ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ প্রবাসে বসবাস না করলে প্রবাসীদের মন যে দেশের জন্য কতটা আনচান করে তা জানা বা উপলব্ধী করাটা বেশ কঠিন।দেশে থাকতে যে তরুনটি দেশ প্রেম নিয়ে কখনও ভাবেনি ,সেই যখন জীবন জীবিকার প্রয়োজনে বিদেশে আসে তার মন পড়ে থাকে দুঃখিনী মায়ের দেশ,বাংলাদেশে।
তাই তো ছুটির দিনে সে ছুটে যায় কোন দেশী অনুষ্ঠানে কিংবা কোন রাজনৈতিক দলের(নিজ নিজ পছন্দ মতো)সভায়।এই কিছুক্ষন সময় তার মনে হয় সে বাংলাদেশে ফিরে গেলো।
বাংলাদেশের বৈদেশিক মূদ্রার সবচেয়ে বড় যোগানদার এই প্রবাসীদের দেশপ্রেম ও কর্তব্যবোধ কারও চেয়ে কম তো নয়ই বরং অনেকাংশে বেশী।নিজের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময়টুকু তারা উৎসর্গ করে থাকে পরিবার এবং দেশের জন্য।তাই প্রবাসীরা দেশের প্রতি প্রচন্ড ভাবাবেগ থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মকান্ডে নিজেদের যুক্ত করে নিয়ে দেশে অনুপস্থিত থাকার দুঃখ বোধ লাঘব করতে চান।
প্রবাসীরা বিভিন্ন দলের নেতাদের আমন্ত্রন জানিয়ে নিয়ে আসেন প্রবাসে এবং দলবেধে এসব নেতাদের বক্তব্য শুনতে যান গভীর শ্রদ্ধায়।এসব নেতাদের বিদেশ ভ্রমন এবং অবস্থানে খরচ প্রায়ই বহন করে থাকেন এইসব স্বল্প আয়ের মানুষগুলো,তাতে তাদের কোনই আপত্তি নেই।
কিন্তু রাজনৈতিক নেতারা যখন প্রবাসীদের নিয়ে কটাক্ষ ও বিদ্রুপ করে বক্তব্য দেন তখন তাদের দুঃখ এবং ক্ষোভের সীমা থাকে না।
সম্প্রতি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা নিউইয়র্ক এ বিক্রমপূর-মুন্সিগন্জ বাসীদের এ সভায় অনধিকার চর্চা করে ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখিন হন।তিনি বলেছিলেন,'প্রবাসীদের বিদেশে বসে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ করার কোন কারন তিনি খুজে পাননা'।
গত দশ মাস ধরে ক্যান্সার চিকিৎসার নামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্হানকারী খোকা বোধ হয় ভূলে গেছেন প্রবাসীদের অবদানের কথা।কারন তার প্রতিটি সংবাদ সম্বেলন এবং অনুষ্ঠানে প্রবাসীদের উপস্থিতির কারন তারা বিদেশের মাটিতে বিএনপি করেন বলেই দলের ভাইস চেয়ারম্যান খোকাকে এতো সন্মান দিয়ে যাচ্ছেন।
প্রবাসীদের মতে তারা প্রবাসে বসে কি করবে আর করবে না,তা এদেশে অতিথি জনাব খোকা বলার কে?আর তিনি তো শুধু বিএনপির কথা বলেননি,আওয়ামী লীগের কথাও বলেছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাদেক হোসেন খোকার ভূমিকা ২০১৩ এর শেষভাগ থেকেই ব্যপক প্রশ্নবিদ্ধ।বিএনপির ২৯শে ডিসেম্বার'১৩ এর কর্মসূচী 'মার্চ ফর ডেমোক্রেসী' এর ভেস্তে যাবার জন্য খোকার নিস্পৃহতা সবচেয়ে বড় কারন বলে বিএনপির নেতা-কর্মীগন মনে করেন।তার পর থেকে নিস্ক্রীয় খোকা আর স্বক্রীয় হননি এবং মে ২০১৪ এ চিকিৎসার কথা বলে আমেরিকা চলে আসেন।এখানে ক্যান্সার চিকিৎসা কতটুকু হচ্ছে তা জানা না গেলেও ,যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিটি অনুষ্ঠানে জনাব খোকার সরব উপস্থিতি দেখা গিয়েছে।
ক্যান্সার আক্রান্ত একজন মানুষ কিমোথেরাপি চলাকালে এভাবে প্রাকাশ্যে জনসমাবেশে ঘোরাফেরা করতে পারেন কিনা তা চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরাই সঠিক বলতে পারবেন।তবে সাধারন ভাবে ব্যাপারটা বড় দৃষ্টিকটু তো বটেই।
প্রবাসীদের সরাসরি অবমাননা করে বক্তব্য দেয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দলমত নির্বিশেষে প্রবাসীদের মাঝে ব্যপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
প্রবাসীদের পক্ষ থেকে আমরা অবিলম্বে জনাব খোকার এই বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা প্রার্থনা দাবী করছি।অন্যথায় প্রবাসীদের পক্ষ থেকে খোকাকে বিদেশে প্রবাসীদের সব অনু্ঠানে অবাঞ্চিত ঘোষনা করা হবে বলে প্রবাসী নেতৃবৃন্দ জানান।