ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আব্দুল্লাহিল আমান আযমীঃ চট্টগ্রামে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়া আর সিংগাপুরে চিকিৎসাধীন শাহেদের ইন্তেকালের খবর একসাথেই দেখতে পেলাম সকালে। সারাদিনই মনটা খারাপ ছিল – এখনো ভাল নেই। খুব মনে পড়ছে শাহেদকে। গত মাসে রাজশাহীতে বিধ্বস্ত হওয়া প্রশিক্ষণ বিমানের গুরুতর আহত প্রশিক্ষক লেঃ কর্ণেল (অবঃ) শাহেদ কামাল গত ৬ সপ্তাহ মৃত্যুর সাথে লড়ে গত রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিংগাপুরে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না ………. রাজেউন)।
শাহেদ আমার অনেক প্রিয় একটা মানুষ। ওর সাথে আমার পরিচয় এবং একসাথে চাকুরী খুব বেশি দিনের ছিলনা। কিন্তু অল্প সময়েই ও অনেক আপন হয়ে গিয়েছিল। এতে অবশ্য ওর কৃতিত্বই বেশী। নিরহংকারী এই মানুষটার সাথে কেউ মিশলেই বুঝতে পারতো ওর সহজ সরল মনটাকে। শাহেদ একদিনের পরিচয়েই মানুষকে এত আপন করে নিতে পারতো যে, মনে হতো এটা আসলেই ওর একটা বিশেষ "আর্ট"। মানুষের জন্য দরদী মন না থাকলে এটা কখনোই সম্ভব হতো না।
২০০৮ এর জানুয়ারীতে আমি দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলাস্থ বীর উত্তম শহীদ মাহবুব সেনানিবাসে (খোলাহাটি ক্যান্টনমেন্ট নামে পরিচিত) ১৬ পদাতিক ব্রিগেড এর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি। শাহেদ ঐ সেনানিবাসেই আর্মার্ড (ট্যাংক) রেজিমেন্টের অধিনায়ক। আমি পদাতিক কমান্ডার হিসেবে শাহেদ আমার অধীনে ছিল না। কিন্তু, তখন যেহেতু ১/১১ এর সরকার ছিল, তাই প্রত্যেক জেলায়ই সেনাবাহিনী মোতায়েন ছিল। শাহেদ ওর ইউনিটসহ অপারেশনের জন্য আমার অধীনস্থ ছিল। সে, আমার অধীনস্থ দুই জেলার একটি, ঠাকুরগাঁও এর দায়িত্বপ্রাপ্ত অধিনায়ক ছিল। সেই সুবাদেই ওর সাথে পরিচয়, কাজ এবং কাজের মাঝে ঘনিষ্ঠতা। এর আগে আমি ওকে কোনদিন দেখিইনি, পরিচয় থাকা তো দূরের কথা।
জানুয়ারি ২০০৮ এর প্রথম সপ্তাহে আমি দায়িত্ব গ্রহণের ২/১ দিনের মধ্যেই ওর সাথে আমার প্রথম সাক্ষাৎ। আমার অফিসে এসে নিজেই পরিচিত হলো এবং ঠাকুরগাও ভিজিটের জন্য অনুরোধ করলো। বল্লাম,‘দাওয়াত দেয়া লাগবে কেন? ওটা তো আমার দায়িত্বেরই অন্তর্ভূক্ত। এমনিতেই আসবো’। তাড়াতাড়ি যাবার জন্য অনূরোধ করলো। প্রথম পরিচয়ে তার সেই অনুরোধেই সুরেই আমার মনে হয়েছে মানুষ হিসেবে খুব ভাল না হলে এমন আপন করে বলা সম্ভব নয়। সারা জীবন তো মানুষের ‘রাখাইল’ই ছিলাম। ওকে চিনতে ভুল করেছিলাম বলে মনে হয় না।
যা হোক, সপ্তাহখানেক পর গেলাম ঠাকুরগাঁও। এক রাত দুই দিন থাকলাম। সার্কিট হাউজেই ও থাকতো। আমার জন্যও ওখানেই ভিআইপি রুমে থাকার ব্যবস্থা করেছিল। প্রথম দিন সারাদিন অপারেশন ব্রিফ, ডিসি’র অফিসে জেলা পর্যায়ের সরকারি সকল অফিসারদের সাথে মিটিং ও মত বিনিময়,শহরের গুরুত্মপূর্ণ স্থাপনা পরিদর্শন ইত্যাদিতেই কাটলো। দুপুরে অবশ্য এক ফাঁকে সার্কিট হাউজে এসে নামাজ ও লাঞ্চ সেরে যাই। রাতে ওর ইউনিট অফিসারদের সাথে মত বিনিময় ও ডিনার সেরে ওদের সাথে বেশ কিছুটা সময় ইনফরমাল গল্পসল্প হলো। একজন পদাতিক অফিসার হয়ে আর্মার্ড ইউনিট অধীনস্থ পাওয়া তো এক বিরল সৌভাগ্য! ‘কুইন অব দ্য ব্যাট্ল এর অফিসার হয়ে কিং অব দ্য ব্যট্ল এর অফিসারদের কমান্ড করা’র সুযোগ তো আর সহসা জোটে না! ওয়য়ান্ডারফুল একটা অফিসারদের টিম ছিল শাহেদের। এরপর অনেক রাত পর্যন্ত (যদ্দুর মনে পড়ে, রাত তিনটা পর্যন্ত) শাহেদ আর আমি আমার রুমে আড্ডা দিলাম। ঐ কয়েক ঘন্টাতেই মনে হলো শাহেদ এর সাথে আমার পরিচয় আর ঘনিষ্ঠতা অ-ন-ক দিনের। আগেই বলেছি, ওর আন্তরিকতাপূর্ণ কথার ভংগীর কারণে ও অল্প সময়েই মানুষকে আপন করে নিতে পারে, মানুষের আপন হয়ে যেতে পারে। আমার সাথেও একই অবস্থা। আমার ৯ কোর্স জুনিয়র,জীবনে কোনদিন দেখিনি,এক ক্যান্টনমেন্টে কখনো চাকুরীও করিনি,এমন কি ওর নামও কোনদিন শুনিনি (সে অবশ্য আমার নাম শুনেছিল), অথচ একদিনের ইন্টার-একশনেই মনে হলো আমরা একই ইউনিটের পিঠাপিঠি দুই অফিসার,এতটা ঘনিষ্ঠতা হয়ে গেল আমাদের!
পরদিন সকালে নাস্তা সেরে ঐ জেলার সকল সেনা ক্যাম্প এবং বেশ কয়েকটি উপজেলা সদর ঘুরলাম ওকে নিয়ে। সবখানেই দেখলাম সবার সাথেই ওর হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক। আমার সারা জীবনের ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ ডিউটি’র অভিজ্ঞতার আলোকে দেখেছি, বেসামরিক অংগনে কাজের ক্ষেত্রে বেসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে ভাল সম্পর্ক অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং খুবই ফলপ্রসু। তাই, সবার সাথে ওর ভাল সম্পর্ক দেখে খুব ভাল লাগলো। দেখতে পেলাম,সব এলাকায়ই কাজের পরিবেশ এবং গতি অত্যন্ত প্রশংসনীয়। বলা বাহুল্য,এর কৃ্তিত্বের সিংহভাগ শাহেদেরই।
দ্বিতীয় দিন রাত নাগাদ সেনানিবাসে ফিরে এলাম। একদিনেই এত আপন হয়ে গিয়েছিল শাহেদ যে ওকে ছেড়ে আসতে খারাপই লাগছিল।
যা হোক,আমি প্রতি মাসে এভাবে নিয়মিত ঠাকুরগাঁও যেতে থাকলাম। আর ওর সাথে কাজের মাঝে ঘনিস্ঠতা বাড়তে থাকলো। কোন কাজে ওর কখনো আপত্তি ছিলনা – কাজের কথা বলা মাত্রই ‘রাইট স্যার,হয়ে যাবে স্যার’ ছিল ওর চট জলদি উত্তর।
ঠাকুরগাঁও গেলে মাঝে মাঝে সন্ধ্যার পর শাহেদকে নিয়ে ডিসি,এসপি সহ আরো সরকারি কর্মকর্তাদের সংগে নিয়ে ব্যাডমিন্টন বা টেনিস খেলতাম। ঘুম থেকে উঠার পর হতে ঘুমাতে যাবার আগ পর্যন্ত দু’জনে একসাথেই থাকতাম। খুব ভাল সময় কাটতো ওর সাথে। প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর এক সদাহাস্য,সদালাপী মানুষ ছিল সে। ওর সংগ,সান্নিধ্য সকল মানুষেরই আনন্দে কাটতো বলে ধারণা করি। যেই ক’টা মাস শাহেদ সেখানে ছিল,সে তার সাধ্যমত মানুষের উপকার করার চেষ্টা করেছে। জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরীতে ঐ অঞ্চলে সবার আগে শাহেদের কাজ শেষ হয়। মনে আছে, আমি দিনাজপুর বিডিআর এর তৎকালীন সেক্টর কমান্ডার,(২৫শে ফেব্রুয়ারির) শহীদ কর্ণেল রেজাকে প্রথম কার্ড হস্তান্তর করে আমরা ঐ জেলার কার্ড হস্তান্তর কার্যক্রম আনুস্ঠানিকভাবে শুরু করেছিলাম।
মানবদরদী শাহেদ ডিউটি ছাড়াও ওর দায়িত্বকালীন সময়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। ওর পরিশ্রম ও উদ্দ্যেগ এবং বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় বহু লোকের অনেক উপকার হয়েছে। গৃহহীণ বিধবাকে বাড়ী করে দেয়া,অনেক পংগুকে হুইল চেয়ার দেয়া ইত্যাদি ওর জনহিতকর কাজের কিছু উদাহরণ, যা সে তার নিজ দায়িত্বের বাইরে গিয়ে কেবলমাত্র ‘মানুষের উপকার’ করার লক্ষ্যে করেছে। আল্লাহ নিশ্চয়ই ওকে এর বদলে উত্তম পুরস্কার দিবেন ইনশাআল্লাহ।
সে তার অধীনস্থদের ব্যাপারে খুব খেয়াল রাখতো, তাদের সুবিধা-অসুবিধার ব্যাপারে সচেতন থাকতো। মোতায়েনকালীন সময় উপরোস্থ সদরের আদেশ অনুযায়ী মোতায়েন এলাকায়,অর্থাৎ ঠাকুরগাঁও এ,অধিনায়ক বা উপ-অধিনায়ক এই দু’জনের যে কোন একজনকে অবস্থান করতে হতো। সে তার অধীনস্থদের ব্যাপারে এতটাই সচেতন ছিল যে, নিজে সেনানিবাসে এসে বেশী থাকার পরিবর্তে ওর ইউনিটের স্বপরিবারে বসবাসকারী অফিসারদেরকে সেনানিবাসে বেশী থাকার সুযোগ করে দিয়ে সে নিজে ঠাকুরগাঁও এ বেশী থাকতো। ত্যাগ,উদারতা ও মহানুভবতার এ এক উজ্জ্বল উদাহরণ।
সেনানিবাসে আমি বা শাহেদ কেউই তখন স্বপরিবারে থাকতাম না। তাই,মাঝে মাঝেই ওকে ডেকে নিতাম,বা ও ফোন করে আসার অনুমতি নিয়ে চলে আসতো। দুজনে কত কিছু নিয়ে যে আলাপচারিতা করতাম তার কোন ইয়ত্তা ছিলনা। পারিবারিকভাবে সম্পর্ক তৈরী করা সম্ভব না হলেও শাহেদ আমার সাথে পারিবারিক ও ব্যক্তিগত বিষয়াদি নিয়ে আলাপ করতো,পরামর্শ করতো। যা হোক,বেশ কয়েক মাস একত্রে চাকুরীর পর চাকুরীর স্বাভাবিক নিয়মে ২০০৮ এর শেষার্ধে শাহেদ (তৎকালীন) বিডিআর এ বদলী হয়ে যায়। মন খারাপ করেই বিদায় দিলাম ওকে।
ও চলে যাওয়ার কয়েকদিন পরই পিলখানা থেকে ফোন করে খুশীর সাথে জানালো, ‘স্যার,আবার ঠাকুরগাঁও এ আসছি,রাইফেল ব্যাটালিয়নের সিও (অধিনায়ক) হয়ে’। আমিও অত্যন্ত খুশী হলাম ওকে কাছাকাছি পাবো বলে। এছাড়া,অপারেশনের জন্য দিনাজপুর বিডিআর সেক্টরও আমার অধীনস্থ ছিল। আর ঠাকুরগাঁও এর রাইফেল ব্যাটালিয়ন সেই সেক্টরেরই অধীনস্থ। একজন তেজোদ্দীপ্ত,প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর অফিসার যে কোন কমান্ডার এর জন্য এক বড় সম্পদ। তাই,শাহেদ আবার আমার সাথেই,পরোক্ষভাবে আমার অধীনে কাজ করবে ভেবেই খুশী হলাম বেশী। এখানে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি আমার অধীণে চাকুরী করা দিনাজপুর বিডিআর সেক্টর এর দুই কমান্ডারকে,যেই দুই কর্ণেলই ২৫শে ফেব্রুয়ারি ২০০৯ এর পিলখানার নারকীয় হত্যাযজ্ঞে শহীদ হয়েছিলেন – শহীদ কর্ণেল রেজা এবং শহীদ কর্ণেল ইলাহী। আল্লাহ এই দুজন শহীদের সাথে শাহেদকেও শহীদের মর্যাদা দিন,সেই দোয়া করি (হাদীসে আছে,আগুনে পুড়ে মৃত্যু হলে শহীদের মর্যাদা পাওয়া যায়।)
২৫শে ফেব্রুয়রির বিডিআর এর সেই নারকীয় ঘটনার পর সারা দেশের বিডিআর ব্যাটালিয়নগুলোও বিদ্রোহ করে। শাহেদ এর ব্যাটালিয়নও এর ব্যতিক্রম ছিলনা। তখন আমার দায়িত্বপূর্ণ দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও জেলার ৪টি রাইফেল ব্যটালিয়ন এবং সেক্টর সদরের মোট ১০ জন অফিসার ও ৫টি পরিবারকে উদ্ধার করার এক বিরাট দায়িত্ব ছিল আমার উপর। শাহেদও তাদের মধ্যে একজন ছিল। আল্লাহর রহমতে বহু চেস্টায় এবং বেসামরিক নানান ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় আমি সকলকেই উদ্ধার করতে পেরেছিলাম। শাহেদ এর ব্যটালিয়নের সুবেদার মেজর এবং ঠাকুরগাঁও এর ডিসি এ ব্যাপারে অনেক সহায়তা করেছেন। তাদের সহায়তা ছাড়া এই দূরুহ কাজ সম্ভব হতো না। শাহেদসহ সকলকে উদ্ধার অভিযান নিয়ে হয়তো আরো একটা লেখা লিখা সম্ভব,তবে আমি সেই দিকে যাবো না। শুধু এতটুকু বলবো যে,শাহেদ রাতের অন্ধকারে লুংগী আর গেঞ্জি পড়ে ক্রলিং করে ওর ব্যটালিয়ন এলাকার সীমানা তারকাটা পার হয়। ডিসির সহায়তায় ওর জন্য বেসামরিক এক ব্যক্তি মটর সাইকেল নিয়ে প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। সেই অবস্থায়ই শাহেদ চাদর দিয়ে মুখ ঢেকে (শীতের দিন হওয়ায় এটা করা গেছে) ঐ মটর সাইকেলের পিছনে চড়ে আমার কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছিল আলহামদুলিল্লাহ। আমার জীবনের যত কঠিন কাজ করেছি তার মধ্যে এই অফিসারদের এবং পরিবারদের যে উদ্ধার করতে পেরেছিলাম,তাতে এমন তৃপ্তি আর শান্তি পেয়েছিলাম যে তা কোনদিন ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। আজ মনে হচ্ছে,মূহুর্মূহু গোলাগুলির মধ্যে যখন তখন মৃত্যুর ঝুঁকি থেকে কি অসম্ভব রকমের রিস্ক নিয়ে শাহেদ পালিয়ে বেঁচে গেলেও আজ সে করুণভাবে মৃত্যুর কাছে আত্মসমর্পন না করে পারেনি।
আমি চাকুরী থেকে চলে আসি ২০০৯ এর জুন মাসে। এর মধ্যে শাহেদও চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণ করে ফ্লাইং ইন্সট্রাক্টর হিসেবে নতুন জীবন শুরু করে। গত ৬ বছরে ওর সাথে বেশী যোগাযোগ হয়নি। কয়েকবার মাত্র ফোনে কথা হয়েছে এবং ফেইসবুকে চ্যাটিং হয়েছে। বলেছিল একদিন আসবে। কৈ আর এলো শাহেদ? ওর আর আসা হলো না, হবেও না কোনদিন। এখন তো ও সব কিছুর উর্ধেই চলে গেছে।
সেই চেনা হাসিমাখা মুখটাকে আর কোনদিন দেখবো না ভাবতেই কস্ট লাগে। কিন্তু মেনে নেয়া ছাড়া কি আমাদের কোন উপায় আছে? এটার নামই তো জীবন। কেউ চলে যায়, কেউ থেকে যায়, কেউ আবার নতুন আসে। আমাদেরও একদিন চলে যেতে হবে।
ওর পরিবার – ভাবী ও মেয়েদের কথা ভেবে আমি অত্যন্ত বেদনা বোধ করছি। তাদের সান্তনা দেয়ার কোন ভাষা আমার নেই। দোয়া করছি – আল্লাহ শাহেদকে জান্নাতবাসী করুন, ওর পরিবারের সদস্যদের এ শোক সহ্য করার শক্তি দিন, ওর ইন্তেকালে ওর পরিবারের যে ক্ষতি হলো তা পুষিয়ে দিন এবং তাদেরকে সবর দিন।
শাহেদের দূর্ঘটনা এবং করুণ মৃত্যুতে যতটা না কস্ট পেয়েছি, তার চেয়ে অ-নে-ক বেশী কস্ট পাচ্ছি ওর জানাযায় যেতে না পারার জন্য, ওকে শেষবারের মত দেখতে না পারার জন্য এবং ওর শেষ বিদায়ে উপস্থিত হতে না পারার জন্য – আমি যে পিএনজি (PNG)!! তবে, নিজেকে সান্তনা দিচ্ছি এই বলে যে, আগুনে পুড়ে তো ওর চেহারা কিছুটা হলেও নিশ্চয়ই বিকৃ্ত হয়েছে সেটা দেখে আর কস্ট পাওয়া লাগবে না। স্মৃতিতে শাহেদের সুন্দর হাসির চেহারাটাই ভেসে থাকুক, সারাটা জীবন।
সবশেষে, আল্লাহর কাছে বিনীতভাবে এটাও দোয়া করি যেন, যদি তিনি দয়া করে আমাকে এবং শাহেদকে জান্নাতবাসী করেন, তাহলে যেন আমি আমার পরম প্রিয় শাহেদকে আমার কাছে পাই – সেই আগের মতই, বন্ধুর মত, ভাইয়ের মত।