কারাগারে থেকেই নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন।
ঢাকা সিটি করপোরেশন উত্তরে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। দলের একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এখন পর্যন্ত কোন ঘোষণা আসছে না। দু’একদিন পরে দলের নেতারা মান্নার সঙ্গে দেখা করে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন।
এ বিষয়ে নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইফতেখার আহমেদ বাবু বলেন, মান্না ভাইয়ের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছি। নেতাকর্মীরা মাঠে কাজ করতে প্রস্তুত। এখন মান্না ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয়া হবে। যদিও তিনি কারাগারে থাকায় কিছু সীমাবদ্ধতা থাকছে।
ডিসিসি নির্বাচনে মান্না অংশ নেবেন বলে নিশ্চিত করেছেন দলের অপর এক কেন্দ্রীয় নেতা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, আমরা মাহমুদুর রহমান মান্নার নির্বাচনের অংশ নেয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিচ্ছি না। দু’এক দিনের মধ্যে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। উনি নির্বাচন করবেন এটার সম্ভাবনাই বেশি। এতে আইনত কোন বাধা নেই। যেহেতু তার সাজা হয়নি। তাই উনি প্রার্থী হতে পারবেন।
নাগরিক ঐক্যের ওই নেতা আরও বলেন, মান্না ২০১২ সালে যখন প্রার্থী হয়েছিলেন তখন ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও সাড়া পেয়েছিলেন। ডিসিসি উত্তর অংশে তার জনপ্রিয়তা ব্যাপক। ওই এলাকায় বস্তিবাসীদের নিয়ে তিনি কাজ করেছেন। বিহারীদের সমস্যা নিয়েও কাজ করেছেন। সবকিছু নিয়ে তার অবস্থান ভাল। এর আগে ১১ই মার্চ জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল মাহমুদুর রহমান মান্নার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য নাগরিক ঐক্যের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। মান্নার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত ওই সমাবেশে সংগঠনের উপদেষ্টা এস এম আকরাম বলেন, মান্না জেলে থাকুক আর বাইরে থাকুক, তিনি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হবেন। এর আগে যখন সিটি করপোরেশন নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল, তখন তিনি মেয়র প্রার্থী হিসেবে জনসংযোগ করে ব্যাপক সাড়া পেয়েছিলেন।
গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ১৯শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকার দলীয় প্রার্থীকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মাহমুদুর রহমান মান্না। জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে নাগরিক ছাত্রঐক্য আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি বলেছিলেন, আপনারা যদি ভাবেন আবার বিরোধী দল ছাড়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ডিসিসি নির্বাচন করে ফেলবেন, সেটা হবে না। ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেবো না। আপনারা যাদের গলা টিপে ধরেছেন আমরা তাদের কাছে যাবো। জনগণই মাঠ দখল করে নেবে। গণতন্ত্র ও জনগণের স্বার্থে আমরা আছি। মানুষ আমাদের সঙ্গে থাকবে। ওই অনুষ্ঠানের পর থেকেই মান্নার ডিসিসি নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়।
এরপর একাধিক সংবাদ মাধ্যমে মান্না ডিসিসি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন মর্মে সংবাদ প্রকাশ হয়। এদিকে গতকাল দুপুরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মাহমুদুর রহমান মান্নার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন তার স্ত্রী মেহের নিগার ও মেয়ে নিলম। এ সময় তাদের সঙ্গে মান্নার এক ভাতিজা ছিলেন। প্রায় আধা ঘণ্টা তারা সেখানে অবস্থান করেন। এ সময় মান্নার সঙ্গে শুধুই পারিবারিক বিষয়ে কথা হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে কথা হয়নি বলে জানান তার স্ত্রী মেহের নিগার।
তিনি বলেন, মান্নার শারীরিক অবস্থা ভাল না। হাঁটাচলা করতে পারছেন না। তার হাড়ের সমস্যাও আছে। হাসপাতাল থেকে জবরদস্তি করে কারাগারে নেয়া হয়েছে। যে কারণে এমআরআই করা সম্ভব হয়নি।