নারী নির্যাতনের প্রতিবাদকারী তরুণীদের উপর পুলিশের হামলার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। অনতিবিলম্বে বিচারবিভাগীয় তদন্তপূর্বক দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। সোমবার এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ দাবি জানান।
পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও ছয় দফা দাবিতে পূর্বঘোষিত ‘ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের’ কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে রোববার লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও জলকামান থেকে পানি নিক্ষেপ করে পুলিশ। এতে ছাত্র ইউনিয়নের অনেক নেতাকর্মী আহত হন। নারী কর্মীদের ওপরই চড়াও হয় পুলিশ। চুলের মুটি ধরে তাদেরকে টানতে থাকে কয়েকজন পুলিশ সদস্য। লাথিও মারতে দেখা যায় কয়েকজনকে। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরো বলেন, বাংলা বর্ষবরণের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্পিত দায়িত্ব পালনে চরমভাবে ব্যর্থ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা-বাহিনী নারী নিপীড়ন প্রতিকারের স্থলে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছিল। অন্যদিকে গতকাল এই ঘটনায় দোষীদের বিচারের দাবিতে গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের নির্মমভাবে দমনে অমানবিক ভূমিকা পালন করে এই বাহিনী তার ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন করেছে।
বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, একটি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ ও ন্যায্য দাবি আদায়ের কর্মসূচিতে পুলিশের একাংশের পৈশাচিক তান্ডব এবং জেন্ডার অসংবেদনশীল আচরণ করেছে। পুলিশ এখন নিজেদেরকে সকল আইনের উর্ধ্বে হিসেবে ভাবতে শুরু করেছে। যা আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অশনিসংকেত হিসেবে প্রতিভাত হচ্ছে।
পুলিশের সকল কর্মকান্ডের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, নৈতিকতা এবং সর্বোপরি হৃত জন-আস্থা পুনরুদ্ধারে ইফতেখারুজ্জামান অনতিবিলম্বে বিচার-বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, সনাতন পদ্ধতিতে তথাকথিত ‘ক্লোজড’ করা বা সাময়িক বরখাস্তের মত লোক-দেখানো পদক্ষেপ যথেষ্ঠ নয়। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীতে শৃঙ্খলা, পেশাদারিত্ব, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা ও জেন্ডার সংবেদনশীলতা প্রতিষ্ঠা ব্যাতিত গণতান্ত্রিক সুশাসন প্রতিষ্ঠা অসম্ভব।