বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে প্রবেশে আবারো কড়াকড়ি আরোপ করেছে প্রশাসন। বুধবার বৃটিশ হাইকমিশনার রবার্ট ডব্লিউ গিবসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে যাওয়ার পর থেকে এ কড়াকড়ি আরোপ করা হয়।
বুধবার রাতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য খাবার নিয়ে গেলে পুলিশ তা গুলশান কার্যালয়ে ঢুকতে না দিয়ে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। এরপর থেকে বৃহস্পতিবার সকালে নাশতা প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। বিকেল চারটা পর্যন্ত দুপুরের খাবারও আসেনি। কার্যালয়ে অবস্থানরত তার কর্মকর্তা ও নিরাপত্তারক্ষীরা শুকনা খাবার খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।
বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার বলেন, ‘গতরাতে খাবার নিতে বাধা দেয়ার ঘটনা শুনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার কার্যালয়ে অবস্থানরতদের খোঁজ-খবর নিয়েছেন। তিনি নিজে সবাইকে খোরমা-খেজুর ও মুড়ি দিয়েছেন।
’ তিনি জানান, ‘কার্যালয়ে থাকা শুকনা খাবার খেয়ে তারা দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন।’ এদিকে, বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার দিকে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে দায়িত্বরত কয়েকজন সাংবাদিক ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে তাদের বাধা দেয় ডিবি পুলিশ।
দায়িত্বরত পুলিশের সহকারী কমিশনার মোক্তারুজ্জামান বলেন, ‘উপরের নির্দেশের কারণেই কার্যালয়ে সাংবাদিকদের যেতে দেয়া হচ্ছে না।’ এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘কেন সাংবাদিকদের যেতে দেয়া হবে না সে বিষয়ে আমাকে কিছু অবহিত করা হয়নি।’ এর আগে সাংবাদিকরা কার্যালয়ে প্রবেশে বাধামুক্ত ছিলেন। নাম এন্ট্রি করে সাংবাদিকরা কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করতে পারতেন।
এদিকে, বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান জানিয়েছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশের যে টিম দীর্ঘদিন থেকে দায়িত্ব পালন করতো, তাদেরও পরিবর্তন করা হয়েছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে পুলিশের নতুন একটি টিম দায়িত্ব পালন করছেন।’
এর আগে বুধবার রাতে পরপর দুই দফা খাবার প্রবেশ করানোর উদ্যোগ নিলেও পুলিশি বাধায় তা সম্ভব হয়নি। ফলে বৃহস্পতিবার দুপুর গুলশান কার্যালয়ে অবস্থানরত সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অভুক্ত রয়েছেন বলে জানা গেছে। অবশ্য পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির গতরাতে বলেন, খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে খাবার ঢুকতে দেওয়া হয়নি, এমন তথ্য তার জানা নেই।
তার জানা মতে, প্রতিদিন যেভাবে খাবার যায়, গতকালও সেভাবে খাবার গেছে। উল্লেখ্য, বিতর্কিত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বর্ষপূর্তির সমাবেশ ঘিরে ৩ জানুয়ারি রাত থেকে গুলশান কার্যালয়ে খালেদা জিয়াকে প্রথমে অবরুদ্ধ, পরে ১৮ জানুয়ারি থেকে তিনি স্বেচ্ছায় অবস্থান করছেন।
এরপর তিনি এখান থেকেই ৫ জানুয়ারি সারাদেশে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন, যেটি এখনো অব্যাহত রয়েছে। এর সঙ্গে আগে ফাঁকে ফাঁকে হরতাল দেয়া হলেও দুই সপ্তাহ টানা হরতাল চলছে।