বাংলাদেশ তথা ক্রিকেট বিশ্বে এখন সবচেয়ে আলোচিত নাম নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন। বিশ্বকাপে আইসিসির নিয়মনীতি অগ্রাহ্য করে ফাইনালে কাপ দেন শ্রীনিবাসন যা সভাপতি হিসেবে দেওয়ার কথা ছিল কামালের। এর মধ্যমে সংস্থার সংবিধান ভঙ্গ করেছিলেন শ্রীনিবাসন। তারপর থেকে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ তাকে অন্তর থেকে অভিশাপ দিয়ে আসছে। খোদ ভারতেও কঠোর সমালোচনার মুখে পড়ছেন তিনি।
অথচ সেই শ্রীনিবাসনের প্রশংসায় কিনা পঞ্চমুখ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন! শ্রীনিবাসনের গুণকীর্তনে মুখর পাপন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি এটাই। বাংলাদেশের ৪৭ হাজার বর্গমাইলে ভিলেন হয়ে থাকা শ্রীনিবাসন পাপনের চোখে-এক সহযোগিতা পরায়ন মানুষ! বাংলাদেশের দুঃসময়ের সাথী!
বৃহস্পতিবার ধানমন্ডিতে বেক্সিমকোর কার্যালয়ে বাংলাদেশকে শ্রীনিবাসনের সহযোগিতার ফিরিস্তি দিয়ে সাংবাদিকদের পাপন বলেছেন, “মুস্তফা কামালের শ্রীনিবাসনের সঙ্গে কিছু সমস্যা থাকতে পারে। কিন্তু যখনই প্রয়োজন হয়েছে শ্রীনিবাসন বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ২০১৪ সালে এশিয়া কাপ ও আইসিসি ওয়ার্ল্ড টি-২০ আয়োজন করা হয়েছে তখন সে আমাদের সহযোগিতা করেছে। যখন কিছু দেশ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অন্যান্য পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় জানিয়েছিল। তিনিই প্রথম বলেছিল, বাংলাদেশ ক্রিকেট খেলার জন্য নিরাপদ। তারপর সব দেশ এখানে এসেছিল এবং আমরা আমাদের সামর্থ্য দেখিয়েছি। ২০১২ সালেও এশিয়া কাপে পাকিস্তানের অংশগ্রহণ নিয়ে সংশয় ছিল। কিন্তু শ্রীনিবাসন দারুণ সহযোগিতা করেছেন।”
কামাল-শ্রীনিবাসন ইস্যুর কারণে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সাফল্যও উদযাপন করা হচ্ছে না বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন নাজমুল হাসান পাপন। তিনি বলেন, “আমাদের ক্রিকেটাররা অসাধারণ ক্রিকেট খেলেছে, আমাদের তা উদযাপন করা উচিত। কিন্তু আমরা একটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি যে, আমরা তাদের জন্য জাঁকজমক পূর্ণ সংবর্ধনা আয়োজন করতে পারছি না।”
কামাল-শ্রীনিবাসন ইস্যু ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে জানান পাপন। বিসিবি আইসিসির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্ত হবে না। তিনি আরও বলেন, আইসিসি চেয়ারম্যান শ্রীনিবাসন সম্পর্কে মুস্তফা কামালের মন্তব্য একান্তই আইসিসির অভ্যন্তরীণ বিষয়। আইসিসি সবসময় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে গেছে।
পাপন বলেন, “মুস্তফা কামালের মন্তব্য বিসিবির সঙ্গে বিসিসিআই ও আইসিসির সম্পর্কে প্রভাব ফেলার কোনো কারণ নেই। সংবাদপত্রের মাধ্যমে আমরা জেনেছি, মুস্তফা কামালের শ্রীনিবাসনের সঙ্গে কিছু সমস্যা রয়েছে। মুস্তফা কামাল বিসিবির প্রতিনিধি নন, আর শ্রীনিবাসনও ভারতের প্রতিনিধি নন। মুস্তফা কামাল মন্তব্য করেছেন, ব্যক্তির বিরুদ্ধে, যিনি আইসিসির চেয়ারম্যান- তাই এই ইস্যু আইসিসির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কোনো বোর্ডই এখানে যুক্ত নয়। আমি আশা করি বিষয়টি যখন মিটিংয়ে উঠবে তখন সম্ভাব্য সেরা উপায়ে সেটি আইসিসি সমাধান করবে।”