ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃরাজশাহীতে গত ১ এপ্রিল বিমান দূর্ঘটনায় গুরুতর আহত প্রশিক্ষক এস শাহেদ কামাল মারা গেছেন গতকাল।ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন।মৃত্যুকালে তিনি তার স্ত্রী এবং দুই কন্যা রেখে গেছেন।উল্লেখ্য ঐ বিমান দূর্ঘটনায় প্রশিক্ষনার্থী তামান্না অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন।অত্যন্ত অমায়িক এবং সদালাপী হিসাবে মরহুম শাহেদ কামাল সবার কাছে পরিচিত ছিলেন।
দুর্ঘটনার পর থেকে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে গতকাল মঙ্গলবার রাতে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে তিনি মারা যান। শাহেদ কামালের সহকর্মী ইউএস-বাংলা এয়ার লাইনসের ফার্স্ট¡অফিসার রেজোয়ান আহাম্মেদ খান জানান, গতকাল রাত ১টা ৪০ মিনিটে তিনি মারা গেছেন।
তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরে নেওয়ার পর তিন সপ্তাহে তাঁর শারীরীক অবস্থার বেশ উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু তাঁর হাত দুটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। হাত থেকে ব্যাকটেরিয়া শরীরে সংক্রমিত হলে যকৃতে পচন ধরে যায়। গত চার দিনে তাঁর অবস্থার অবনতি ঘটে।
রোজেয়ান খান আরও জানান, আজ বুধবার রাত ১০টায় সিঙ্গাপুর এয়ার লাইনসের একটি বিমানে শাহেদ কামালের মরদেহ দেশে আনার কথা রয়েছে। কাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর ঢাকায় সেনাকুঞ্জের বিপরীতে অবস্থিত আর্মি কেন্দ্রীয় মসজিদে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
লে. কর্নেল (অব.) এস শাহেদ কামালের (৫০) বাড়ি নড়াইলে। রাজশাহীতে হজরত শাহমখদুম বিমান বন্দরে দুর্ঘটনার সময় তিনি প্রশিক্ষণার্থী বৈমানিক তামান্না রহমানের পাশে বসা ছিলেন। তামান্না ঘটনাস্থলেই মারা যান। সাঈদ কামালের শরীরের ৫০ শতাংশ পুড়ে যায়। গুরুতর অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে রাজশাহীতে সম্মিলিত সামরিক হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরে তাঁকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। শাহেদ কামাল খুলনা জিলা স্কুল থেকে ১৯৮০ সালে এসএসসি ও নটরডেম কলেজ থেকে ১৯৮২ সালে এইচএসসি পাস করেন। ১৯৮৪ সালের ২৬ জুন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চতুর্দশ বিএমএ লং কোর্সে যোগদান করেন। ১৯৮৬ সালে কমিশন প্রাপ্ত হন।
১৯৯০ সালে আর্মি অ্যাভিয়েশনের তৃতীয় ব্যাচে যোগদান করেন তিনি। ১৯৯৩ সালে তিনি কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স সম্পন্ন করেন। তিনি আর্মি অ্যাভিয়েশনের দ্বিতীয় ব্যাচে ফ্লাইট ইনস্ট্রাক্টর কোর্স সম্পন্ন করেন। প্রশিক্ষক হিসেবে তাঁর সাত ধরনের এয়ারক্রাফটে তিন হাজার ঘণ্টা উড্ডয়নের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
তিনি আর্মি এবং সিভিল অ্যাভিয়েশনের ২০০ বৈমানিককে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ ফ্লাইং অ্যাকাডেমিতে অনারারি ফ্লাইট ইনস্ট্রাক্টর হিসেবে সেবা দিয়ে আসছিলেন। গত মার্চে তিনি রাজশাহীতে আসেন।