রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন গত বৃহস্পতিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের এক সম্মেলনে ইসলামের মৌলিক ফরজ বিধান বোরকা নিয়ে কটাক্ষ করে যে ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন- তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইসলামের মৌলিক বিধিবিধানের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের হৃদয়ে আঘাত করা সরকারি দলের মন্ত্রী ও উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের রুটিনওয়ার্কে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, রাজশাহীর সাবেক মেয়র লিটন বোরকা পরিহিত মা-বোনদের ‘ভূত ও জানোয়ার’ বলে আমাদের মাতৃজাতিকে অপমান করেছেন।
তিনি বলেন, এসব লোক মেয়েদের ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলে, ইভটিজিং করে, ধর্ষণের সেঞ্চুরির উৎসব করে। ধর্মপ্রাণ বোরকাওয়ালা পর্দানশিন মেয়েদের সাথে এসব করতে পারে না বলেই বোরকার প্রতি তাদের এত আক্রোশ।
মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী আরো বলেন, মহান আল্লাহ তায়ালার নির্দেশিত এই ফরজ বিধানের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে সরকারের ইসলামবিদ্বেষী মূর্খ সমাজকল্যাণমন্ত্রী বিভিন্ন সময় ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য ও বিদ্বেষমূলক আচরণের মধ্যদিয়ে এ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন।
সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে ইসলামি বিধিবিধানের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে বক্তব্য দেয়ার রীতি গড়ে ওঠার কুপ্রভাব আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যেও পড়েছে। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি লিটনের বক্তব্য সেটাই প্রমাণ করছে।
তাদের এহেন ধৃষ্টতা ক্ষমা করা যায় না। পর্দা করা, বোরকা পরা প্রত্যেক নারীর ধর্মীয় অধিকার। পর্দার বিরুদ্ধে কথা বলা মানে আল্লাহর বিধানকে অস্বীকার করা। কোনো প্রকৃত ঈমানদার মুসলমান আল্লাহর ফরজ বিধানের বিরুদ্ধে টুঁ শব্দটিও করার স্পর্ধা দেখাবে না।
মাওলানা আজিজুল হক আরো বলেন, আজকে ভোগবাদী দুনিয়া নারী-স্বাধীনতার নামে প্রতারণার স্লোগান তুলে নারীকে পণ্যে পরিণত করে অশ্লীল বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে রমরমা ব্যবসা করছে। নারীকে মিডিয়ার পর্দায় কৃত্রিমভাবে প্রদর্শন করতে গিয়ে তার প্রকৃত স্বাভাবিক রূপ ও সৌন্দর্যকে অবজ্ঞা করা হচ্ছে।
নারীর মাতৃত্বকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়া হয়েছে। নারী মাত্রই যেন এখন শোকেজের একটা পুতুল। এর ফলে ধর্ষণ, যৌনহিংস্রতা, ব্যভিচার ইত্যাদি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের মায়ের জাতি নারীর প্রতি সম্মান-শ্রদ্ধা দিন দিন কমে আসছে। নারীদের নিরাপত্তার জায়গা সঙ্কুচিত হয়ে আসছে।
সমাজে ক্রমবর্ধনশীল নারী নির্যাতন ও যৌন হয়রানি আমাদের শঙ্কিত করছে। এহেন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য এবং নারীর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতন বন্ধে আল্লাহর দেয়া ফরজ বিধান পর্দা বা হিজাব মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই।