ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ নাফ নদী থেকে অপহরণের ছয় দিন পর বিজিবির নায়েক আবদুর রাজ্জাককে মুক্তি দিতে শর্ত জুড়ে দিয়েছে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)। শর্ত হলো সমুদ্রপথে মালয়েশিয়াগামী উদ্ধার হওয়া ৫৫৫ জনকে বাংলাদেশে ফেরত আনলে তবেই রাজ্জাককে ফেরত দেওয়া হবে।
আজ সোমবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের বিজিবির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)’র ২ নম্বর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. তিন কো কো এ আশ্বাস দেন।
বিকেল চারটার দিকে কো কোকে ফোন দেন ৪২ বিজিবি টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আবু জার আল জাহিদ। কো কো এ সময় রাজ্জাককে ফেরত দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন। তবে বৈঠক মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান। কখন, কোথায় বৈঠক হবে জানতে চাইলে জাহিদকে কো কো বলেন, রাজ্জাককে ফেরত নিতে হলে বঙ্গোপসাগর থেকে উদ্ধার হওয়া ৫৫৫ জনকে ফেরত নিতে হবে। তাদের দাবি এই ৫৫৫জন বাংলাদেশি।
এর জবাবে জাহিদ বলেন, রাজ্জাক আর অভিবাসীদের বিষয়তো এক নয়। অভিবাসীদের তালিকা বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে কি না জানতে চাইলে কো কো বলেন পাঠানো হয়েছে।
এর জবাবে বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ তালিকা হাতে পেলে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলে তাদের ফেরত আনা হবে। এরপর আগে রাজ্জাককে ফেরত পাঠাতে বললে আগামীকাল এ বিষয়ে কথা হবে বলে কথা শেষ করেন কো কো।
বিজিবি সূত্র জানায়, গত বুধবার ভোরে বিজিবির ছয় সদস্যের একটি দল নায়েক আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে নাফ নদীতে টহল দিচ্ছিল। তারা বাংলাদেশের জলসীমায় মাদক চোরাচালান সন্দেহে দুটি নৌকায় তল্লাশি করছিল। এ সময় মিয়ানমারের রইগ্যাদং ক্যাম্পের বিজিপির সদস্যরা একটি ট্রলারে করে বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করেন। একপর্যায়ে বিজিপির সদস্যদের বহনকারী ট্রলারটি বিজিবির টহল নৌযানের কাছে এসে থামে। বিজিপির ট্রলারটিকে বাংলাদেশের জলসীমা ছেড়ে যেতে বলা হলে তারা নায়েক রাজ্জাককে জোর করে ট্রলারে তুলে নেয়। বিজিবির অন্য সদস্যরা এতে বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময় হয়। এতে সিপাহি বিপ্লব কুমার গুলিবিদ্ধ হন।
পরে বিজিপির ট্রলারটি রাজ্জাককে নিয়ে মিয়ানমারের দিকে চলে যায়। এরপর বিজিপির ফেসবুকে রাজ্জাকের তিনটি ছবি আপলোড করা হয়েছে। তার একটিতে দেখা গেছে, রাজ্জাকের নাক দিয়ে রক্ত ঝরছে। আরেকটিতে হাতকড়া পরিয়ে তাঁকে আসামির মতো দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে।