ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ পাকিস্তানকে ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ র্যাংকিংয়ে আটে উঠে আসে, যা ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ র্যাংকিং। আটে ওঠায় বাংলাদেশের সামনে ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার সুযোগ তৈরি হয়।
আর সেটাকে পাকাপোক্ত করতে বাংলাদেশ সামনে সহজ সমীকরণ ছিল- ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ছয়টি ম্যাচের যেকোনো দুটিতে জয় পাওয়া। এই সমীকরণ সামনে রেখে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ জেতার ফলে বাংলাদেশ র্যাংকিংয়ে সাতে উঠে আসে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলা নিশ্চিত হয়ে যায়।
এরপর দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে সেটিকে আরো পাকাপোক্ত করে। শেষ ওয়ানডে হারলেও বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলাটা নিশ্চিতই ছিল। কিন্তু হঠাৎ নিশ্চয়তার আকাশে অনিশ্চয়তার ঘনঘটা।
বাংলাদেশকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলা থেকে বঞ্চিত করতে একটি পক্ষ কুট-পরিকল্পনা করছে। র্যাংকিংয়ের অষ্টম ও নবম স্থানে থাকা পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজন করতে যাচ্ছে জিম্বাবুয়ে। শেষ পর্যন্ত এই সিরিজ আয়োজিত হলে এবং সবকিছু পরিকল্পনামাফিক হলে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলা হুমকির মুখে পড়তে পারে।
সে ক্ষেত্রে ত্রিদেশীয় সিরিজে পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ একে অপরের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে (দুইবারের মুখোমুখি লড়াইয়ে) একটি করে ম্যাচ জিতলে এবং ফাইনালে পাকিস্তানকে যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজ হারায়, তাহলে বাংলাদেশকে পেছনে ফেলে দুটি দেশই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার সুযোগ পেতে পারে। তবে তাদের সব পরিকল্পনাই ভেস্তে যেতে পারে বেশ কয়েকটি কারণে।
প্রথমত, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের যেকোনো একটিতে বাংলাদেশ জয় পেলে জিম্বাবুয়েতে আয়োজিত ত্রিদেশীয় সিরিজটি তামাশার সিরিজে পরিণত হবে। কারণ, তখন যতই ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজন করা হোক না কেন, তার কোনোটিই কাজে দেবে না। বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলবে।
দ্বিতীয়ত, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ পাকিস্তান যদি ৩-২ ব্যবধানে জেতে, তাহলে বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার টিকিট পাবে। সে ক্ষেত্রে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলার ঝুঁকি নাও নিতে পারে পাকিরা। কারণ, ত্রিদেশীয় সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের কাছে কোনোভাবে যদি দুইয়ের বেশি ম্যাচ হেরে যায় পাকিস্তান, তাহলে ছিটকে যাবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে।
তৃতীয়ত, পাকিস্তান যদি শ্রীলঙ্কার কাছে ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ হেরে যায়, তাহলে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলবে। সে ক্ষেত্রে হয়তো ক্যারিবিয়ানরাও চাইবে না ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলার ঝুঁকি নিতে। কারণ সেখানে জিম্বাবুয়ে কিংবা পাকিস্তানের কাছে তারা যদি দুইয়ের বেশি ম্যাচে হেরে যায়, সে ক্ষেত্রে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার সুযোগ হারাবে।
সবকিছু মিলিয়ে বলা যায়, ত্রিদেশীয় সিরিজ শেষ পর্যন্ত নাও আয়োজিত হতে পারে। কারণ, বাংলাদেশ যদি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একটি ম্যাচও জিতে যায়, তাহলে এই সিরিজ আয়োজনের কোনো মূল্য থাকবে না। অন্যদিকে পাকিস্তান স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ জিতলে হয়তো তারাও আর আগ্রহ দেখাবে না ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে। বাকিটা সময়ই বলে দেবে। তবে টাইগার বাহিনী দক্ষিণ আফ্রিকাকেও দেশের মাটিতে নাকানিচুবানি খাওয়াবে এমনটাই প্রত্যাশা ১৬ কোটি ক্রিকেট ভক্তের।