গতসপ্তাহে বি,এন,পির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়্যারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান তাঁর সুচিন্তিত বক্তব্যের মাধ্যমে আসন্ন মেয়র নির্বাচনে চট্টগ্রাম বাসীর করণীয় সম্পর্কে সময়োচিত দিক নির্দেশনা দিয়েছেন।
হাতি নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতাকারী আজম নাছিরের ক্যাডার বাহিনী কতৃক ২০ দল সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী মনজুর আলমের জনসভায় হামলা ও ভাংচুরের প্রতি অংগুলি নির্দেশ করেই নোমান সাহেব এই বক্তব্য দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, “গভীর জঙ্গলে হাতিকে মানায়, কিন্তু হাতি যদি লোকালয়ে আসে তখনই ঘটে বিপত্তি। লোকালয়ে আসা হাতি জনগণের ক্ষেত-খামার ধ্বংস করে, ঘরবাড়ী ভাংচুর করে ও জনগণের জান-মালের ব্যপক ক্ষয়-ক্ষতি করে। পাঠকবৃন্দ, নোমান সাহেব যে হাতির কথা বলেছেন তা হয়ত শুধুই বন্য হাতি। কিন্তু উক্ত হাতি যদি বন্য হাতি হওয়ার সাথে সাথে সন্ত্রাসের ট্রেনিং প্রাপ্ত বা পাগলা হাতি হয় তাহলে জনগণের প্রান ঔষ্ঠাগত হবে, ব্যাপক জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হবে। এরূপ অবস্থায় বনরক্ষীরা উক্ত হাতিকে পাকড়াও করার চেষ্টা করে, ব্যর্থ হলে উক্ত পাগলা হাতিকে আহত-নিহত করার মাধ্যমে জনগণের জান-মালের হেফাজত করে। কিন্তু হাতি যদি আওয়ামী হাতি হয় এবং বনরক্ষীরাও যদি আওয়ামী বনরক্ষী হয় তাহলে এ হাতির অনিষ্ঠ থেকে রক্ষা পাওয়া এক প্রকার অসম্ভব। এরূপ অবস্থায় জনগন যদি লোকালয়ে আসন গেঁড়ে বসার আগেই ঐক্যবদ্ধভাবে হাতিকে খেদায় ফেলে দিতে পারে তবে হাতি নির্ঘাত কুপোকাত হবে।
নোমান সাহেব বর্ণিত বন্য হাতিদের তান্ডব এদেশবাসী ১৯৯৬ সন থেকে প্রত্যক্ষ করেছে। লক্ষীপুরের তাহের, নারায়ণগঞ্জের শামীম উসমান, টাঙ্গাইলের আলতাফ হোসেন গোলন্দাজ, ফেনীর জয়নাল হাজারী ও নিজাম হাজারী এবং চট্টগ্রামের আলোচ্য বন্য হাতিটি মূলত একই পীরের মুরীদ ও আশীর্বাদ প্রাপ্ত। তদপুরি চট্টগ্রামের আলোচ্য হাতিটি ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী লীগের কেদ্রীয় অর্থসম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাবুর চোরাচালান রুটের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল।
ফটিকছড়ির জঙ্গল থেকে উঠে আসা এই হাতিটি উত্তরাধিকার সূত্রে বিখ্যাত সোনা চোরাচালানী “সোনা রফিকের” অবর্তমানে খিলাফত প্রাপ্ত। আন্ডার ওয়ার্ল্ডের সকল অপকর্ম যথা অস্ত্রব্যবসা, মাদকব্যবসা, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, খুন-রাহাজানী, গুম, অপহরন, আটক বানিজ্য, ভূমিদখল, ইয়াবা ব্যবসা, ভায়াগ্রা ও ফেন্সিডিল ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করে এই হাতিটি চট্টগ্রামের মাফিয়া ডন হিসেবে সমধিক পরিচিত। সম্ভবতঃ আন্ডার ওয়ার্ল্ডের এই ডনের প্রকাশ্য রাজনীতিতে এসে ঐতিহ্যবাহী ও শান্তিপ্রিয় চট্টগ্রামবাসীর মাথার উপরে বসার প্রচেষ্টার ব্যাপারে সতর্ক করতেই নোমান সাহেব উপরোক্ত মন্তব্য করেছেন।
ঢাকাবাসীরা তাকে ইয়াবা নাছির হিসাবেই চিনে থাকে। টেকনাফের আওয়ামী এম,পি ইয়াবা বদির ন্যায় নাছিরও ঢাকার সাংবাদিকদের নিকট ইয়াবা নাছির হিসেবে সমধিক প্রসিদ্ধ। চট্টগ্রামে নূরুল ইসলাম বি,এস,সি ও এম,এ ছালামের ন্যায় ক্লিন ইমেজ আওয়ামী লীগ নেতা থাকা সত্ত্বেও একজন মাফিয়া ডনকে কিভাবে নমিনেশন দেয়া হল তা সমগ্র জাতির বিস্ময়!
অথচ ঢাকার প্রার্থী সাইদ খোকন ও আনিসুল হক কেউই কিন্তু আন্ডার ওয়ার্ল্ডের ডন নয়। চট্টগ্রামবাসী যদি গতবারের ন্যায় এবারও সাহসী ভূমিকা রাখতে পারে তবে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে সক্ষম হবে।
অন্যথায় চট্টগ্রামের অবস্থা ‘হাজারীর শাসনে ফেনী’ ও শামীম ওসমানের শাসনে নারায়ণগঞ্জের ন্যায় অবস্থা হবে। জনগণের জান-মাল-ইজ্জত লুন্ঠিত হবে কিন্তু কোথাও কোন আশ্রয় মিলবে না। এই মাফিয়া ডন আ জ ম নাছির স্বীয় ওয়েব সাইটে তার মিশন সম্পর্কে লিখেছেন- তার মিশন হল- ‘To expanding the Empire’ অর্থাৎ তিনি তার বর্তমান আন্ডার ওয়ার্ল্ড সাম্রাজ্য নিয়ে সন্তুষ্ট নন। মেয়র হলে তিনি তাঁর শয়তানী সাম্রাজ্যকে আরো বিস্তৃত করবেন।
এর মানে এই হতে পারে যে, তিনি এতদিন তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে যা করতেন- মেয়র হলে তা আরও সম্প্রসারিত করবেন, অস্ত্র, মাদক ও সোনা চোরাচালান ব্যবসা আরও বিস্তৃত করবেন, খুন, রাহাজানি ও চাঁদাবাজি চট্টগ্রামবাসীর প্রতি ঘরে ঘরে শুরু করবেন ফেনীর জয়নাল হাজারীর ন্যায়।
মেয়র ইলেকশনের ঘোষণা আসার পর এদেশের একশ্রেণীর পত্রিকা তাদের ওয়েব সাইট থেকে আজম নাসিরের অপকীর্তি সংক্রান্ত অনেক তথ্য মুছে দিয়েছে । এতদ সত্ত্বেও তার সম্পর্কে এখনও যা রয়ে গেছে তাতেই জনগন এই ব্যক্তি সম্পর্কে ধারণা করতে সক্ষম হবেন।
আগামী কয়েকদিন আমরা এই বন্য হাতিটির অতীত এবং বর্তমানের বিভিন্ন কর্মকান্ড চট্রগ্রাম তথা সমগ্র দেশের জনগনের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।আমাদের পত্রিকায় চোখ রাখুন।