বাংলাদেশকে কটাক্ষ করে প্রকাশিত ভিডিওটি তীব্র প্রতিবাদের মুখে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে ইউটিউব।
আর এর মাধ্যমেই বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে তথাকথিত ভারতীয় ক্রিকেট উন্মাদদের নোংরামির একটা সীমারেখা টানা গেল। সামাজিক যোগাযোগের সবচে জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুকে এপার-ওপার বাংলার কোটি মানুষের নানা ধরণের সমালোচনার মুখেই বাধ্য হয়ে ইউটিউব বাংলাদেশিদের হেয় করার বিতর্কিত ভিডিওটি সরিয়ে নিয়েছে।
ভারতীয়দের উদ্দেশ্যে লোটাস প্রমি নামের একজন বাংলাদেশি ক্রিটেকপ্রেমী তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, ‘‘আপনারা ভারতীয়রা কি শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রেতাত্না হচ্ছেন নাকি! একজন শিক্ষিত মানুষ হয়ে এভাবে নিজের জাতিকে ছোট করবেন না। ইতিমধ্যে আমাদের কাছে যুদ্ধে হেরে মওকা মওকা (বাংলাদেশকে হেয় করার ভিডিওটি) সরিয়ে নিয়েছে ইউটিউব। ভারতকে আমরা সম্মান করি বিভিন্ন কারণে। ক্রিকেটীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও ভারতের কাছে আমাদের ঋণের শেষ নেই। আপনার সঙ্গে একমত যে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার ক্ষেত্রে বিসিসিআইএর প্রসংশনীয় ভূমিকা ছিল। আমরা তা চিরদিন কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করতে চাই।
উপকার করেছেন বা করছেন বলে কি আপনাদের মাঠে ছাড় দিতে হবে??? তাহলে তে বিষয়টা ক্রিকেট থাকলো্ না পাকিস্তানিদের মতো আপনারাও খেলার আগেই জুয়া খেলতে চাচ্ছেন। যাই হোক, আমরা তো ভারতের সঙ্গে জয়ের সুখস্মৃতিগুলো টাইগারদের উৎসাহ দিতে বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছি। কারণ আমরা পরাধীন নই। বাংলাদেশের সঙ্গে সমগ্র পৃথিবী মিলে বিশ্ব একাদশের খেলা হলেও আমি অবশ্যই একজন বাংলাদেশি হিসেবে আমার দেশকেই সমর্থণ করবো। বিষয়টা হচ্ছে মওকা মওকা আপনারা এর আগেও পাকিস্তান, দুবাই সহ বিভিন্ন দেশকে নিয়ে বানিয়েছেন তথন আমাদের কিছুই বলার ছিল না।
কিন্তু বাংলাদেশকে হেয় প্রতিপন্ন করে ভারতীয় কিছু উন্মাদের বুদ্ধিদীপ্ত যে ভিডিওটি বানানো হয়েছিল তা ছিল চরম অপমানজনক। একজন বাংলাদেশি হিসেবে খেলার মাঠের যুদ্ধে জয় পরাজয় মেনে নেবো। কিন্তু খেলার আগে নোংরামিও আমরা মেনে নেবো না। একজন ভারতীয় সমর্থকের পায়ে ফুল দিয়ে পূজা করার অর্থ আমাদের জাতিকে কতটা ছোট বা খাটো করে দেখেন? এখন আমিও যদি এমন একটা ভারতীয়কে আমার পায়ে ফুল দেয়ার ভিডিও আপলোড করতাম । তাহলেই আমরাও নোংরামিতে নামতাম।
কিন্তু উদারতা দেখিয়ে আপনাদের নোংরামিকে ক্ষমাকরে দিয়ে আমরা আপনাদের শুধু ২০০৭ এবং এশিয়া কাপের ভারত বধের ইতিহাস মনে করিয়ে দিয়েছি। এটা শুধুই ক্রিকেটীয় উত্তর। এর বেশি কিছু নয়। আর একটা কথা, নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় সব সময় বাংলাদেশকে বন্ধু হিসেবে পাশে লাগবে ভারতের। আমাদের অবজ্ঞা করলে আপানাদের সেভেন সিস্টার্স টিকিয়ে রাখা এত সহজ হবে না। এটা মেনে নিয়েই আপনাকে বাংলাদেশকে এবং বাংলাশের বিষয়ে গঠনমূলক সমালোচনা করতে হবে। আশা করি আপনি বুঝতে পারছেন। খেলার আগে আমরা হার মানবো না…জয় বাংলা. জয় বাংলার ক্রিকেটের জয়।’’ উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-ভারতের ক্রিকেট খেলাকে সামনে রেখে একদল ভারতীয় ইউটিউবে তিনটি ভিডিও আপলোড করে।
সেখানে বাংলাদেশ এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটাক্ষ করা হয়। বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা এর প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। এবং সেই চাপের মুখে ইউটিউব সবচে অধিক প্রচারিত ভিডিওটি সোমবার বাংলাদেশ সময় ভোর পোনে ১ টা সরিয়ে নেয়। সরিয়ে নেয়া লিংকটি হলো- https://www.youtube.com/watch?v=S-HsZ_Uu11s এই ভিডিওটির ভিউ সংখ্যা ছিল ২,৮৫,০০০ যা দ্রুত বাড়তে শুরু করেছিল।
এটাকে প্রতিহত করার জন্য বাংলাদেশের কিছু ছেলে ফেসবুকে একটি ইভেন্ট পেজ খোলে, এবং তার মাধ্যমে সবাইকে সংগঠিত করে ইউটিউবে ক্রমাগত রিপোর্ট করতে থাকে। এবং কিছুক্ষণ আগেই ওই ভিডিওটি সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় ইউটিউব। এই কাজটি করার পেছনের একজন মানুষ জাহিদ ইবনে জাহান (নিক যাযাবর পৃথিবী) কে জানান, "আমরাই পারি !!! আমরা পারবো !!! আমরা হেরে যেতে শিখিনি !!!!!!" এই বিষয়ে তার অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনুভূতি প্রকাশ করার মতো অবস্থা নেই। এখন বাকি দুটো ভিডিও নামানোর ব্যবস্থা করতে হবে।