চলমান সংকট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কাছে সংলাপের জন্য বিশিষ্টজনদের মতামত সম্বলিত লিখিত প্রস্তাব নিয়ে যাচ্ছেন ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
শনিবার দিনভর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মিলনায়তনে ‘জাতীয় সঙ্কট নিরসনে জাতীয় সংলাপ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক শেষে ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
ড. কামাল হোসেন বলেন, আজকের আলোচনায় বিশিষ্টজনরা সংকট নিরসনে যেসব প্রস্তাব দিয়েছেন তা লিখিত আকারে দুই-একদিনের মধ্যে দুই নেত্রীর কাছে পাঠানো হবে।
তিনি জানান, সংকট নিরসনের উপায় খুঁজে বের করতে মতবিনিময় চলতে থাকবে।
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামছুল হুদা বলেন, সংলাপের মাধ্যমে বর্তমানে যে সংকট, তার সমাধান করতে হবে। তবে এ সংলাপ শুধুমাত্র দু’টি দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা ঠিক হবে না। এটা হতে হবে জাতীয় সংলাপ।
তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে যেভাবে আমরা এক সাথে যুদ্ধ করেছিলাম। আজকে এই সংকট নিরসনেরও সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা কোন দলীয় স্বার্থের ভিত্তিতে কাজ করতে চাইনা। জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে সংকট নিরসন করতে চাই।
তিনি আরো বলেন, আমাদের একটি জাতীয় কর্মসূচি তৈরী করতে হবে। আমরা শুধু একটি দলকে সরাতে আর অন্য একটি দলকে ক্ষমতায় আনতে কাজ করছি, সে রকম নয়। আমাদেরকে একটি স্থায়ী সমাধান করতে হবে।
গোলটেবিল বৈঠকে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, ‘অবরোধ প্রত্যাহার ও সংলাপে বসার দিনক্ষণ ঠিক করার সিদ্ধান্ত একই সময়ে নিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রীকে সংলাপের দিনক্ষণ সুনির্দিষ্ট করে জানাতে হবে এবং যুদ্ধাপরাধী ব্যতিত সব রাজনীতিবিদকে মুক্তি দিয়ে সংলাপের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। একই সময়ে ২০ দলীয় জোট নেত্রীকে হরতাল প্রত্যাহার করতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
গোলটেবিল আলোচনায় অধিকাংশ আলোচক সংলাপের পক্ষে মত দেন।
তারা বলেন, সংলাপই একমাত্র গণতন্ত্রের ভাষা। চলমান রাজনৈতিক সংকটকে রাজনৈতিকভাবেই সমাধানের পরামর্শ দেন তারা।
গণফোরামের সভাপতি ও সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন জাতীয় ঐক্য গঠনের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেন।
দুই পর্বে বিভক্ত এই গোলটেবিল আলোচনায় প্রথম পর্বে সভাপতিত্ব করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাক্তন উপদেষ্টা এম. হাফিজ উদ্দিন খান ও দ্বিতীয় পর্বে সভাপতিত্ব করেন প্রাক্তন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটি এম শামসুল হুদা। গোলটেবিল আলোচনায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাক্তন উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. আকবর আলী খান, রাশেদা কে চৌধুরী, সি এম শফি সামী, ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ,আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক ,বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যর আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ডাকসুর প্রাক্তন ভিপি সুলতান মুহাম্মদ মুনসুর, জিএস ড. মুশতাক হোসেন, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর(অব.) আব্দুল মান্নান, প্রাক্তন আইজিপি নুরুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, প্রযুক্তিবিদ হাবিবুল্লাহ করিম, সাংবাদিক আবু সাঈদ খানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ও সুশিল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।