বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও সহিংসতামূলক কর্মকাণ্ড সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস এবং ভারতীয় হাইকমিশন। দেশের বিভিন্ন সময়ে তারা বক্তব্য বিবৃতি দিলেও বর্তমান সংঘাত ও সহিংসতাপূণ অবস্থা প্রভাবশালী এই দুই কূটনৈতিক গভীরভাবে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া ব্লুম বার্নিকাট বুধবার দুপুরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেন। এর আগে বুধবার সকালে নতুন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া ব্লুম বার্নিকাট ভারতীয় হাইকমিশন ভবনে হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণের সঙ্গে বৈঠক করেন।
ভারতীয় হাইকমিশনের রাজনীতি বিষয়ক প্রথম সচিব সুজিত ঘোষ জানিয়েছেন, ‘পঙ্কজ শরণের সাথে সাক্ষাৎ করতে মার্সিয়া ব্লুম বার্নিকাট বুধবার সকালে হাইকমিশনে এসেছিলেন। তাদের দু’জনের মধ্যে সাক্ষাৎ হয়েছে। মূলত এটি ছিল সৌজন্য সাক্ষাৎ।’
এই দুই প্রভাবশালী কূটনীতিকের মধ্যে আলোচনায় বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে কিনা, জানতে চাইলে সুজিত ঘোষ বলেন, এই বিষয়টি আমরা এখনও জানতে পারিনি।
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতীয় দূতাবাসের একাধিক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে জানা গেছে, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও সহিসংতামূলক ঘটনায় মার্সিয়া-পঙ্কজ দু’জনই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তবে এই বিষয়ে দু’জনের একজনও সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি। দু’জনই বর্তমান সংকট নিরশনে রাজনীতিকদের মধ্যে সংলাপ অনুষ্ঠানের বিষয়ে প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন।
এদিকে, গত মধ্য জানুয়ারিতে গণমাধ্যমে বার্তা পাঠিয়ে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পরিস্থিতির উন্নয়ন, সহিংসতা বন্ধ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে বসার আহ্বান জানায় দেশটি।
অন্যদিকে ভারত সরকারের পক্ষে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশই তার সমস্যার সমাধান করবে। ভারত এই বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। তবে বাংলাদেশকে সুখী, সমৃদ্ধশালী ও শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে চায় ভারত।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের আমেরিকান সেন্টার থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাক্ষাতকালে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ, বাংলাদেশ ও বাংলাদেশি জনগণের এবং একই সঙ্গে আঞ্চলিক ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের শক্তিশালী সম্পর্ক জোরদার করার কথা বলেন বার্নিকাট।
বঙ্গভবনে এই পরিচয়পত্র জমা দেওয়ার সময় তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে এই অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখে। দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করলে উভয় দেশের জনগণই উপকৃত হয় এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা অনেক ক্ষেত্রে এভাবেই কাজ করে আসছি।