ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিশ্বকাপের ২য় কোয়ার্টার ফাইনালে ১৯ মার্চ অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের অন্যায় হারের প্রতিশোধ নিল মাশরাফি বাহিনী। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার একমাত্র টেস্ট ম্যাচটি নিষ্প্রাণ ড্রয়ের পর আজ থেকে শুরু হলো ওয়ানডে সিরিজ।
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ভারতকে ৭৯ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এ জয়ের মাধ্যমে বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিল টাইগাররা। আর মাশরাফিবাহিনীর অবিস্মরণীয় এ জয়ের নায়ক নবাগত পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি একাই ৫ উইকেট তুলে নেন।
৪৯.৪ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৩০৭ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। ৩০৮ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২২৮ রানে থেমে যায় ভারত। নিজের দ্বিতীয় স্পেলে পরপর দুই ওভারে তিন উইকেট তুলে ভারতের জয়ের আশা ধূলিস্মাৎ করে দেন মোস্তাফিজুর রহমান। ৩৬তম ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে রায়না (৩০) ও অশ্বিনকে (০) ফেরান তিনি। নিজের পরবর্তী ওভারেই ফের আঘাত হানেন মোস্তাফিজুর। জাদেজাকে ৩২ রানে ফিরিয়ে তিনি ওয়ানডে অভিষেকেই নিজের পঞ্চম উইকেট শিকার করেন। ভারতের নবম উইকেট তুলে নেন অধিনায়ক। মুহিত শর্মাকে ১১ রানে ফেরান তিনি। ভারতের শেষ উইকেট তুলে নেন সাকিব আল হাসান। উমেশ যাদবকে ২ রানে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি।
ভারতের শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদ। তার শর্ট লেন্থ এর বলে আপার কাট করতে গিয়ে মুশফিকের তালুবন্দি হন ধাওয়ান (৩০)। একইভাবে বিরাট কোহলিকেও নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন তাসকিন। দলীয় ১০৫ রানে মুস্তাফিজের বলে আউট হয়ে যান রোহিত শর্মা (৬৩)। ১১৫ রানের মাথায় মুস্তাফিজের বলে নাসিরের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান আজিঙ্কা রাহানে (৯)। ১২৫ রানের মাথায় ধোনিকে (৫) দারুণ এক ঘূর্ণিতে মুশফিকের তালুবন্দি করান সাকিব। ভারতের বিপক্ষে ৩০৮ রানই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় রান।
বাংলাদেশের হয়ে ব্যাট হাতে অবদান রাখেন তামিম ইকবাল (৬০), সৌম্য সরকার (৫৪), সাকিব আল হাসান (৫২), সাব্বির রহমান রুম্মন (৪১) ও শেষ দিকে মাশরাফি (১৮ বলে ২১ রান।) বল হাতে ভারতের সেরা বোলার রবীচন্দ্রন অশ্বিন। তিনি ৩টি উইকেট নিয়েছেন। এ ছাড়া দুটি করে উইকেট নেন ভুবনেশ্বর কুমার ও উমেশ যাদব। তামিমের সঙ্গে ১০২ রানের জুটি করে ৫৪ রান করে রান আউটে কাটা পড়েছেন সৌম্য সরকার। বৃষ্টির পর খেলতে নেমে অশ্বিনের বলে রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তামিম ইকবাল। আউট হওয়ার আগে ৬০ রান করেন তিনি। দলীয় ১২৯ রানে অশ্বিনের বলে এলবিডব্লিউর শিকার হন লিটন দাস (৬)। দলীয় ১৪৬ রানে অশ্বিনের বলে উঠিয়ে মারতে গিয়ে রোহিত শর্মার তালুবন্দি হন মুশফিকুর রহিম (১৪)।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী হন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। মাত্র ৪০ বলে দলীয় ফিফটি পূরণ করেন দুজন, যা ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় দ্রুততম। এর আগে ২০১১ সালে ৩০ বলে দলীয় ফিফটি করেছিল বাংলাদেশ। ১৩.১ ওভারে দলীয় শতরান পূর্ণ করেন সৌম্য ও তামিম। কিন্তু হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পরই ভুল বোঝাবুঝির শিকার হয়ে রান আউট হন ঠাণ্ডা মাথার ব্যাটসম্যান সৌম্য। সাকিব আল হাসানকে নিয়ে ৮৩ রানের কার্যকর জুটি গড়েন সাব্বির রহমান। কিন্তু দলীয় ২২৯ রানে ব্যক্তিগত ৪৩ রানে জাদেজার বলে বোল্ড হয়ে যান সাব্বির। এরপর নাসির হোসেনকে নিয়ে ৫২ রানের জুটি গড়েন সাকিব। কিন্তু দলীয় ২৬৭ রানে যাদবের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকা জাজেদার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান সাকিব (৫২)। দলীয় ২৮২ রানে আউট হন নাসির (৩৪) ও ২৮৬ রানে ফিরে যান রুবেল হোসেন (৪)। এরপর ২৯৮ রানে আউট হন তাসকিন আহমেদ। ৩০৭ রানে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন মাশরাফি।