স্থান পটুয়াখালীর বাউফল শহীদ মিনার। সকাল সাতটা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম সাদিকুর রহমানের পাশে তখন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ। রয়েছেন প্রশাসনের আরো লোকজন আর নেতাকর্মী।
স্বাধীনতাযুদ্ধের মহান শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত তারা। এক পর্যায়ে উঠতে থাকেন শহীদ বেদীতে। কিন্তু হঠাৎ করেই চিফ হুইপের পায়ে চোখ আটকে গেলো অনেকের। তিনি জুতা পায়েই উঠছেন শহীদ মিনারের বেদীতে। এসময় সেখানে উপস্থিত কয়েকজন তাকে বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিতে চাইলেন। কেউ কেউ অনুরোধও করলেন জুতা খুলে বেদীতে উঠতে। কিন্তু তিনি কোনো সাড়া দিলেন না।
বরং বলে বসলেন, ‘এটা বাউফল, এটা তো ঢাকা না। বাউফলে জুতো নিয়ে উঠলে কিছু হয় না।’ তার কথায় ‘অনুপ্রাণিত হয়ে’ দলীয় কয়েকজন নেতাও জুতা না খুলেই বেদীতে উঠলেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে ফিরে এলেন বেদী থেকে।
এ ঘটনার পর বাউফল উপজেলার বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় বইছে। ঘটনার সময়ে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌর সদরের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, শহীদদের প্রতি এমন অববননা মেনে নেয়া কষ্টকর। ক্ষমতার উচ্চ আসনে থেকে ও নিজেকে স্বাধীনতার স্বপক্ষের মানুষ পরিচয় দিয়ে বেদীতে কীভাবে জুতা নিয়ে ওঠেন তিনি?
বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদার বলেন, ‘ফুল দেয়ার সময় আমি ছিলাম। তবে হুইপ মহোদয় জুতা পায়ে স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়েছেন কি না তা আমার নজরে পড়েনি।’
জানতে চাইলে বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম সাদিকুর রহমান হেসে দিয়ে বলেন, ‘ওটা তো বেদী নয়। ওটাকে আমরা স্টেজ ধরি। সে কারণে হয়তো হুইপ মহোদয় জুতা পায়ে উঠেছেন।’ তাহলে আপনি কেন সেখানে খালি পায়ে উঠলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবার হেসে দিলেন।