সাত মাস চাকরি থাকতেই ভারতের পররাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিংকে বরখাস্ত করেছে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। ২৮ বছর আগে ১৯৮৭ সালে রাজীব গান্ধী এপি ভেঙ্কটেশবরণকে অপসারণের পর প্রথম কোনো পররাষ্ট্র সচিবকে এভাবে সরানো হলো।
আজ (বৃহস্পতিবার) টাইমস অফ ইন্ডিয়ার অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার রাতে সরকারের কাছ থেকে সুজাতা সিংকে বরখাস্তের এই অপ্রত্যাশিত ঘোষণাটি আসে। সুজাতা সিংয়ের মেয়াদ কাটছাঁটের সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হচ্ছে বলে সরকারি ঘোষণায় জানানো হয়।
উল্লেখ্য এই সেই সুজাতা সিং যিনি ২০১৩ সালের শেষভাগে বাংলাদেশে এসে কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত ভাবে আমাদের অভ্যন্তরিন বিষয়ে আওয়ামী সরকারের পক্ষ নিয়ে অযাচিত ভাবে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করে প্রচুর সমালোচনার ভাগীদার হন।
সুজাতা সিংয়ের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন আমেরিকায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর। বুধবার রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে মন্ত্রিসভার নিয়োগ বিষয়ক কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীর ঘনিষ্ঠ সাবেক গোয়েন্দা-প্রধান টি ভি রাজেশ্বরের( সিকিম কানেকশন কুখ্যাত) কন্যা সুজাতাকে ২০১৩ সালেরর আগস্টে পররাষ্ট্রসচিব পদে নিয়োগ দিয়েছিল মনমোহন সরকার। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকারে আসার পর থেকে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সঙ্গে সুজাতার সম্পর্ক মোটেই ভালো ছিল না। শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সুজাতার কথাবার্তাই প্রায় বন্ধ ছিল।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার খবরে এ সম্পর্কে বলা হয়, সুজাতা সিংয়ের প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অসন্তোষের কথা কয়েক মাস ধরে প্রকাশ্যেই চলে এসেছিল। পররাষ্ট্র সচিব পদে পরিবর্তনের কথা উঠলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ তাকে রাখার পক্ষে অবস্থান জানিয়ে আসছিলেন বলে বলা হয়। অবশেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সফরের একদিন পর তাকে সরানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হলো।
মোদী এই কাজটি সারলেন জয়শঙ্করের অবসরের আগ মুহূর্তে। ৯ জানুয়ারি ৬০ বছর পূর্ণ হয়েছে জয়শঙ্করের। আইএফএস অফিসার হিসেবে চলতি মাসের ৩১ তারিখে তাঁর অবসর নেয়ার কথা। তার মাত্র তিন দিন আগে আজ তাঁকে নতুন দায়িত্ব দেয়া হলো দু’বছরের জন্য। এতে আরও দু’বছর পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে সক্রিয় থাকতে পারবেন জয়শঙ্কর। তবে জয়শঙ্করের পরিবর্তে আমেরিকায় কাকে রাষ্ট্রদূত করে পাঠানো হবে এ সিদ্ধান্ত এখনো নেয়া হয়নি।