দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ অবশেষে অপহৃত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নায়েক রাজ্জাককে নয়দিন পর অস্ত্র ও গুলিসহ ফেরত দিয়েছে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বিজিপি।
মংডুতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বিজিপির পতাকা বৈঠক শেষে তাকে ফেরত দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক চলে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। রাজ্জাককে ফেরত দেয়াসহ চোরাচালান বন্ধ ও সীমান্তে শান্তি স্থাপন নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়।
মিয়ানমারের পক্ষ থেকে ১০ সদস্যের এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেয়।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুন বাংলাদেশের জলসীমায় মাদক চোরাচালানি সন্দেহে দুটি নৌকায় তল্লাশি চালায় বিজিবি। ওই সময় মিয়ানমারের রইগ্যাদং ক্যাম্পের বিজিপির কয়েকজন সদস্য ট্রলারে করে বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে পড়ে। এক সময়ে টহল দলটি বিজিবি নৌযানের কাছে গিয়ে থামে। বিজিপির ট্রলারটিকে বাংলাদেশের জলসীমা ত্যাগ করার জন্য বলা হয়। কিন্তু তারা জলসীমা ত্যাগ করেনি। উল্টো নায়েক রাজ্জাককে জোর করে ট্রলারে তুলে।
এ সময় বিজিবির অন্য সদস্যরা বাধা দেয়। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময়ে বিজিবির সিপাহি বিপ্লব কুমার গুলিবিদ্ধ হন। পরে রাজ্জাককে তুলে নিয়ে বিজিপি ট্রলারটি মিয়ানমারের মংডুতে চলে যায়। বিজিবির সদস্যদের ধারণা ওই ট্রলারে ইয়াবাসহ অন্যান্য অবৈধ পণ্য ছিল। নানা জল্পনা-কল্পনা আর আলোচনা সমালোচনার পর অপহরণের নয়দিন পর বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের মংডুতে দুদেশের পতাকা বৈঠকে রাজ্জাককে ফেরত দেয়া হলো।
এর আগে ২২ জুন রাজ্জাককে ফেরত দিতে কঠিন শর্ত জুড়ে দেয় বিজিপি। তাদের দাবি ছিল গত ২৯ মে মিয়ানমার নৌবাহিনীর হাতে উদ্ধার সাগরভাসা ৭২৭ জনের মধ্যে ৫৫৫ জনই বাংলাদেশি। এদের ফেরত নিলেই বিজিবির নায়েক রাজ্জাককে ফেরত দেয়া হবে। মিয়ানমারের এ শর্তে বাংলাদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
গণমাধ্যমে এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। অনেকেই মিয়ানমারের সরকার ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) ওপর ক্ষুব্ধ হয়। এ ব্যাপারে কথা উঠে জাতীয় সংসদেও। মিয়ানমারের ওই আচরণকে উদ্ধত্য হিসেবেই দেখতে শুরু করে সবাই। এমন পরিস্থিতির একদিন পর ২৩ জুন কোনো রকম শর্ত ছাড়াই রাজ্জাককে ফেরত দিতে সম্মত হয় বিজিপি।