DMCA.com Protection Status
title=""

চলমান সংকট নিরসনে শান্তিপূর্ন সংলাপঃ আওয়ামী লীগের উপর চাপ ক্রমশই বাড়ছে

khaleda_hasina২০১৩ সালের পর আওয়ামী লীগ সরকার এই প্রথম বেকায়দায় পড়েছে। এতদিন বিএনপি একাই সংলাপের কথা বলত। আর এখন দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মহলও এ দাবি তুলেছে। শুধু তাই নয়, খোদ জাতিসংঘও আলোচনার কথা জানিয়েছে। এতকিছুর পরও দেশে একই অচলাবস্থা বিরাজ করছে।

 

আর এ কারণে আন্দোলনে সহিংস নানা ঘটনা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের মনোভাবে বিএনপিও বেশ দুশ্চিন্তায় রয়েছে। বিএনপি ও এর শরিক দলের নেতারা মনে করে, সংকট সমাধানে সংলাপ-সমঝোতায় আসতে হবে সরকারকে। এখনো সংলাপের মাধ্যমে সমাধান সম্ভব। তবে এজন্য দলটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কার্যকর ভূমিকায় দেখতে চায়।

 

আর এ কারণে আন্দোলনে সহিংস নানা ঘটনা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের মনোভাবে বিএনপি চিন্তিত। বিএনপি ও এর শরিক দলের নেতারা মনে করে, সংকট সমাধানে সংলাপ-সমঝোতায় আসতে হবে সরকারকে। এখনো সংলাপের মাধ্যমে সমাধান সম্ভব। তবে এজন্য দলটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কার্যকর ভূমিকায় দেখতে চায়।

 

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সম্প্রতি সংবাদ সংস্থা এএফপিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানান, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত সংলাপ ও সমঝোতার জন্য আরো জোরালো, কার্যকর চাপ সৃষ্টি করা। জাতিসংঘেরও উচিত এ লক্ষ্যে আবারো উদ্যোগ নেয়া। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের নেতারা মনে করছেন, নাশকতা ও পেট্রলবোমা হামলার ঘটনা বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।

 

এসবের ফলে সরকার আন্দোলনের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার যুক্তি দাঁড় করাতে পারে। এর ফলে বিএনপির আন্দোলনকে দেশে-বিদেশে জঙ্গি আন্দোলন হিসেবে দেখানোর সুযোগ তৈরি হলো সরকারের হাতে। এ কারণে বিদেশিদের সমর্থন পেতে বিএনপিকে বেগ পেতে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের সংকট নিয়ে কথা বলার সময় সংলাপের কথা যেমন বলছে, তেমনি আবার সহিংসতা বন্ধের ওপরও গুরুত্ব দিচ্ছে।

 

বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, এবারের আন্দোলনেও ২০১৩ সালের মতো জনগণকে সম্পৃক্ত করা যায়নি। এমনকি আতঙ্কের কারণে নেতা-কর্মীরাও মাঠে নামছে না। জানা গেছে, পুলিশের মামলা ও অভিযানের কারণে ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের বড় অংশ আত্মগোপনে চলে গেছে। এর ফলে টানা আন্দোলনের পুরো সাফল্য নিয়ে শঙ্কা দেখা দিচ্ছে। উল্লেখ্য, ৬ জানুয়ারি থেকে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি বিভিন্ন মেয়াদে হরতাল পালন করছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট।

 

২০-দলীয় জোটের শরিক দল কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম গণমাধ্যমকে জানান, তাদের আন্দোলনের দুটি লক্ষ্য। এক. সরকারকে সংলাপের পরিবেশ সৃষ্টি ও সংলাপে বাধ্য করা। দুই. এর ভিত্তিতে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। তিনি মনে করেন, সরকার অনমনীয় মনোভাব এবং শক্তি প্রয়োগের প্রবণতা দেখালেও নাগরিক সমাজের বড় অংশ শান্তির পক্ষে সোচ্চার হচ্ছে। এটি সরকার ও বিরোধীদের ওপর চাপ তৈরি করছে। এখন সরকারকে সংলাপের জন্য এগিয়ে আসতে হবে। সে সুযোগ তৈরি হয়েছে। সরকার তা না করলে দায় তাদেরই নিতে হবে।

 

২০ দলীয় জোটের নেতারা বলছেন, ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পর এক বছর ধরে তারা সরকারকে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। কিন্তু তাতে সাড়া মেলেনি। নতুন করে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার পর বিএনপির বাইরে সমাজের বিভিন্ন অংশ থেকেও সংলাপের দাবি জোরদার হচ্ছে। এরই মধ্যে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে সংলাপের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সুধীসমাজ মনে করছে, এ উদ্যোগ সফল না হলে তার দায় সরকারের ওপর পড়বে।

 

পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে সরব হয়েছে। নাশকতা নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি সংলাপ-সমঝোতার কথাও বলা হচ্ছে। জাতিসংঘও এব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য গণমাধ্যমকে জানান, মানুষের কষ্ট হচ্ছে, এটা ঠিক আছে। কিন্তু বিএনপি আন্দোলনে না গেলে কোনো আলোচনা থাকত না। এতদিন আমরা কিছুই করিনি। কেউ কি বলেছে আলোচনা দরকার।

 

এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় অগ্রগতি হলো জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগ। এটি আন্দোলনেরই ফল। আর এ উদ্যোগের সঙ্গে ভারতকেও জড়াবে জাতিসংঘ এবং তা অনেক দূর গড়াবে। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, সহিংসতা হচ্ছে। কিন্তু আমরা তা করছি না। বিএনপির আন্দোলন অহিংস। এটি রাজনৈতিক সংকট। সরকারের উচিত রাজনৈতিকভাবে তা সমাধান করা। সে জন্য সংলাপ জরুরি।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!