আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পর এবার জাতিসংঘ জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মাদ কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়েছে ।
গতকাল বুধবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের পক্ষে স্পোকসম্যান রাভিনা সামদানী এ আহ্বান জানান।
জেনেভা থেকে দেয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, জামায়াত নেতা মুহাম্মাদ কামারুজ্জামানের ফাঁসির দন্ড স্থগিত করতে আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। কামারুজ্জামান বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। তার বিচার প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়ম বিদ্যামান ছিল এবং ন্যায্য বিচার প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক মানদ- অনুযায়ী হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস দীর্ঘ দিন যাবত বিচারের স্বচ্ছতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছিল, তাই বাংলাদেশ সরকারের উচিত হবে না মৃত্যুদন্ডাদেশ কার্যকর করা। ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক ১৬টি রায় দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জনকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়, যার অধিকাংশই বিরোধী রাজনৈতিক দল-জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির নেতা। তারা সবাই ১৯৭১ সালে সংঘটিত মানবতা বিরোধী অপরাধ, গণহত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধে দন্ডিত হয়েছেন।
এর মধ্যে ২০১৩ সালে আবদুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদন্ডাদেশ কার্যকর করা হয়। বাংলাদেশ কর্তৃক অনুস্বাক্ষরিত ইন্টারন্যাশনাল কভোন্যান্ট অন সিভিল এন্ড পলিটিক্যাল রাইট্স এর উদ্বৃতি দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, মৃত্যুদন্ডাদেশ দেয়া বিচারের ক্ষেত্রে বিবেকী ন্যায্য বিচারের নিশ্চয়তা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। যদি অন্যায্য বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়, তা হবে মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা।
বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘ সব সময়ই মৃত্যুদন্ডের বিরোধী, এমনকি যেখানে কঠোরভাবে ন্যায্য বিচারের মানদন্ড অনুসরণ করা হয়েছে এবং অধিকাংশ গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধ সংঘটিত হয়েছে সে ক্ষেত্রেও। বিবৃতিতে অমানবিক মৃত্যুদন্ডাদেশ বিলোপকারী দেশের কাতারে শামিল হতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।