DMCA.com Protection Status
title=""

যেকোনো কিছুর বিনিময়ে ভারতের বন্ধুত্ব চায় শেখ হাসিনা সরকার

biকোন অবস্থাতেই প্রতিবেশী বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারতকে হাতছাড়া করতে নারাজ বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। বিএনপি-জামায়েত ইসলামী দলের নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের চলমান হরতাল, অবরোধ এবং সহিংসতার মধ্যে আন্তজার্তিক চাপ সামাল দিতেই সরকার এ ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছে বলে দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন এবং আন্তজার্তিক সম্পর্ক বিশ্লেষক সূত্র।

এদিকে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হকের আমন্ত্রণে এক দিনের শুভেচ্ছা সফরে সোমবার ঢাকায় আসছেন ভারতের নতুন পররাষ্ট্র সচিব সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর।

পশ্চিম বঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী মমতা ব্যানার্জির সফরের পরপরই জয়শঙ্করের এ সফরকে ইতিবাচকভাবেই দেখা হচ্ছে। দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে এটা নতুন অধ্যায় হিসেবে কাজ করবে বলেও জানা গেছে।

ভারতকে হাতছাড়া না করতে সরকারের এমন উদ্যোগের প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মহাপরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদ২৪.নেট’কে বলেন, ‘বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অনেক জল ঘোলা হয়েছে। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, পালামেন্ট, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ সরকারের ওপর চাপ তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। এ ধরণের ঘটনা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এসেছে। কিন্তু বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে তাদের এ ধরণের উদ্বেগ ও সংলাপের তাগিদের বিষয়টি সরকার আমলে নিয়ে সবচে বন্ধু প্রতিম দেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরো বেশি জোরদারে সচেষ্ট হয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত মাসে পশ্চিম বঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। তিনি ছিটমহল বিনিময় এবং তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি নিয়ে আগের অবস্থান থেকে সরেও এসেছেন। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে অচিরেই ছিটমহল বিনিময় সম্পন্ন হবে বলেও আশার বাণী শুনিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তা।    

ভারতের নতুন পররাষ্ট্র সচিব সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্করের সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক উন্নয়ন ছাড়াও আগামীতে দুইদেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের বহিঃ অনুবিভাগ সূত্র ভারতের নতুন পররাষ্ট্র সচিবের সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্করের ঢাকা সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সূত্রটি আরো জানায়, জয়শঙ্করের এটি শুভেচ্ছা সফর। এটি কোনো দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক নয়। এই সফরে দুইদেশের মধ্যে কোনো চুক্তি বা সমাঝোতা স্মরাক স্বাক্ষর হওয়ার সুযোগ নেই। তবে দুই দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে।’

সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর শুভেচ্ছা সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এবং পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

এদিকে, পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক সংবাদ২৪.নেট’কে বলেছেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার এবং দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন ইস্যুতে জয়শঙ্করের সঙ্গে আলোচনা হবে। শুধু প্রতিবেশী দেশ নয় সব দেশের সঙ্গেই বাংলাদেশ সুসম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী।

এদিকে, ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা সংবাদ২৪.নেট’কে বলেন, ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্ব অকৃত্রিম এবং অটুট রাখতেই এ সফরের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শুভেচ্ছা সফর হলেও এ সফরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোন ধরণের চাপ তৈরির চেষ্টা থাকবে না। তবে সংহিসতা বন্ধেরও ব্যাপারে সরকারের কোন ধরণের সহায়তা লাগলে বন্ধুদেশ হিসেবে সহায়তা করবে ভারত বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি।   

ভারতকে হাতছাড়া করতে নারাজ সরকার এমন প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তাজার্তিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, শুধু বাংলাদেশ কেন; ভারত নিজেদের স্বার্থেই বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায়।

কারণ হিসেবে তিনি ব্যাখ্যা করে আরো বলেন, ‘ভারতের ৭টি অঙ্গরাজ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার লক্ষ্যেই বাংলাদেশকে পাশে চায় দেশটি। এছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্য-সামগ্রীর উপরও নির্ভরতা রয়েছে ভারতের। দেশটিতে জঙ্গি হামালার আশংকা সব সময়ই রয়েছে। তাই আওয়ামী লীগের সরকার এক্ষেত্রে ভারতীয় সরকারকে সর্বোচ্চ সহায়তা দিয়ে আসছে। তাই উভয় দেশ নিজেদের স্বার্থেই একে অপরকে হাতছাড়া করার কথা ভাববে না।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!