হত্যা মামলা দায়ের এবং সুধীমহল এ ঘটনায় সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করার পর থেকেই আওয়ামী লীগের নেতারা জোরালোভাবে বলে আসছেন, অবরোধে মৃত্যুর জন্য খালেদা জিয়াকে হত্যা মামলার আসামি করা উচিৎ।
অবহেলাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবরোধে নাশকতার জন্য খালেদা জিয়াকে দায়ী করে তাকে আসামি করার পক্ষে মত দেয়ার দু’দিন পরই এ মামলাটি দায়ের করা হলো। খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার প্রায় ১২ ঘণ্টা পরই মামলাটি দায়ের করা হলো।
উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টার দিকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো।