আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রীবেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচন ছাড়া কোনো ভাবেই বর্তমান সংকটের সমাধান হবে না।
বুধবার তিনি টেলিফোনে এএফপিকে ওই সাক্ষাৎকার দেন। এক মাসেরও বেশি সময় নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় এটাই কোনো পশ্চিমা মিডিয়াকে দেয়া তার প্রথম সাক্ষাৎকার।
এতে তিনি বলেন, ‘দেশের সচেতন ও বিবেকবোধ সম্পন্ন প্রতিটি মানুষ জানেন যে, বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানের একটিই মাত্র পথ আছে। তা হলো সবার অংশগ্রহণমূলক, প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও অর্থপূর্ণ নির্বাচন।’
তিনি আরো বলেন, ‘যত দ্রুত তা আয়োজন করা হবে ততই তা সবার জন্য মঙ্গলজনক হবে। বিলম্ব করা হলে সঙ্কট আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।’ খালেদা জিয়া বলেন, আমরা বলেছি সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে আলোচনার মাধ্যমে ও সব দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে। আমরা সেটাই চেয়েছি। সব দলের জন্য যাতে সমান ক্ষেত্র (লেভেল প্লেইং ফিল্ড) তৈরি হয় সে জন্য আমাদেরকে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও নির্বাচনী আইন নিয়ে কিছু সিদ্ধান্তে আসতে হবে।
কিছুদিন আগে আমরা সাত দফা প্রস্তাব দিয়েছি। কিন্ত তাদের কাছ থেকে এ বিষয়ে কোন সাড়া পাইনি। উল্লেখ্য, গত ৩রা জানুয়ারি থেকে গুলশানে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করার পর থেকে রাজনৈতিক সহিংসতায় কমপক্ষে ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। খালেদা জিয়া সড়ক অবরোধের ডাক দেয়ার পর বেশির ভাগ মানুষ মারা গিয়েছেন বোমা হামলায়।
পেট্রোল বোমা হামলার জন্য খালেদা জিয়া ওই সাক্ষাৎকারে দায়ী করেন শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগকে। তিনি বলেন, এসব সহিংসতার নেপথ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগ। তারাই এ ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের দোষারোপ করছে। আমরা খবরের কাগজে পড়েছি, কিভাবে আওয়ামী লীগ অফিসে পাওয়া গেছে পেট্রোল বোমা।
খালেদা জিয়া দাবি করেছেন, এ বছরের শুরু থেকে বিরোধী দলের ১৮,০০০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে গতকাল তার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন বৃটিশ হাই কমিশনার রবার্ট গিবসন। তিনিও সব দলকেই তাদের কর্মকাণ্ড বিবেচনার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দেশের জাতীয় স্বার্থের আরো ক্ষতি হয় এমন কর্মকাণ্ড বন্ধ করা উচিত।
রিপোর্টে বলা হয়, গত বছর একতরফা নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী হাসিনার ওপর নতুন নির্বাচন দেয়ার জন্য বিভিন্ন দিক থেকে আহ্বান জানানো হচ্ছিল। শেখ হাসিনার ওপর আন্তর্জাতিক চাপকে স্বাগত জানিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত সরকারের ওপর কঠোর ও অধিক কার্যকর চাপ দেয়া, যাতে তারা সমঝোতা ও সংলাপে আসে।