ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশে তার জীবনাশংখা থাকায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে পারেন। তবে বিষয়টি নিয়ে এখনই চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেননি এই বিএনপি নেতা। তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে গিয়ে দেখা করার পরই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসতে পারেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম শিলং টাইমস।
তবে পুলিশ জানিয়েছে, সালাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশের’ কারণে মামলা হয়েছে। সুতরাং তাঁর ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ আইন অনুযায়ীই নেওয়া হবে। গত ১১মে শিলংয়ে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশের’ কারণে পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর থেকেই সালাহ উদ্দিন আহমেদ সেখানকার সিভিল হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
এরই মধ্যে সেখানে বিএনপি নেতার সাথে দলটির সহ-দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি ও তার এক আত্মীয় দেখা করেছেন। এদিকে শুক্রবার সকালে ঢাকা ও কলকাতা থেকে বেশকিছু গণমাধ্যমকর্মী শিলংয়ে এসে পৌঁছেছেন। তারা সালাহ উদ্দিন আহমেদের সাথে দেখা করতে চাইলেও পুলিশ তাদের অনুমতি দিচ্ছে না। কলকাতা থেকে আসা সালাহ উদ্দিনের আত্মীয় আইয়ুব আলী বৃহস্পতিবার বিকেলে হাসপাতালে তার সাথে দেখা করেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, সালাহ উদ্দিন জানিয়েছেন, কিছু লোক তাকে ২মাস আটকে রাখে। পরে চোখ বাঁধা অবস্থায় অনেকগুলো গাড়ি পরিবর্তন করে তাঁকে শিলং গলফ কোর্স এলাকায় ফেলে রেখে যায়। পরে তিনি নিজেই পুলিশের কাছে যান।
হাসপাতালে কারাবন্দীদের জন্য নির্ধারিত সেলে চিকিৎসাধীন সালাহ উদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের পুলিশ কর্মকর্তারা। তবে খাসি জেলার পুলিশ সুপার খারখ্র্যাং জানান, তারা অপহরণতত্ত্বের বিষয়টিতে নিশ্চিত নন। যেহেতু তিনি হৃদরোগী, তাই তাকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। মেঘালয় রাজ্য পুলিশের যে দুই কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন, তারাও এখন পর্যন্ত গণমাধ্যমে যা এসেছে, তার বাইরে নতুন কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
বৃহস্পতিবার রাতেই হাসপাতালে সালাহ উদ্দিনের সাথে দেখা করেন বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি। পরে তিনি শিলং টাইমসকে জানান, পারিবারিক বন্ধু হিসেবেই তিনি সালাহ উদ্দিনের সাথে দেখা করতে এসেছেন এবং তার স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নিয়েছেন, রাজনৈতিক নেতা হিসেবে নয়। এ সময় তিনি আরো জানান, সালাহ উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, তিনি ভালো নেই। সিঙ্গাপুরের এক চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি হৃদরোগ এবং কিডনির জটিলতার জন্য ওষুধ সেবন করতেন। এ জন্য তার অন্য কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা দরকার। এ সময় জনি আরো জানান, স্ত্রী হাসিনা আহমেদ স্বামীকে দেখতে আসার পরই মামলার আইনগত প্রক্রিয়া এবং রাজনৈতিক আশ্রয়ের বিষয়টি ভাবা হবে।
এদিকে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, সালাহ উদ্দিন আহমেদ দেশে সরকারি বাহিনীর হাতে নির্যাতনের কথা বলে ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে পারেন। কিন্তু তিনি কোনো ধরনের কাগজপত্র ছাড়াই মেঘালয়ে প্রবেশ করেছেন। আইন অনুযায়ীই পরবর্তী সময়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
গত ১০ মার্চ থেকে ‘নিখোঁজ ছিলেন’ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ। তাঁকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে তাঁর পরিবার ও দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে। তবে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আটক করা হয়নি বলে দাবি করে আসছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।