ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ একজন সৎ এবং নিষ্ঠাবান পুলিশ অফিসার হিসেবে পরিচিত মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমেদ।অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের সমাজকল্যান মন্ত্রী মহসীন আলীর রোষানলে পড়ে বিপর্যস্ত।অপরাধ মহসীন আলীর সুপারিশ কৃত দলীয় সন্ত্রাসী ক্যাডারদের পুলিশে চাকরী দিতে রাজি না হওয়া।ন্যায়ের পক্ষে থাকায় এই এসপি তোফায়েল আহমেদ কে তিনি দেখে নেবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন বার কয়েক।
এছাড়াও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে কোন আওয়ামী লীগ কর্মী পুলিশের কাছে ধরা পড়লে এস পি তোফায়েল আওয়ামী নেতাদের তদবীরে এদের সহজে ছেড়ে না দিয়ে মহসীন আলীর চক্ষুশূলে পরিনত হন।
শেষ পর্যন্ত এই পরিশ্রমী ও কৃতি কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদের পুলিশী রেকর্ড কলুষিত করতে মিথ্যাচার ও ভিত্তিহীন অভিযোগের আশ্রয় নিলেন মহসীন আলী।সমাজকল্যান মন্ত্রী হবার পর থেকেই এই মহসীন আলীর বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকান্ড এবং অশালীন ভাষা ব্যবহারে সিলেট অঞ্চলের প্রশাসন,পুলিশ ,গনমাধ্যম কর্মী সহ সকল মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
ইতিমধ্যে এই অঞ্চলের সাংবাদিকগন তার অনুষ্ঠান কোন কাভার করা বর্জন করেছেন।কিছু দিন পূর্বে তিনি প্রাকাশ্যে মৌলভী বাজার জেলা প্রশাসনের এডিসি মহোদয়কে শারিরীকভাবে লাঞ্চিত করলে উপস্থিত সকলে প্রতিবাদ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন,মহসীন আলীর এই অভিযোগ সম্পূর্ন ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্য প্রনোদিত।বর্তমান সময়ে এভাবে টাকার বিনিময়ে শতশত বিএনপি-জামাত কর্মীদের পুলিশে ঢোকানো অসম্ভব একটি ঘটনা।এসপি তোফায়েল আহমেদ মহসীন আলীর তদবিরকৃত লোকজন না নিয়ে প্রকৃত মেধাসম্পন্ন প্রার্থীদের সচ্ছতার সাথে নিয়োগ দিয়েছেন।
তিনি আশংখা প্রকাশ করেন,মন্ত্রীর এহেন মিথ্যা অভিযোগে এসব ভালো ও যোগ্য পুলিশ সদস্যদের বিএনপি-জামাত চিন্হিত করে চাকুরীচ্যুৎ করে ঐ স্থানে তার নিজের লোক ঢোকানোর পরিকল্পনা করছেন মন্ত্রী মহসীন আলী।
নীচে অনলাইন দৈনিক তাজাখবরে মন্ত্রী মহসীন আলীর অভিযোগ সম্বলিত খবরটি দেয়া হলোঃ
ঘুষ নিয়ে বিএনপি জামায়াত শিবির কর্মীদের পুলিশে ঢুকিয়েছেন মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার (এসপি) তোফায়েল আহমেদ, এমন অভিযোগ করেছেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী।
মন্ত্রী বলেছেন, অন্তত ১০০ জনের কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা করে ঘুষ নিয়ে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির লোকজনকে তিনি পুলিশে ঢুকিয়েছেন। শুক্রবার দুপুরের দিকে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তাদের দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা যায় না। জেলার পুলিশ সুপারসহ ‘দুর্নীতিবাজদের’ তালিকা ও প্রমাণ আমার কাছে আছে।
অভিযোগ উঠেছে, বুধবার অনুষ্ঠিত মৌলভীবাজার জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে জেলা পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, তিন থানার ওসি, র্যাব ও আনসার-ভিডিপির কর্মকর্তাদেরও ‘পিঠের চামড়া’ তুলে নেওয়ার হুমকিসহ কঠোরভাবে ধমক দিয়েছেন মন্ত্রী।
সভায় উপস্থিত কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা থানার ওসিদের দাঁড় করিয়ে মন্ত্রী বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন। জিজ্ঞাসায় সঠিক জবাব না পেয়ে মন্ত্রী তাদের অশ্লীল ভাষায় গালিও দেন। শেরপুর এলাকায় একটা অপরাধের ঘটনায় যথাযথ দায়িত্ব পালন না করায় সভায় উপস্থিত এক র্যাব কর্মকর্তার প্রতি উত্তেজিত হন মন্ত্রী।
বিভিন্ন অভিযোগের জবাবে সমাজকল্যাণমন্ত্রী জানান, কাউকে আমি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করিনি। দুর্নীতিবাজদের শাসন করা দরকার দেশের স্বার্থে।
আমি আগামী রোববারই জাতীয় সংসদে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি ও এ জেলার পুলিশ কর্মকর্তাসহ অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত কর্মকর্তাদের এই চিত্র তুলে ধরব। এদিকে জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমাজকল্যাণমন্ত্রী অশোভন আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ করে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমেদ ঊর্ধ্বতন তিন পুলিশ কর্মকর্তার কাছে বুধবার রাতেই ফ্যাক্স বার্তা পাঠিয়েছেন।
ওই বার্তায় তিনি উল্লেখ করেন, বুধবারের ওই সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় মন্ত্রী জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সম্পর্কে অশোভনীয় বক্তব্য প্রদান করলে উপস্থিত কর্মকর্তারা অস্বস্তি বোধ করেন। স্পেশাল ব্রাঞ্চের অ্যাডিশনাল আইজি, সিলেট রেঞ্জের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজির (গোপনীয়) কাছে পাঠানো ওই বার্তায় অবশ্য এর বেশি লেখা ছিল না।
আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় ভৎর্সনা করার কথা স্বীকার করে সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের শাসন করেছেন তিনি। বীর মুক্তিযোদ্ধা বলে সম্বোধন না করায় মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে আমি তিরস্কার করেছি।
ইচ্ছা করেই মুক্তিযুদ্ধকে ‘খাটো’ করার চেষ্টা করা হয়। যারা এদেশের জন্য যুদ্ধ করেছে তাদের অসম্মান করে রাজাকারদের গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে এটা এখানে, এদেশে আর সম্ভব হবে না কোনোভাবেই।
পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমেদের নাম উচ্চারণ করে সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেন, তার তো বিদায়ের সময় হয়ে গেছে। তিনি সেদিন বিদায়ী ভাষণ দেয়া শুরু করেছেন। মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। পুলিশে এই শ্রেণির ব্যক্তি যদি দুর্নীতিবাজ হয় তাহলে দেশের অগ্রগতি তো বাধাগ্রস্ত হবে।
সম্প্রতি পুলিশে নিয়োগের সময় অন্তত ১০০ জনের কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা করে নিয়েছেন। ঘুষ নিয়ে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির লোকজনকে পুলিশে ঢুকিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা সভায় পুলিশ সুপারকে শাসন করেছি। সভায় উপস্থিত কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা থানার ওসিদের দাঁড় করিয়ে তাদের মন্ত্রী সংশ্লিষ্ট থানার আইনশৃঙ্খলা এবং ‘দুর্নীতিতে’ জড়িত থাকার কারণ জানতে চান।
ওই তিন থানার ওসিকে দাঁড় করানোর ব্যাপারে সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেন, কুলাউড়ার ওসিকে ১০ লাখ টাকা না দিলে কথা বলে না। তার বিরুদ্ধে ৩০০ জনের দরখাস্ত পেয়েছি। জুড়ী থানার ওসি দলীয় লোকদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিচ্ছে। আবার নিরপরাধ লোকদের ফাঁসিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। মোটা টাকার বিনিময়ে ওসি দিনকে ‘রাত’ বানাচ্ছে। পছন্দ না হলে তার খেয়াল খুশি মতো ডাকাতি মামলার আসামি বানাচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, আমি এলাকার তৃণমূলের মানুষের খবর রাখি। তাদের দুঃখ-কষ্ট জানি। আমার এলাকায় দুর্নীতিবাজদের জায়গা নেই। এসব চলবে না। দুর্নীতি যারা করবে তাদের রক্ষা নেই। পুলিশ আমার বিরুদ্ধে কোনো নালিশ করেও কিছু করতে পারবে না। আমি সত্য ও ন্যায়ের পথে আছি।
আমি ‘উপরে’ বলেছি, এসপি তোফায়েলকে শুধু বদলি করে মৌলভীবাজার থেকে নিয়ে গেলেই হবে না তাকে উচিৎ শিক্ষা দিতে হবে ।