আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন যদি অবাধ ও সুষ্ঠু হয় তাহলে আগামী ৩ মাসের মধ্যেই সরকার জাতীয় নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভি.সি. অধ্যাপক ড.এমাজউদ্দীন আহমেদ।
এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘২৮ এপ্রিল যদি সিটি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয় ও জনগণ তাদের সুচিন্তিত মতামত প্রকাশ করতে পারে এবং সেই নির্বাচনে যদি বিএনপি বিজয় অর্জন করতে পারে তাহলে আগামী ৩ মাসের মধ্যে সরকার জাতীয় নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে।’
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে আমার দেশ পরিবার আয়োজিত ‘আমার দেশ বন্ধ ও মাহমুদুর রহমানের কারাবন্দিত্বের ২ বছর’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
এমাজউদ্দীন আহমেদ বলেন, যারা জোর করে ক্ষমতায় থাকে তার সব সময় দুর্বল থাকে। কারণ তাদের পায়ের নিচে মাটি থাকে না। আর পায়ের নিচে মাটি না থাকলে সে কখনো দাঁড়াতে পারে না, তারা ক্ষমতাকে পুঁজি করে ক্ষমতায় থাকতে চায় কিন্তু তাদের এই ব্যর্থ স্বপ্ন এক সময় বিলীন হয়ে যায়।”
তিনি বলেন, স্বৈরশাসন আর স্বাধীন গণমাধ্যম কখনো এক সাথে চলতে পারে না, তারা সব সময় গণমাধ্যমের বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করার চেষ্টা করে ।
আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সর্ম্পকে এমাজউদ্দীন বলেন, মাহমুদুর রহমান অত্যন্ত দেশপ্রেমিক, বাংলাদেশের মস্তবড় সম্পদ। উন্নত জীবনের জন্য যেটা প্রথম প্রয়োজন তা হলো সত্য প্রকাশ করা আর এসব গুণ তার মধ্যে আছে ।
বর্তমান সরকারের আমলে হামলা মামলা গুম নিত্য দিনের কাজে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহব্বায়ক রুহুল আমিন গাজী বলেন, ঘরে থাকলে গুম অথবা ক্রসফায়ার বাহিরে থাকলে নির্যাতন গ্রেপ্তার যে সরকারের কাজ সেই সরকারকে আন্দোলনের মাধ্যমে হটানো করা ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই।
ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, আজকে যারা সরকারের সাথে আঁতাত করে বিভিন্ন মিডিয়ার মালিক হয়েছে , তাদেরও মাহমুদুর রহমানের মুক্তির জন্য আন্দোলন করা উচিৎ অন্যথায় সরকার পরির্বতন হলে তাদেরও মাহমুদুর রহমানের মত পরিণতি ভোগ করতে হবে।
আন্দোলন অহিংস হবে নাকি সহিংস হবে তা চিন্তা করে দেখার জন্য এ সময় শফিক রেহমান প্রফেসর এমাজউদ্দীনের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় অহিংস আন্দোলনের পাশাপাশি সহিংস আন্দোলনও ছিল। কোথাও সহিংস বিজয় হয়েছে, কোথাও অহিংস বিজয় হয়েছে।’
শফিক রেহমান সাগর-রুনি হত্যা, মাহমুদুর রহমান, ও সালাহ উদ্দিনের ঘটনায় পৃথক কমিটি করে আন্দোলন করারও আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘এতে সরকারের প্রতি চাপ বাড়বে। তাদের জীবন অশান্ত হয়ে পড়বে। শেষ পর্যন্ত দাবি মানতে বাধ্য হবে।’
কলামিস্ট ফরহাদ মজহার বলেন, ‘সমাজের চিন্তার ভিন্নতা আছে বলেই মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হয়।’
কবি আব্দুল হাই শিকদারের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুকোমল বড়ূয়া ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক এম এ আজিজ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান,সাবেক সভাপতি আব্দুর শহীদ প্রমুখ।