ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের রায় কার্যকরকে কেন্দ্র করে কারাগারের চারদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
সেই সঙ্গে সারাদেশের পুলিশকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে। বিকেল ৫টার মধ্যে কামারুজ্জামানের পরিবারের সদস্যদের কেন্দ্রীয় কারাগারে তার সাথে সাক্ষাতের জন্য ডাকা হয়েছে। এদিকে দুপুরের দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে পুলিশি পোশাকে এবং সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছে। ইতোমধ্যেই র্যাবের একটি দল কারা ফটকের পাশে অবস্থান নেয়।
আশেপাশের ভবনগুলোর ছাদেও পুলিশের সতর্ক অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে। তবে র্যাব সদস্যরা বলছেন, কামারুজ্জামানের রায় কার্যকরকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার অংশ হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে এসেছি। ফাঁসি হবে কিনা তা জানি না। অন্যদিকে পুলিশের কয়েকটি দল কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করেছেন। তবে কি কারণে তারা ভেতরে প্রবেশ করেছেন তা জানা যায়নি।
কারা পুলিশের এক সদস্য জানান, রায় নিয়ে পুলিশের কর্মকর্তারা কয়েক দফায় কারাগারে প্রবেশ করেছেন। তবে আজ রাতেই কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর হবে কিনা তা জানাতে পারেননি। এ প্রসঙ্গে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী জানান, রিভিউ রায়ের কপি কারাগারে পৌঁছালে তা কামারুজ্জামানকে পড়ে শোনানো হবে। তিনি কি বলেন তার ওপর নির্ভর করছে রায় কার্যকর। তবে এরই মধ্যে কামারুজ্জামানের আইনজীবীরা তার সঙ্গে দেখা করতে আবেদন করেছেন। কিন্তু দেখা কারার অনুমতি পায়নি তার আইনজীবীরা।
সোমবার বিকেল ৩টায় সুপ্রিম কোর্টে তার আইনজীবী অ্যাডেভোকেট শিশির মনির সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেন, কারাকর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আইনজীবীদের দেখা করার অনুমতি দেওয়া হবে না। তিনি আরো বলেন, আইনজীবীদের সাক্ষাৎ করতে না পারলে তিনি কিভাবে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন?
তিনি আরো বলেন, আজকে (সোমবার) আপিল বিভাগ থেকে যে রায় দেওয়া হয়েছে তা এখনো কারা কর্তৃপক্ষের নিকট পৌঁছায়নি। এ অবস্থায় রায় কার্যকর করার কোনো ভিত্তি নেই। আজকের (সোমবার) রায়ে কি বলা হয়েছে তা জানার অধিকার কামারুজ্জামানের রয়েছে। তবে কারা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সোমবার বিকেল ৫টার মধ্যে তার পরিবারের সদস্যদের ডাকা হয়েছে।
এদিকে কারাকর্তৃপক্ষের একটি সূত্র জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে হলে দোষ স্বীকার করতে হবে। তবে কামারুজ্জামান দোষ স্বীকার করে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না-এমনটাই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
তবে সূত্রটি বলছে, কারাকর্তৃপক্ষ তাদের সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পূর্ণ করার জন্যই পরিবারের সদস্যদের ডাকা হয়েছে। বলা চলে সরকার চাইলে আজ সোমবার রাতেই ফাঁসি কার্যকর করা হতে পারে। যা সম্পূর্ণ নির্ভর করতে সরকারের উপর।