দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ আসন্ন ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১০ এপ্রিল বৈধ প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। ২৮ এপ্রিল তিন সিটিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
ভোটগ্রহণের আগে আচরণবিধির ফাঁদে সিটি নির্বাচনী প্রচারণা। প্রচারণায় বাধা নেই বেগম খালেদা জিয়া সহ অন্যান্য বিএনপি তথ ২০ দলীয় জোটের নেতাগনের। কিন্তু কোনো ধরনের প্রচারনায় অংশ নিতে পারবেন না শেখ হাসিনাসহ সরকারের মন্ত্রীরা।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ তার দলের সব পর্যায়ের নেতারাই প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন। কিন্তু সিটি নির্বাচনের আচরণ বিধিমালার ফাঁদে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রিসভায় থাকা ১৪ দলের ডাকসাইটে থাকা সিনিয়র নেতারা।
আমাদের প্রতিনিধি নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছেন, নির্বাচন বিধিমালার দফা ৬ এর উপ-দফা ১৪ (ক) তে উল্লেখ রয়েছে, জাতীয় সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, চিপ হুইপ, হুইপ এবং সরকারের কোনো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপ-মন্ত্রী বা সমপদমর্যাদা সম্পন্ন সরকারি সুবিধাভোগী কোনো ব্যক্তি নির্বাচনী প্রচারণায় বা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারেন না।
যদিও ২০দলীয় জোটের অধিকাংশ সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকায় তারা গ্রেফতার আতংকে প্রাকাশ্যে আসতে পারছেন না।কিন্তু নির্বাচনী আচরনবিধি লংঘনের ঘটনা রিপোর্টে নির্বাচন কমিশনের চেয়ে গনমাধ্যম ব্যাপক ভাবে তৎপর রয়েছে এবং তাদের ভয়েই সরকারের মন্ত্রীরা সতর্ক রয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, তবে আচরণবিধিতে প্রধানমন্ত্রীর বিষয়টি স্পষ্ট করে উল্লেখ না থাকলেও আচরণবিধিতে মন্ত্রী বলতে প্রধানমন্ত্রীকেও বুঝানো হয়েছে। আচরণবিধি প্রণয়নের পর ক্ষমতায় থাকা কোনো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারেননি। আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও পারবেন না।
এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারক একটি গণমাধ্যমকে বলেছেন, আচরণবিধি অনুযায়ী সরকারি সুবিধাভোগী মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপ-মন্ত্রী বা সমপদমর্যাদার কোনো ব্যক্তি নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবেন না।
তবে বেগম খালেদা জিয়া সরকারের সুবিধাভোগী কোনো পদে আসীন নন। ফলে তিনি আচরণবিধি মেনে প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন। আচরণ বিধির কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, দলের সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিক্ষা মন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ, নৌ-মন্ত্রী শাজাহান খান, আইন মন্ত্রী আনিসুল হক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী এবং ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জাল হোসেন চৌধুরী মায়া, খাদ্য মন্ত্রী ও মহানগরের যুগ্ম সম্পাদক মোঃ কামরুল ইসলাম নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না।
নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ (প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত), সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদসহ দলের অন্যান্য মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, ওয়ার্কার্স পার্টির চেয়ারম্যান ও বেসরকারি বিমান মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু প্রমুখ।
তারা শুধু নিজের ভোট প্রদানের জন্য নিজ নিজ এলাকায় যেতে পারবেন। তবে সরকারি সুবিধাভোগী মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রীর মর্যাদা নেই- এমন ব্যক্তি এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া অন্যরা প্রার্থীর পক্ষে পথসভা ও ঘরোয়া সভায় অংশ নেয়ার সুযোগ পাবেন।