ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশে ধর্ম ও বাকস্বাধীনতার প্রতি সহিংস অসহনশীলতার ভয়ংকর প্রবণতারই অংশ। গতকাল মঙ্গলবার নিজম্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই মন্তব্য করেছে নিউ ইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
বাংলাদেশ সরকারের উদ্দেশে তারা বলেছে, এই নৃশংস হামলার ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন। তারা জনগণের কাছে এই বার্তাটি পরিষ্কার করার দাবি জানায় যে ধর্ম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হামলা হলে তা সহ্য করা হবে না।
গতকাল সকালে সিলেট নগরের সুবিদবাজারে নুরানী আবাসিক এলাকার চৌরাস্তার মোড়ে নিজ বাসার সামনে ব্লগার, লেখক ও ব্যাংকার অনন্ত বিজয়কে (৩২) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। মুক্তমনা ও সামহোয়্যার ইন ব্লগে নিয়মিত লেখালেখি করতেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকেও সক্রিয় ছিলেন। সিলেটের গণজাগরণ মঞ্চের সক্রিয় কর্মী হিসেবেও কাজ করেছেন বিজয় দাশ। দেশে এ নিয়ে চলতি বছরেই তিনজন ব্লগারকে কুপিয়ে হত্যা করা হলো।
গত ফেব্রুয়ারিতে মুক্তমনা ব্লগের প্রধান সম্পাদক ও যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী লেখক অভিজিৎ রায়কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এর এক মাস না যেতে তেজগাঁওয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ব্লগার ও অনলাইন লেখক ওয়াশিকুর রহমানকে।
এর আগে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে আরেক ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
পরের মাসে ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনের ওপর একই কায়দায় হামলা হয়। গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান তিনি।
এইচআরডব্লিউর বিবৃতিতে সংস্থাটির এশিয়াবিষয়ক পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলেন, ‘এ ধরনের বিদ্বেষী হামলা কেবল হামলার শিকার ব্যক্তিদেরই থামিয়ে দেয় না, এগুলো বাংলাদেশে ধর্মীয় বিষয়ে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশকারী সবার কাছে ভীতিকর বার্তাও দেয়।’ এই বর্বর হামলার জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে বাংলাদেশ সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মত দিয়েছেন ব্রাড অ্যাডামস। একই সঙ্গে সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে ধর্ম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হামলা যে সহ্য না করা হবে না, তা স্পষ্ট করা উচিত।