দেশে গ্রাহকপ্রতি মোবাইল ফোন সংযোগের সর্বোচ্চ সংখ্যা বেঁধে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। ফলে একজন গ্রাহক নির্দিষ্ট সংখ্যার বেশি সেলফোন সংযোগ কিনতে পারবেন না। প্রাথমিকভাবে একজন গ্রাহকের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচটি সিম ব্যবহারের সুযোগ দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিটিআরসি সূত্র বলছে, প্রাথমিকভাবে গ্রাহকপ্রতি সর্বোচ্চ পাঁচটি সিম ব্যবহারের সুযোগ রেখে একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
সেলফোনের মাধ্যমে অপরাধমূলক কার্যক্রম বন্ধের পাশাপাশি বিদ্যমান নম্বরের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। খবর দৈনিক বণিক বার্তার। মূলত সক্রিয় সংযোগ বিবেচনায় নিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করে বিটিআরসি। তবে এটি অপারেটরদের মোট গ্রাহকের সংখ্যা নয়। কারণ সেলফোন ব্যবহারকারী অনেক গ্রাহকই একাধিক সংযোগ ব্যবহার করে থাকেন।
সেলফোন সংযোগ প্রবৃদ্ধির যে তথ্য দেয়া হচ্ছে, তাতে এসব সংযোগের হিসাবও অন্তর্ভুক্ত। একজন গ্রাহকের জন্য সংযোগ কেনার ক্ষেত্রে দেশে কোনো ধরনের বিধিনিষেধ নেই। ফলে নতুন যে সংযোগ বিক্রি হচ্ছে, তা অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিদ্যমান গ্রাহকরাই কিনছেন। মূলত সেবার মানে অসন্তোষ থেকে কিংবা একাধিক ডিভাইস ব্যবহারের সুযোগ পেতেই এসব সংযোগ কিনছেন তারা।
সেলফোন অপারেটরদের আন্তর্জাতিক সংগঠন জিএসএমের হিসাবে বাংলাদেশে সেলফোনের সংযোগ সংখ্যা ১২ কোটির বেশি হলেও প্রকৃত গ্রাহক সংখ্যা (ইউনিক সাবস্ক্রাইবার) প্রায় সাত কোটি। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সেলফোন সংযোগ ব্যবহার করে অপরাধমূলক নানা কার্যক্রম সংঘটিত হচ্ছে। এটা প্রতিরোধের উদ্যোগও নেয়া হচ্ছে।
নিবন্ধন ছাড়া সেলফোন সংযোগ বিক্রি বন্ধে ২০১২ সালে উদ্যোগ নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এর পরও ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে অনেকেই একাধিক সংযোগ ব্যবহার করছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গ্রাহকপ্রতি সর্বোচ্চ সেলফোন সংযোগের সংখ্যা নির্দিষ্ট রয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের ডিপার্টমেন্ট অব টেলিকম এ সংখ্যা নির্দিষ্ট করেছে সর্বোচ্চ নয়টিতে।
বিটিআরসির সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, মার্চ শেষে দেশের ছয় সেলফোন অপারেটরের সংযোগ সংখ্যা ১২ কোটি ৩৭ লাখ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের সংযোগ ৫ কোটি ২০ লাখ, বাংলালিংক ৩ কোটি ১৯ লাখ ২৪ হাজার, রবি ২ কোটি ৬২ লাখ ৮৯ হাজার, এয়ারটেল ৮১ লাখ ৮৫ হাজার, টেলিটক ৪০ লাখ ৪১ হাজার ও সিটিসেলের ১২ লাখ ৪৬ হাজার।