বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট গুরুতর হয়ে উঠতে পারে বলে সতর্ক করেছে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসভিত্তিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ।
বিদ্যমান ও সম্ভাব্য সংঘাতময় পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার প্রকাশিত সংস্থাটির মাসিক বুলেটিনে এভাবে সতর্ক করে দেওয়া হয়। এতে ফেব্রুয়ারি মাসের সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে সংঘাত বন্ধের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাটির ওয়েবসাইট থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ একটি স্বাধীন, অলাভজনক, বেসরকারি সংস্থা। চারটি মহাদেশের সংকট-আক্রান্ত ৬০টি দেশ ও ভূখন্ড নিয়ে তারা কাজ করে থাকে। সংকট নিরসন ও তা ঠেকাতে সংস্থাটি মাঠপর্যায়ে বিশ্লেষণ ও উচ্চপর্যায়ের অ্যাডভোকেসিও করে থাকে।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ তাদের এই বুলেটিনে বাংলাদেশকে সংঘাতের ঝুঁকির সতর্কতার দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। তালিকার অন্য দেশটি ইয়েমেন।
বুলেটিনে বলা হয়, বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট চলছে। সহিংসতায় দেশটির স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে। বিএনপির নেতৃত্বে জানুয়ারি থেকে দেশব্যাপী সরকারবিরোধী সহিংস আন্দোলন ও অবরোধে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে কয়েকশ। দুই মামলায় হাজিরা না দেওয়ায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। এই পরোয়ানা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে সহিংসতা বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট গুরুতর হয়ে উঠতে পারে। উত্তেজনা কমাতে সরকার ও বিএনপি জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগী না হলে এই সংকট গুরুতরভাবে দেশটিতে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।
বুলেটিনে বলা হয়, বিএনপি-জামায়াতকে মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে তুলনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংকট নিরসনের দাবি জানিয়ে আসছে সুশীল সমাজ। অর্থনীতির ওপর এই সংকটের নেতিবাচক প্রভাবের কথা বলে তারা সমালোচনা করছে। খ্যাতিমান আইনজীবী, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের অন্যান্য প্রতিনিধির সমন্বয়য়ে একটি নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে সংলাপে বসতে বলেছে তারা।
গত মাসে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন গঠনমূলক সংলাপের জন্য শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।