DMCA.com Protection Status
title="৭

একান্ত সাক্ষাতকারে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীঃ রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনে ভারতের গোলামী করতে রাজি না

bagha1চলমান সহিংস রাজনীতির বলি হচ্ছে সাধারণ মানুষ। তাই প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আলোচনায় বসানোর দাবিতে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী লাগাতার মতিঝিলে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করছেন। 

 

রোববার ছিল সেই অবস্থান কর্মসূচীর ৪০তম দিন। সকাল ৯ টা থেকে অবস্থান কর্মসূচীতে অংশ নেয়ার কথা থাকলেও তিনি নামেন দুপুর ১টা ২০মিনিটে। দেশের চলমান পরিস্থিতি, কূটনৈতিক চাপ, সমাধানের পথ, অসংবিধানিক ক্ষমতার আশংকাসহ সমসায়িক বিভিন্ন বিষয় গন-মাধ্যমের এর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেন।

 

প্রায় ১২ মিনিটের কথোপকথনের বিভিন্ন দিক পাঠকদের জন্য তুলে ধরছি আমরা। শুরুতেই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা প্রসঙ্গে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, সব হাসিনা-খালেদার লোক। এছাড়া বাংলাদেশে সবচে বিপদ হলো সাংবাদিকদের। তারা মুক্তভাবে কলম চালাতে পারেন না। সাংবাদিকদের বিবেক বলতে এখন আর তেমন কিছু নেই বলেও জানান তিনি। সকাল ৯টায় অবস্থান কর্মসূচীতে আসার কথা থাকলেও ৪০তম দিনে তিনি কার্যালয়ের সামনে নামেন দুপুর ১টা ২০ মিনিটে। এসময়ের মধ্যে তিনি লেখালেখিতে ব্যস্ত ছিলেন।

 

কি লিখছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনিএ প্রতিবেদককে বঙ্গবীর বলেন, এখানে বসে আমি এবং আমার দলের কর্মীরা বাংলাদেশকে পাহাড়া দিচ্ছি। তবে কবিতা-টবিতা কিছু তিনি লিখেননি বলে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন। দুই লাইনের বেশি কবিতাও তার পক্ষে লেখা সম্ভব হয়নি। এক্ষেত্রে বিভিন্ন পত্রিকার জন্য মন্তব্য কলাম লেখার কাজে ব্যস্ত ছিলেন বলে জানান তিনি।

 

হরতাল অবরোধ ও সহিংসতার বাইরে গিয়ে আপনার কৃষক শ্রমিক লীগের অভিনব আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে টেকসই শান্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি তো আমার বিজয় চাই না। দেশের বিজয় চাই। জন্মের পর মৃত্যু যেমন, অশান্তির পর শান্তি তেমন।’ অবস্থান কর্মসূচীতে নিজের অবস্থান করা না করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মানুষ তো হাগে, পেসাব করে, পায়খানা করে। এটুকু জায়গা আমার অবস্থানই। আমি অবস্থানেই আছি। বাড়িতে রাত্রে ঘুমাইয়া আমি অবস্থানে আছে বলি না। বহু মানুষ এখনো জিজ্ঞেস করে, রাতে কি এখানে খাকেন?’

 

সংকট উত্তরনে কূটনৈতিকদের পদেক্ষপ লজ্জাজনক বা শান্তিজনক এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘কূটনৈতিকরা পদক্ষেপ নেবেই। এটা সব দেশেই নেয়। বাংলাদেশ পৃথিবী থেকে কোন বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। তাদের পদক্ষেপ নেয়া না নেয়ার বিষয়টা ইতিবাচক হিসেবেই দেখতে হবে। কূটনৈতিকদের কূটনীতি করা খারাপ কিছু না। সব সময় ভালো। তবে কূটনৈতিকরা আমাদের উপর বসে থাকাটাই খারাপ। তাদের কথা আমাদের শুনতে হবে, পাশাপাশি আমাদের কথাও তাদের শুনতে হবে। কতদিনের মধ্যে সংহিস রাজনীতির সমাধান হবে বলে বিশ্বাস করেন এমন প্রশ্নের জবাবে, ‘খুব তাড়াতাড়িই সমাধান হবে। কোন সমাধানই স্থায়ী নয়। যেদিন বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল সেদিন মনে হয়েছিল যে আমরা স্বর্গের কাছাকাছি চলে গেছি। মানুষ তো সব সময় ভালো থাকার চেষ্টা করে। আমরা সেই চেষ্টার উল্টোদিকে চলে এসেছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘ভাংচুর কোনো সাফল্য নয়। বাসায় কাজ করতে গিয়ে থালি বাসনও ভাঙ্গে। বাচ্চারা রাগ করে এটা ওটা ভাঙ্গে তো। কিন্তু কোন বাচ্চাই রাগ করে বেশিক্ষণ থাকে না। হঠাৎ রাগ করে তারা। বাপ মায়ের কাজ হচ্ছে আদর যত্ন করে বাচ্চাদের জেদ থামানো।’ ‘এথন দেখছি বাপ-মাই জেদ করে বসে আছে পাবলিকের ওপরে। বোন হোক-ভাবী হোক, এগুলো কোন কথা না। তারা দুজন নেত্রী। তারা জেদ করে থাকতে পারেন না।’

 

অসংবিধানিক কোন ক্ষমতা বা আবারো একটি ওয়ান ইলেভেনের পক্রিয়া আসার সম্ভাবনা রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘মানুষের কথা যারা না শুনে তারাই তো অসংবিধানিক। একটা ভোট ছাড়া যারা ক্ষমতায় বসে আছে তারাই তো অসংবিধানিক। আরে ওয়ান ইলেভেন তো ঘুরে ঘুরেই আসে। পাবলিক ঠিক তো সব ঠিক।’

 

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশে না আসার বিষয়টি ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘তিনি (নরেন্দ্র মোদি) বিপুল ভোটে নির্বাচিত একজন নেতা। এদেশে আসলে দু’হাত প্রসারিত করে যেন বুকে টেনে নিতে পারি সে বিষয়টি খেয়াল রাখার অনুরোধ করেছি। দেশের মানুষের সমর্থনহীন এই সরকারের আহ্বানে তিনি বাংলাদেশে আসলে দেশের প্রাণ পাবেন না। আমি চাই, তারা ভালো থাকুক। আমরাও ভালো থাকি।’

সর্বশেষ কথা হিসেবে বঙ্গবীর বলেন, ‘আমি কারো দাস হতে রাজি না। জীবন দিতে রাজি আছি। পাকিস্তানের হাত থেকে রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনে ভারতের গোলামী করতে রাজি না।’

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!