দীর্ঘ ২৬ বছর পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিতে গিয়ে নিজ দলীয় এমপিদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
২১ ফেব্রুয়ারির (শনিবার) প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ ঘটনা ঘটে। জাতীয় পার্টির নেতারা জানিয়েছেন, পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু দলের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ফুল দিতে শহীদ মিনারে যান। কিন্তু রওশন এরশাদের ঘনিষ্ঠ দলের দু’জন সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির ফুল সরিয়ে ফেলেন।
এরপর তারা বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের ফুল শহীদ মিনারে নিয়ে আসেন। ফলে এরশাদ বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে ফুল দিতে বাধ্য হন। জাতীয় পার্টির নেতারা আরও অভিযোগ করেন, এরশাদের ফুলই শুধু সরিয়ে ফেলা হয়নি। ফুল দেওয়ার সময় এরশাদকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়। রওশন এরশাদ যখন ফুল দিচ্ছিলেন তখন তার পাশে ছিলেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, সংসদ সদস্য সেলিম উদ্দিন, ফখরুল ঈমাম প্রমুখ। এদের পরে ছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জাতীয় পার্টির যুগ্ম-মহাসচিব এ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘দুইজন এমপি স্যারের সঙ্গে ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে বেয়াদবি করেছেন। এই দুই এমপির গায়ের চামড়া তুলে ফেলা হবে। যদি তারা ভুল বুঝতে পারে তাহলে তাদের ক্ষমা করা হতে পারে।’
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইদুর রহমান টেপা বলেন, ‘২১ ফেব্রুয়ারি রাতে স্যারকে অপমান করা হয়েছে। ওই দুই এমপিকে ক্ষমা করা হবে না।’ জাতীয় পার্টির যুগ্ম-মহাসচিব নুরুল ইসলাম নুরু বলেন, ‘দুইজন এমপি স্যারের সঙ্গে যে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে তাদের ক্ষমা করা হবে না। তারা স্যারকে অপমান করেছেন। এ অপমানের বদলা নেওয়া হবে।’
অভিযুক্ত দুই সংসদ সদস্য হলেন— মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন ও ফখরুল ঈমাম। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জাপা মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ‘আমরা বিভ্রান্তি চাই না, ঐক্য চাই।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এমপি বলেন, ‘এ ধরনের কোনো ঘটনা শহীদ মিনারে ঘটেনি। আমরা ফুলের ডালা নিয়ে সামনে চলে গিয়েছিলাম, স্যার পেছনে পড়ে যান। এটা কী আমাদের অপরাধ।’ অন্য অভিযুক্ত ফখরুল ঈমামের ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।