‘অন্তত’ সুন্দরবন ইস্যুতে জাতীয় ঐক্যমত গড়ে তোলার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন বাঁচাতে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে সরকারকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে দলটি। বৃহস্পতিবার বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান দলটির মুখপাত্র আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন।
বিএনপি বাংলাদেশের ১০০ ভাগ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না বলে মন্তব্য করেন আসাদুজ্জামান রিপন। তিনি বলেন, ‘বিএনপি ১০০ শতাংশ ভোট পায় না, এমনকি ৮০ শতাংশও ভোট পায়না। তবে এটা সত্য যে জনগনের ভোটেই বিএনপি সরকার গঠন করে।
রিপন বলেন, আমরা (বিএনপি) দেশে নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রর বিরোধী নই। আমরা চাই দেশে আরও বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হোক। কিন্তু সরকার সকল মহলের বিরোধীতার মূখেও রামপালে কয়লাভিত্তিক একটি বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করতে সম্প্রতি দুইটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে। এ চুক্তিতে আমরা মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের মাত্র ১৩ শতাংশ পাব। আর যাদের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে, সেই কোম্পানি পাবে ৮৭ শতাংশ। এটা কোনোভাবেই আমাদের দেশের স্বার্থের অনুকূল নয়।
তিনি বলেন, যেখানে বিদ্যুৎ প্রকল্পটি করা হচ্ছে সেই রামপাল থেকে সুন্দরবনের দূরত্ব মাত্র ৮ কিলোমিটার। দেশী ও বিদেশী পরিবেশবাদীরা ইতোমধ্যেই বলে আসছেন, রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হলে আমাদের অংহকার ও গর্বের অংশ সুন্দরবন চিরতরে ধ্বংস হয়ে যাবে। সুন্দরবন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের অংশ। কিন্তু বিদ্যুৎ প্রকল্পটি চালু হলে তা ওয়ার্ল্ড লস্ট হেরিটেজের অংশ হয়ে যাবে। এটা আমরা কোনোভাবেই চাই না।
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে সরকারের হাতে বিকল্প রয়েছে। দেশের অন্য যেকোনো স্থানে এ প্রকল্প হতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টার নিজ জেলাতেও এটা হতে পারে। আমরা কোনো বিরোধিতা করব না। কিন্তু সরকারকে মনে রাখতে হবে, বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে বিকল্প থাকলেও আমাদের বিকল্প কোনো সুন্দরবন নেই। তাই সুন্দরবনকে বাঁচাতে আমরা সরকারকে রামপাল থেকে সরে আসার অনুরোধ ও আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, সিপিবি-বাসদ ও আমরা (বিএনপি) শুধু নই, আমরা বিশ্বাস করি দেশের একটি বৃহৎ অংশ যারা আওয়ামী লীগের নৌকায় ভোট দেন, তাদের মধ্যেও অনেক বিবেকবান মানুষ রয়েছেন; যারা রামপালে বিদ্যুৎ প্রকল্প হোক তা মন থেকে চান না। হয়ত দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে তারা তা ডিসক্লোজ করতে পারেন না।
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন আরও বলেন, জনগণের কল্যাণের জন্য সরকার। জনগণের গলা কাটার জন্য সরকার নয়। আমরা বিশ্বাস করি, বিশ্বাস করতে চাই; সরকার যদি জনগণের কল্যাণে বিশ্বাস করে, তাহলে রামপাল থেকে ওই বিদ্যুৎ প্রকল্পটি তারা সরিয়ে আনবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক কর্নেল (অব.) মো. শাহজাহান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক এমপি হেলেন জেরিন খান, মাসুদ অরুন, শাম্মী আক্তার প্রমুখ নেতারা।